• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

প্রতি বছরে জরায়ু ও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ২১ হাজার বিবাহিত নারী

প্রকাশ:  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:৪৫ | আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:৩৬
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি

বাংলাদেশে প্রতি বছর জরায়ু ও স্তন ক্যান্সারে ২১ হাজার বিবাহিত নারী আক্রান্ত হন। এরমধ্যে মারা যান ১২ হাজার জন। সাত হাজার জন বিবাহিত নারী মারা যান জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে আর স্তন ক্যান্সারে মারা যান পাঁচ হাজার জন।

আজ বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অবহিতকরণ সভায় স্বাস্থ্য বিভাগ এই তথ্য জানিয়েছে।

মনিরামপুরে পাঁচদিনব্যাপি 'জরায়ুর মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং' কর্মসূচির শেষদিন মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাসের দপ্তরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ডা. তন্ময় বিশ্বাসের সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মসূচিতে এ সময় যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দিলরুবা ফেরদৌস, জরায়ুর মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং কর্মসূচির খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক দারাশিকো মোল্যা, কলেজ শিক্ষক মোহাম্মদ বাবুল আকতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, জরায়ু ও স্তন ক্যান্সারের ভয়াবহতা কমাতে সরকার বিনামূল্যে প্রত্যেক হাসপাতালে ভিজুয়াল ইন্সপেকশন উইথ এসেটিক এসিড (ভায়া) টেস্টের ব্যবস্থা করেছে। প্রত্যেক বিবাহিত নারীকে ৩০-৬০ বছর বয়সের মধ্যে এই পরীক্ষা করানো উচিৎ। এটি জরায়ুর মুখের ও স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের একটি উল্লেখযোগ্য পরীক্ষা। ভায়া টেস্টের মাধ্যমে জরায়ুর মুখে ক্যান্সার হওয়ার পূর্বের অবস্থান জানা যায়। হাসপাতালে বিনামূল্যে পরীক্ষার পর কারো রিপোর্ট পজেটিভ হলে উপজেলা পর্যায় থেকে তাঁদের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রথম অবস্থায় সেখান থেকে চিকিৎসা নিলে রোগী এই ধরণের ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা পান। আর ভায়া পরীক্ষার পর কারো রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে তাঁদের প্রতি তিন বছর অন্তর হাসপাতালে এসে এই টেস্ট করানো উচিৎ। বক্তারা বলেন, নানা কারণে নারীরা ভায়া টেস্ট করাতে চাননা। তাঁদের যদি জরায়ুর মুখ ও স্তন ক্যান্সারের ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝানো যায় তাহলে তাঁরা এ কাজে আগ্রহী হবেন। তবে এক্ষেত্রে ব্যাপক প্রচারণার প্রয়োজন।

মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডা. তন্ময় বিশ্বাস বলেন, ভায়া টেস্টের জন্য হাসপাতালের কয়েকজন নার্সকে প্রশিক্ষণ দেওয়া আছে। নিয়মিত হাসপাতালে এই পরীক্ষা চলে। গেল বছর মনিরামপুর হাসপাতাল থেকে এক হাজার ৯৫ জনের ভায়া টেস্ট করিয়ে ১১ জনের জরায়ু ক্যান্সারের পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। চলতি বছর দুই হাজার ৫৫৬ জনের মধ্যে সাত জনের পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে।

ডা. তন্ময় বলেন, নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে নারীরা ভায়া টেস্টে আগ্রহী হন না। তাদের উদ্বুদ্ধ করতে স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে চলতি মাসের ১৬ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দিনের জন্য মনিরামপুর হাসপাতাল ও উপজেলার ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে জরায়ুর মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং কর্মসূচি চলেছে। এই সময়ে আমরা ভায়া টেস্টের জন্য ৩০-৬০ বছর বয়সী বিবাহিত ২৯ হাজার ৮২৮ জন নারীকে নিবন্ধন করাতে পেরেছি। তারমধ্যে এক হাজার ৩৫ জনের ভায়া টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। ক্যাম্পেইনের জন্য ঢাকা থেকে যন্ত্রপাতি নিয়ে একটি টিম এসেছে। যাদের ভায়া টেস্টের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে তাদের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না পাঠিয়ে আমরা টিমের মাধ্যমে এখান থেকে চিকিৎসা দিতে পেরেছি। হাসপাতালে ভায়া টেস্ট একটি চলমান প্রক্রিয়া। বাকিদের ধারাবাহিক টেস্ট করানো হবে। তন্ময় বিশ্বাস আরো বলেন, জরায়ুর মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং কাজে অনলাইন নিবন্ধনে আমরা দেশের দ্বিতীয় ও খুলনা বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করতে পেরেছি। আর এতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন কালারহাট কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) ফাতেমা খাতুন পলি। তিনি চলতি বছরে ২ হাজার ৩০০ জনের নাম অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন।

স্বাস্থ্যবিধি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close