• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ডিআরইউতে পীর হাবিবের জানাজা সম্পন্ন

প্রকাশ:  ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪:০৮ | আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক ও পূর্বপশ্চিমবিডি. নিউজের প্রতিষ্ঠাতা জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তার মরদেহ জাতীয় প্রেসক্লাবে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পীর হাবিবুর রহমানের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ডিআরইউতে। সেখানে ​তার তৃতীয় নামাজে জানাজা হয়েছে। পীর হাবিবের ​প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় শনিবার বাদ এশা রাজধানীর উত্তরা ৪ নং সেক্টর পার্ক জামে মসজিদে।

জানাজা নামাজের আগে তাকে স্মরণ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, পীরের মৃত্যু নিঃসন্দেহে অকাল মৃত্যু। কারণ তার বয়স হয়েছে মাত্র ৫৭ বছর। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য ছিলেন। তার বিদেহী আত্মার জন্য আমরা প্রার্থনা করি।

কান্না জড়িত কন্ঠে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, পীর হাবিবুর রহমান সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। আমরা একজন সাহসী সাংবাদিককে হারালাম। তার অগনীত পাঠক আছেন, যারা তার কলামের জন্য অপেক্ষা করতেন। তারাও তাদের কলামিস্টকে হারালেন।

পীর হাবিবুর রহমানের ছেলে ব্যারিষ্টার অন্তর বলেন, আমার পরিবারের সবার জন্য আমার বাবা ছায়া হিসেবে ছিলেন। তিনি থাকলে মনে হতো সব হয়ে যাবে। আমি আমার ছায়াকে হারালাম। বাবা বলতো আমার টাকা পয়সার দরকার নেই। আমার মৃত্যুর পর আমাকে শহীদ মিনার এবং জাতীয় প্রেসক্লাবে নিয়ে যাবে। বাবা মানুষের জন্য লিখতে চেয়েছেন। সেই সাহাসিকতা তার ছিলো। অনেক কিছু সহ্য করেছেন।

তিনি আরো বলেন, অনেক সময় মানুষ আশা করতেন বাবা অনেক কিছু লিখবেন। হয়তো উনার অনেক সীমাবদ্ধতা ছিলো। উনি পারেন নাই। আপনারা দোয়া করবেন আল্লাহ যেন উনাকে বেহেশত নসিব করেন।

ডিআরইউ থেকে পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ তার কর্মস্থল বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে নেওয়া হচ্ছে। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হবে সুনামগঞ্জে। সোমবার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ। এরপর বাদ জোহর সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় মসজিদে এবং নিজ গ্রাম মাইজবাড়ীতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পিতা-মাতার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন পীর হাবিবুর রহমান।

এর আগে, রোববার বেলা সাড়ে ১১ টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ রাখা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও খ্যাতিমান কলামিস্ট পীর হাবিবুর রহমান শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গতবছর অক্টোবরে মুম্বাই জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ক্যানসার মুক্ত হন পীর হাবিবুর রহমান। গত ২২ জানুয়ারি তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহর পরামর্শে ৫৮ বছর বয়সী এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনামুক্ত হওয়ার পর কিডনিগত জটিলতার কারণে তাকে ভর্তি হতে হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই স্ট্রোক করেন পীর হাবিব। এরপর তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

পীর হাবিবুর রহমানের জন্ম ১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ শহরে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পড়াকালে ১৯৮৪ সাল থেকে সাংবাদিকতায় তার হাতেখড়ি। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার, যুগান্তর, মানবকণ্ঠ, আমাদের সময়, আমাদের অর্থনীতিসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। পীর হাবিবুর রহমান দেশের জনপ্রিয় নিউজপোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজের প্রতিষ্ঠাতা।

পীর হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে পূর্বপশ্চিম পরিবার গভীরভাবে শোকাভিভূত।

পূর্বপশ্চিম- এনই

পীর হাবিবুর রহমান,পীর হাবিব
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close