• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সাগরে তেল-গ্যাস উত্তোলনে বিদেশি বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ:  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪০
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তেল ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “আমরা চাই আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাবে, সেজন্য যথাযথ বিনিয়োগ প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী যারা বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করে, তাদেরকে আমরা আহ্বান করব আমাদের সমুদ্রের তেল, গ্যাস উত্তোলনের জন্য।”

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে “দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোন অ্যাক্ট-১৯৭৪”-এর সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সমুদ্রে তেল, গ্যাস উত্তোলনের জন্য ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তেল, গ্যাস উত্তোলনে বিনিয়োগ করতে পারেন। আমরা চাই তেল, গ্যাসের সঠিক ব্যবহার। বিশাল সমুদ্রসীমার সম্পদ ব্যবহার করে দেশের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি করাই সরকারের লক্ষ্য।”

উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজকের সেমিনারে যারা সম্পৃক্ত, বক্তব্য দেবেন বা পরামর্শ দেবেন, আন্তর্জাতিকভাবে যারা বিদেশি অতিথি এসেছেন, আমি আন্তরিক ও ধন্যবাদ জানাই। আমি সবাইকে আহ্বান করব, আপনারা আসুন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন, আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানে যারা বিনিয়োগ করবে তারা লাভবান হবেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।”

দেশের সমুদ্র সম্পদ রক্ষার ওপর জোর দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হব না। আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করার মত সক্ষমতা আমাদের থাকতে হবে।… স্বাধীন দেশে যা প্রয়োজন আমরা সেটা করে যাব। সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”

দেশের সমুদ্রসীমার নিরাপত্তায় নৌবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “নৌবাহিনীকে আমি ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে উন্নত করেছি। আসলে সব বাহিনীকেই আমি উন্নত করেছি। ভৌগলিকভাবে আমরা ছোট দেশ হলেও জনসংখ্যা দিক থেকে আমরা ছোট না। তাছাড়া জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আমরা অবদান রাখছি। সেখানে যারা কর্তব্য পালন করতে যাবে, তারা সব দিক থেকে দক্ষ হোক সেটা আমি চাই। প্রশিক্ষণটা বড় দরকার।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইতোমধ্যে চারটি মিলিটারি অ্যাকাডেমি করা হয়েছে, আমাদের পরিকল্পনা আছে প্রত্যেকটা বিভাগে মিলিটারি অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করে দেব। সমুদ্রের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য লোক দরকার। আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। আরও দক্ষ জনশক্তি যেন হয় সে উদ্যোগটা আমরা নেব। আমাদের সমুদ্রের যে সম্পদ রয়েছে, মৎস্য সম্পদ বা সামুদ্রিক অন্যান্য উদ্ভিদ, বিশেষ করে আমাদের খনিজ সম্পদ, তেল, গ্যাস উত্তোলন, সমস্ত কাজগুলো আমাদের করতে হবে। যেটা আমাদের দেশের জন্য প্রয়োজন। এগুলো নিরাপত্তার জন্য আমাদের নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করে দিচ্ছি।”

সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য ১৯৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “জাতির পিতা যেখানে রেখে গিয়েছিলেন সেখানেই পড়ে ছিল। বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা যে রয়েছে, সেখানে আমাদের কোনো অধিকার ছিল না। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, ২১টা বছর তারা সমুদ্রসীমার অধিকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি।”

২০১২ ও ২০১৪ সালে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধী নিষ্পত্তির প্রসঙ্গ ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে বিশাল সমুদ্রসীমার অধিকার রয়েছে, আমরা সম্ভাবনাময় একটা বিশাল অর্থনৈতিক এলাকা পেয়েছি, যা আমাদের অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখতে পারবে।”

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামুদ্রিক বিষয়ক ইউনিটের সচিব অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খুরশেদ আলম। অন্যদের মধ্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান বক্তব্য দেন।

শেখ হাসিনা,অর্থনীতি,গ্যাস
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close