• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

চাকরির প্রলোভন, ৫ কোটি টাকার চেকসহ প্রতারক চক্র আটক

প্রকাশ:  ২১ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:৫৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-২। সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরি প্রত্যাশীদের টার্গেট করে চাকরি পাইয়ে দিতে ভুয়া চুক্তিপত্র করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত এই চক্র। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাকরি প্রত্যাশীদের দেয়া ৫ কোটি টাকার চেক জব্দ করা হয়েছে। চক্রটি গত ৪/৫ বছরের পাঁচ শতাধিক লোকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ৫ প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-২ এর এএসপি (মিডিয়া) সাইফুল মালিক।

গ্রেফতারেরা হলেন- নজরুল ইসলাম ওরফে মানিক (৫৩), ফারুক হাসান (৩৮), আবুল কাশেম (৬০), সাইফুল ইসলাম (২৫) ও মাসুদ রানা (৩২)।

চাকরি প্রত্যাশীদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান তিনি।

তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার ৮০ টাকার ৮৬টি চেক, সেনাবাহিনীতে চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র ৬২টি ৩০০ টাকা মূল্যের স্বাক্ষরিত কিন্তু অলিখিত নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১০টি মোবাইল জব্দ করা হয়।

র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগে জানা গেছে সামরিক বাহিনীর নিয়োগ পরীক্ষার জন্য কিছু প্রশ্নপত্র ও সমাধান দিয়ে স্ট্যাম্প ও নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ৮ লাখ টাকা দিতে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেয় প্রতারক চক্র। নিয়োগপত্র পেলে ৪ লাখ এবং চাকরিতে যোগদানের পর বাকি ৪ লাখ টাকা পরিশোধের শর্তে জামানত হিসেবে চেক ও স্ট্যাম্প জমা রাখতে বলা হয়।

ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে পাওয়া এসব অভিযোগের ভিত্তিতেই অনুসন্ধানে নামে র‍্যাব। এরপর তথ্য-প্রযুক্তি প্রয়োগ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে শনিবার মোহাম্মদপুরে বছিলা গার্ডেন সিটি মোহাম্মদিয়া বেকারি সংলগ্ন একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই ৫ প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন জানান, প্রতারকরা নিজেদের কখনও মেজর, ক্যাপ্টেন, ডিবি, পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভুয়া পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। তারা বিগত ৪/৫ বছর যাবত মোটা অংকের ব্যাংক চেক, স্বাক্ষরিত (অলিখিত/লিখিত) স্ট্যাম্প ও নগদ টাকা নিয়ে প্রতারণা করতো।

তিনি আরও বলেন, আটকদের মধ্যে নজরুল সেনাবাহিনীর এবং মাসুদ রানা নৌবাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্য। তারা নিজেদের সামরিক বাহিনীর অফিসার হিসাবে পরিচয় দিয়ে সাইদুর, ফারুক ও কাশেমসহ ৯/১০ জনের একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে চাকরি প্রার্থীদের সংগ্রহ করে প্রতারণার মাধ্যমে নগদ টাকা, ব্যাংক চেক এবং স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন।

আটক সাইদুল ও মাসুদ রানা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সরকারি চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা করে গত ৪/৫ বছরের পাঁচ শতাধিক লোকের কাছে থেকে তারা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এছাড়া কখনও আগাম হাতে তুলে দেন ভুয়া নিয়োগপত্রও। এরপর চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে চুক্তিপত্র করেন। নেন নগদ টাকা।

এছাড়া প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগী পরিবার যাতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করতে পারে সেজন্য তাদের কাছ থেকে নেয়া ব্যাংক চেক ও নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পকে জিম্মি হিসেবে ব্যবহার করত।

এসপি মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের চেষ্টার অপরাধে আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পলাতকদের ধরতে চলছে অভিযান।

জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং গ্রেফতার হওয়া ৫ জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন এ র‌্যাব কর্মকর্তা।

পিপিবিডি/এআইএস

প্রতারক চক্র
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close