খান মুহাম্মদ রুমেলের পাঁচ কবিতা
...
লালিত সবই
.
আছে সবই, শেষ হয়নি কিছুই
সুতীব্র আঙ্ক্ষা, এখনো লালিত ভেতরে!
সুগন্ধি সৌরভ এখনো মোহিত করে।
হাসির ছটা এখনো ছড়ায় পুরনো মুগ্ধতা।.
মনেহয় আলগোছে সরিয়ে দিই খুচরো চুল
নিপুণ আঙুলে, আঙুল রেখে বলি ভালোবাসি-
সবই মনে হয় কুয়াশার বিকেলে!.
চরম তৃষ্ণার মাঝেও নাড়া দেয় অজানা দ্বিধা
তুমি কি করবে গ্রহণ, নাকি ফেরাবে অবহেলে?
নিশ্চুপ হয়ে থাকি তাই- অজানা কুঞ্চনে!.
এখনো অপেক্ষায় থাকি থরোথরো
শীত বিকেলে রোদের জন্য যেমন থাকে মানুষেরাও!
.
আবছা কুয়াশা
.
দিনে দিনে পড়বে খসে-
সকল অভিমান!
গোপন করবো না আমরা-
অশ্রু মাখা আঁখি!
রোদের মতো পড়বে ঝরে-
হাসি রাশি রাশি।
কথার ফুল নিয়ে বুকে-
থাকবো না নিশ্চুপ।.
কচিপাতা সবুজ রঙের শাড়ি-
হারাবো দুজন নিরুদ্দেশ!
কাঁচের চুড়ি ঝরাবে আলো।.
সেই শঙ্খ বাজানো কালে-
হাঁটবো দুজন মটরশুঁটির আলে!
কুঁড়িগুলো ফুটবে সেদিন-
নরম আলোর মায়ায়!দুঃখগুলো থাকবে ঢেকে-
আবছা কুয়াশার জালে।
রোদে পুড়ে গলিয়ে নেবো-
বেদনা আমাদের যতো!মরা নদীতে এলেই জোয়াড়-
ধরবো তোমার হাত!
.
যত্ন করে গোপন রেখো-
নোলক পরা নাক!
দুষ্টু চোখের হাসিগুলো-
একান্ত হয়ে থাক।.
পত্রহীন স্মৃতি
.
এখানে একদিন গাছ ছিলো
আজ সব শূন্য এবং হাহাকার
সবুজ শুকিয়ে কেবল ধূসর!.
জল আটকে গেলো কোথায়?
.
কুয়াশার আড়ালের দামাল মেঘে!
খুঁজে খুঁজে হয়রান হরিণ চোখ
মেয়েটি বড়ই অভিমানী, শিশুর মতো।
ফোলা গালে লাল আঁচিল গভীর টোল-
অভিমানে এবং না অভিমানে একই রকম!.
কোথায় যে ফেলে এসেছি, স্মৃতিগুলো
শিমফুলের বেগুনি আলোর মতো!
খুঁজে কি আর পাবো তারে- পুঁই ডগার নরম রোদ?.
গাছগুলো সব পত্রহীন, কেউ যেমন হেমন্তে বিলীন!
.
বিষন্ন সন্ধ্যা
.
প্রতি সন্ধ্যায় জমাট ভিড় জমে
- এই শহরে।
অগনণ ঠাস বুনটের মাঝেও
-খুব একা
একজন কেউ যাপন করে একাকিত্ব!
ভীষণ রকম বিষন্নতায় খুঁজে ফেরে আলো।
আলো, সে কোথায়- তাকে নিয়ে ফেরার হয়েছে কেউ
অনেক অনেক আগের পূর্ণিমা রাতে।.
আজ তাই-
চা-খানায় মাঠে ময়দানে শপিংমলে
হাজার মানুষের ভিড়ে একা একজন!.
প্রাপ্য প্রতিশ্রুতির হিসেব বুঝে না পেয়ে-
হয়রান কতিপয় অভিমানী মানুষ
.
যাদের শ্রমের ঘামে তৈরি হলো প্রাসাদ
যাদের আকন্ঠ নিষ্ঠায় তৈরি হলো বাসর
তারাই আজ পড়ে গেছে অপাংক্তেয়র খাতায়!.
তাদের জমাট নিঃশূন্যতায়, প্রবল দীর্ঘশ্বাসে-
তৈরি হবে একদিন আপনার পতনের পথও।
.
সন্ধ্যাগুলো বিষন্ন বানিয়ে দেয়ার দায় শুধতেই হবে একদিন!
শুধতে হয় সবাইকেই!
.
সম্রাজ্ঞীর হাসি
.
সম্রাজ্ঞী আমি আপনাকে ছুঁতে চেয়েছিলাম
আগুনে পুড়বো জেনেও মেনে নিয়েছিলাম-
পতঙ্গের অনিবার্য পতনের নিয়তি!
নিঃশেষ হয়ে যাওয়া ধ্বংস্তুপে দাঁড়িয়ে
গাইতে চেয়েছিলাম বিরহের বেহাগ!.
সম্রাজ্ঞী আমি লীন হতে চেয়েছিলাম- আপনার ভালোবাসায়।
আপনার মায়া হাসির ধ্বনিকে ভাবতে চেয়েছিলাম-
নতুন লেখা গানের কুমারী সুর!
আমি ভেবেছিলাম- আপনার হাসিতে
বিশুদ্ধ আমন্ত্রণ, অপার ভালোবাসার!.
হায় সম্রাজ্ঞী হায়,
সে হাসি যে প্রযোজ্য ছিলো সকল প্রজার জন্য
সে মায়ায় ছিলো যে সার্বজনীন আমন্ত্রণ
সে ইশারায় ছিলো যে আপামরের মরণ!
আমি বুঝিনি সেই সরল সমীকরণ!.
এখন আমি কোথায় যাই, কার কাছে লুকাই
হায় সম্রাজ্ঞী হায়, হায় মায়াবি পরী হায়!!
ppbd.news
পূর্বপশ্চিম- এনই