• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জন প্রতিনিধি আশ্বাস দিলেও, গ্রামবাসীর অর্থায়নে রাস্তা সংস্কার

প্রকাশ:  ১২ আগস্ট ২০২৩, ১৬:৫৬
মনিরামপুর প্রতিনিধি

যশোরের মনিরামপুরের ঝাঁপা অঞ্চলে কাদায় চলাচলে ভোগান্তি সইতে না পেরে গ্রামবাসী নিজেদের অর্থায়নে একটি রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাঁরা ঝাঁপার বাঘাডাঙ্গী পশ্চিমপাড়ার ১ কিলোমিটার কাচা রাস্তার কাদা পরিষ্কার করে ইটের সলিং বোনা শুরু করেছেন। জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে ঘুরে কোন সমাধান না পেয়ে অবশেষে গ্রামের ৫২ জন নিজেদের টাকায় রাস্তা সংস্কার করছেন।

আর এ কাজে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। সরকারি বরাদ্দ না দিতে পেরে স্থানীয় চেয়ারম্যান নিজে ৩০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়ে কাজে অংশ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

উদ্যোক্তা জামাত আলী বলেন, জন প্রতিনিধি সবার কাছে গিয়েছি। সবাই রাস্তা পাকা করে দেবে বলেছে। চার বছর আগে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে রাস্তা মাপামাপি করেছে। আজও আশ্বাসে কাজ আটকে আছে। একটু বৃষ্টি হলে ঘর থেকে মোটরসাইকেল বের করা যায় না। বর্ষাকালে কাদায় চলাচলে খুব কষ্ট হয়। বংশ পরস্পরায় আমরা এলাকার দেড়-দুই হাজার মানুষ প্রতি বর্ষা মৌসুমে কষ্ট ভোগ করছি। জামাত আলী বলেন, এবার গ্রামবাসী মিলে নিজেদের টাকায় রাস্তা সংস্কার করছি। কাদা সরিয়ে বালু দিয়ে তারপর ইটের সলিং বোনার কাজ চলছে। এ কাজে ধনী-গরিব সবাই অংশ নিচ্ছেন। কেউ ১০০ টাকা দিলেও নিচ্ছি। আমি ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। লাগলে আরো দেব।

রাস্তা সংস্কার কাজের আরেক উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম রাস্তা সংস্কার কাজের ক্যাশিয়ার। তিনি বলেন, আমরা ২০ জন মিলে রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। পাড়ার ৫২ জনের তালিকা করেছি। কেউ ১৫ হাজার, কেউ ১০ হাজার, কেউ পাঁচ হাজার টাকা যে যেমন পারছেন সাধ্যের মধ্যে অংশ নিচ্ছেন। আমি নিজে পাঁচ হাজার টাকা দিছি।

জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, পাড়ার মোড়লের পুকুর ঘাট থেকে শুরু করে ওয়াজের বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার কাচা রাস্তায় কাদায় মোট চলা যায় না। এ রাস্তা দিয়ে গ্রামবাসী ঝাঁপা বাজারে কৃষিপণ্য আনা নেওয়া করেন। পাড়ার শিক্ষার্থীরা ঝাঁপা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঝাঁপা বালিকা বিদ্যালয়, ঝাঁপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। কাদা হলে তাদের ভোগান্তি চরম আকারে ধারণ করে।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, এক কিলোমিটার কাদার রাস্তা সলিং করার কাজে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচের টার্গেট ধরা হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। আগামীকাল রোববার ঝাঁপা হাটের দিন। হাটে সব টাকা উঠে যাবে বলে আশা করছি।

ঝাঁপা ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, রাস্তাটায় কাদায় চলাচলে খুব কষ্ট। আমি উপরে যোগাযোগ করেছি। সংসদ ভোটের আগে আর এ রাস্তা হবে না। এজন্য গ্রামের লোকজন রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে নিচ্ছে।

ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের টানা দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান শামসুল হক মন্টু বলেন, বরাদ্দ না পেলে রাস্তা করব কি করে। গ্রামবাসীর রাস্তা সংস্কার কাজে আমারও অংশ আছে। আমি নিজে ৩০ হাজার টাকা দিচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমারকে একাধিকবার কল করা হয়েছে। ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

যশোর
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close