• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘জঙ্গি’ শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল, পরামর্শ বাংলাদেশে যাওয়ার

প্রকাশ:  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:৪৩ | আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:৫৮
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

চার বছর আগে লন্ডন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য। ১৯ বছর বয়সী শামীমার বাবা-মা যেহেতু বাংলাদেশি তাই যুক্তরাজ্য সরকার মনে করে অন্য দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ ওই তরুণীর আছে।

যুক্তরাজ্যের হোম অফিস থেকে মঙ্গলবার শামীমার মায়ের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। লন্ডনে শামীমার পরিবারের পক্ষে তাদের আইনজীবী তাসনিম আকুঞ্জি বলছেন, এ সিদ্ধান্ত তাদের হতাশ করেছে এবং তারা আইনি পথে বিষয়টি মোকাবেলার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আপিল করবেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

১৯৮১ সালের ব্রিটিশ ন্যাশনালিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী, একজন নাগরিকত্ব হারাতে পারেন যদি তার রাষ্ট্রহীন হওয়ার ঝুঁকি না থাকে। তাই ব্রিটিশ সরকার মনে করছে, ১৯ বছর বয়সী শামীমার বাবা-মা যেহেতু বাংলাদেশি, সেহেতু যুক্তরাজ্য ছাড়া অন্য দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ ওই তরুণীর আছে।

কর্তৃপক্ষের এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে আইনজীবী তাসনিম আকুঞ্জি বলেছেনন, শামীমার পরিবার বাংলাদেশ থেকে এসেছে- এই যুক্তিতে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। আমাদের মতে, এটা বেআইনি। নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হলে সে রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বে। আর সেটা হবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে বেথনাল গ্রিন একাডেমির ক্লাস নাইনে পড়াশোনার সময় অনলাইনে আইএসের ‌‌‌'মগজধোলাই' হওয়া শামীমা বেগম পরিবারকে ফাঁকি দিয়ে তার সহপাঠী আরেক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি খাদিজা সুলতানাসহ তিন তরুণী আইএসে যোগ দিতে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় পাড়ি দেন। বিয়ে করেন এক আইএস যোদ্ধা। সিরিয়া থেকে আইএস বিতারিত হওয়ার পর গত সপ্তাহে তাকে একটি শরণার্থী ক্যাম্পে তাকে পাওয়া যায়। সপ্তাহের শেষ দিকে একটি পুত্র সন্তানর জন্ম দিয়েছেন শামীমা বেগম শরানার্থী শিবিরে ব্রিটিশ সাংবাদিক অ্যান্থোনি লয়েডকে শামীমা জানান, তিনি আবার ব্রিটেনে ফিরতে চান।

পরে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারেও শামীমা জানান, তিনি কখনো আইএসের 'পোস্টার গার্ল' হতে চাননি এবং এখন তিনি শুধু তার সন্তানকে যুক্তরাজ্যেই বড় করতে চান।সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, তিনি কখনো আইএসের 'পোস্টার গার্ল' হতে চাননি এবং এখন তিনি শুধু তার সন্তানকে যুক্তরাজ্যেই বড় করতে চান। কিন্ত কতৃপক্ষ তাকে লন্ডনে ফিরতে দিতে রাজি না এবং তার নাগরিকত্ব বাতিল করা হচ্ছে জানিয়ে কর্তৃপক্ষের চিঠি তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে মেয়েকে জানানোর জন্য।

শামীমা জানিয়েছেন, তিনি বেড়ে উঠেছেন লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন এলাকায়। তিনি যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়া গিয়েছিলেন ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে। কিন্তু সীমান্ত পার হওয়ার পরপরই তার কাছ থেকে সেটা কেড়ে নেওয়া হয়। শামীমাকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মনে করা হলেও তিনি বিবিসিকে বলেছেন, তার কখনও বাংলাদেশী পাসপোর্ট ছিল না। তিনি কখনও বাংলাদেশে যাননি। বাংলাদেশ সম্পর্কে তেমন কিছু জানেনও না।

এদিকে গত সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে শামীমা বেগমের নাম উল্লেখ না করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ স্পষ্ট করেই বলেছেন, তার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হল ব্রিটেন এবং ব্রিটিশ নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান করা।জঙ্গিদের সমর্থন দিয়ে যারা দেশ ছেড়েছে, তাদের ফিরতে দিতে তিনি আগ্রহী নন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ পার্লামেন্টকে বলেন, এ পর্যন্ত নয়শর বেশি ব্রিটিশ নাগরিক যুক্তরাজ্য ছেড়ে আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া ও ইরাকে গেছে। তাদের ব্রিটেনে ফেরা ঠেকাতে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে তিনি দ্বিধা করবেন না।

বতর্মানে ১৯ বছর বয়সী আইএসে যোগ দেওয়া দেওয়া তরুণী শামীমাকে নিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইন অনুযায়ী, যারা কেবল ব্রিটিশ নাগরিক, তাদের সেই অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে দ্বৈত নাগরিকদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার শতাধিক নজির রয়েছে।

পিবিডি-এনই

শামীমা,আইএসে যোগ দেওয়া শামীমা,আইএস জঙ্গি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close