• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

খান মুহাম্মদ রুমেলের পাঁচ কবিতা

প্রকাশ:  ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০০:১৮ | আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০০:৪৪
খান মুহাম্মদ রুমেল

...

লালিত সবই

.

আছে সবই, শেষ হয়নি কিছুই

সুতীব্র আঙ্ক্ষা, এখনো লালিত ভেতরে!

সুগন্ধি সৌরভ এখনো মোহিত করে।

হাসির ছটা এখনো ছড়ায় পুরনো মুগ্ধতা।

.

মনেহয় আলগোছে সরিয়ে দিই খুচরো চুল

নিপুণ আঙুলে, আঙুল রেখে বলি ভালোবাসি-

সবই মনে হয় কুয়াশার বিকেলে!

.

চরম তৃষ্ণার মাঝেও নাড়া দেয় অজানা দ্বিধা

তুমি কি করবে গ্রহণ, নাকি ফেরাবে অবহেলে?

নিশ্চুপ হয়ে থাকি তাই- অজানা কুঞ্চনে!

.

এখনো অপেক্ষায় থাকি থরোথরো

শীত বিকেলে রোদের জন্য যেমন থাকে মানুষেরাও!

.

আবছা কুয়াশা

.

দিনে দিনে পড়বে খসে-

সকল অভিমান!

গোপন করবো না আমরা-

অশ্রু মাখা আঁখি!

রোদের মতো পড়বে ঝরে-

হাসি রাশি রাশি।

কথার ফুল নিয়ে বুকে-

থাকবো না নিশ্চুপ।

.

কচিপাতা সবুজ রঙের শাড়ি-

হারাবো দুজন নিরুদ্দেশ!

কাঁচের চুড়ি ঝরাবে আলো।

.

সেই শঙ্খ বাজানো কালে-

হাঁটবো দুজন মটরশুঁটির আলে!

কুঁড়িগুলো ফুটবে সেদিন-

নরম আলোর মায়ায়!

দুঃখগুলো থাকবে ঢেকে-

আবছা কুয়াশার জালে।

রোদে পুড়ে গলিয়ে নেবো-

বেদনা আমাদের যতো!

মরা নদীতে এলেই জোয়াড়-

ধরবো তোমার হাত!

.

যত্ন করে গোপন রেখো-

নোলক পরা নাক!

দুষ্টু চোখের হাসিগুলো-

একান্ত হয়ে থাক।

.

পত্রহীন স্মৃতি

.

এখানে একদিন গাছ ছিলো

আজ সব শূন্য এবং হাহাকার

সবুজ শুকিয়ে কেবল ধূসর!

.

জল আটকে গেলো কোথায়?

.

কুয়াশার আড়ালের দামাল মেঘে!

খুঁজে খুঁজে হয়রান হরিণ চোখ

মেয়েটি বড়ই অভিমানী, শিশুর মতো।

ফোলা গালে লাল আঁচিল গভীর টোল-

অভিমানে এবং না অভিমানে একই রকম!

.

কোথায় যে ফেলে এসেছি, স্মৃতিগুলো

শিমফুলের বেগুনি আলোর মতো!

খুঁজে কি আর পাবো তারে- পুঁই ডগার নরম রোদ?

.

গাছগুলো সব পত্রহীন, কেউ যেমন হেমন্তে বিলীন!

.

বিষন্ন সন্ধ্যা

.

প্রতি সন্ধ্যায় জমাট ভিড় জমে

- এই শহরে।

অগনণ ঠাস বুনটের মাঝেও

-খুব একা

একজন কেউ যাপন করে একাকিত্ব!

ভীষণ রকম বিষন্নতায় খুঁজে ফেরে আলো।

আলো, সে কোথায়- তাকে নিয়ে ফেরার হয়েছে কেউ

অনেক অনেক আগের পূর্ণিমা রাতে।

.

আজ তাই-

চা-খানায় মাঠে ময়দানে শপিংমলে

হাজার মানুষের ভিড়ে একা একজন!

.

প্রাপ্য প্রতিশ্রুতির হিসেব বুঝে না পেয়ে-

হয়রান কতিপয় অভিমানী মানুষ

.

যাদের শ্রমের ঘামে তৈরি হলো প্রাসাদ

যাদের আকন্ঠ নিষ্ঠায় তৈরি হলো বাসর

তারাই আজ পড়ে গেছে অপাংক্তেয়র খাতায়!

.

তাদের জমাট নিঃশূন্যতায়, প্রবল দীর্ঘশ্বাসে-

তৈরি হবে একদিন আপনার পতনের পথও।

.

সন্ধ্যাগুলো বিষন্ন বানিয়ে দেয়ার দায় শুধতেই হবে একদিন!

শুধতে হয় সবাইকেই!

.

সম্রাজ্ঞীর হাসি

.

সম্রাজ্ঞী আমি আপনাকে ছুঁতে চেয়েছিলাম

আগুনে পুড়বো জেনেও মেনে নিয়েছিলাম-

পতঙ্গের অনিবার্য পতনের নিয়তি!

নিঃশেষ হয়ে যাওয়া ধ্বংস্তুপে দাঁড়িয়ে

গাইতে চেয়েছিলাম বিরহের বেহাগ!

.

সম্রাজ্ঞী আমি লীন হতে চেয়েছিলাম- আপনার ভালোবাসায়।

আপনার মায়া হাসির ধ্বনিকে ভাবতে চেয়েছিলাম-

নতুন লেখা গানের কুমারী সুর!

আমি ভেবেছিলাম- আপনার হাসিতে

বিশুদ্ধ আমন্ত্রণ, অপার ভালোবাসার!

.

হায় সম্রাজ্ঞী হায়,

সে হাসি যে প্রযোজ্য ছিলো সকল প্রজার জন্য

সে মায়ায় ছিলো যে সার্বজনীন আমন্ত্রণ

সে ইশারায় ছিলো যে আপামরের মরণ!

আমি বুঝিনি সেই সরল সমীকরণ!

.

এখন আমি কোথায় যাই, কার কাছে লুকাই

হায় সম্রাজ্ঞী হায়, হায় মায়াবি পরী হায়!!

ppbd.news

পূর্বপশ্চিম- এনই

খান মুহাম্মদ রুমেল
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close