• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

তথ্যমন্ত্রী: পত্রিকার কাটিং জোগাড় করে মিথ্যা রিপোর্ট তৈরি করেছে সিপিডি

প্রকাশ:  ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:২১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

“১৫ বছরে ব্যাংক খাত থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে”- বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এমন বক্তব্য মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, “সিপিডি কোনো ধরনের গবেষণা না করেই এমন মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। কিছু পত্রিকার কাটিং জোগাড় করে একটা রিপোর্ট তৈরি করেছে। সেই রিপোর্টের আলোকে সংবাদ সম্মেলন করেছে। তাদের এমন দাবি মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়।”

সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “সিপিডির সংবাদ সম্মেলনে যদিও গবেষণার কথা বলা হয়েছে, বাস্তবে গবেষণা করতে অনেক সময় লাগে, অনেক তথ্য-উপাত্ত থাকে। কিন্তু সিপিডি এই রিপোর্ট তৈরি করে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে অনেক লুকোচুরি করেছে এবং ভুল অসত্য তথ্য পরিবেশন করেছে। যেমন সিপিডি বলেছে, আমাদের উন্নয়ন বাজেটের ৭৫% হচ্ছে বিদেশনির্ভর। আসলে আমাদের চলতি বাজেটের ৩৫% হচ্ছে সাহায্যনির্ভর কিংবা বিদেশনির্ভর। এক সময় এটি ২০%-এর নিচে নেমে গিয়েছিল। সম্প্রতি বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার কারণে এটি ৩৫% উন্নীত হয়েছে। অথচ সিপিডি বলেছে এটি ৭৫%।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সিপিডি বলেছে বেসিক ব্যাংক থেকে চার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চার হাজার কোটি টাকার মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা ইতোমধ্যে আদায় করা হয়েছে এবং বাকি দুই হাজার কোটি টাকার জন্য মামলা করা হয়েছে, মামলা চলমান। সেগুলো আদায়ের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সিপিডি তাদের বক্তব্যে আরেকটি কথা বলেছে, যেমন নাবিল গ্রুপ। তারা দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। কিন্তু সেই ঋণ যে সবগুলো আদায় হয়েছে, সে তথ্য সিপিডির রিপোর্টে জানানো হয়নি। ইচ্ছাকৃত এগুলো লুকানো হয়েছে। সিপিডি এস আলম গ্রুপের কথা বলেছে। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে চেক করে দেখেছি। এস আলম গ্রুপের কোনো ঋণই ক্লাসিফায়েড নয়। একইসঙ্গে সিপিডি বলেছে, ভ্যাট ঋণ বেড়েছে। অর্থাৎ ক্লাসিফায়েড ঋণের আকার বেড়েছে। কিন্তু তারা আকারের কথা বলেছে, পারসেন্টেজের কথা বলেনি।”

বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের অর্থনীতি ছয়গুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালে আমাদের জিডিপির সাইজ ছিল ৮০ বিলিয়ন ডলার। এখন জিডিপির সাইজ হচ্ছে ক্লোজ টু হাফ এ ট্রিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ৫০০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। এভাবে ছয়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ছয়গুণ বৃদ্ধি পেলে তো ব্যাংক ঋণও বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যাংক ঋণের আকারও বৃদ্ধি পাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পারসেন্টেজ কত, সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়। ২০০৯ সালে ক্লাসিফায়েড ঋণের পারসেন্টেজ ছিল ১০.৫%, আর এখন ক্লাসিফায়েড ঋণের পারসেন্টেজ হচ্ছে ৯.৯৩%। অর্থাৎ তখনকার তুলনায় কমেছে। ২০০৭-০৮ সালে সিপিডির কেউ কেউ তো দেশ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তারা যখন দেশ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তখন ভ্যাট ঋণ ১০%-এর ওপরে ছিল। এভাবে মিথ্যা, অসত্য এসব তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের এই দেশ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে। সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, হাতে হাত ধরে আমাদের এই দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করেছে। একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্যই সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশ রচনার ডাক দিয়েছিলেন জাতির পিতা। তার নেতৃত্বেই হাজার বছরের ঘুমন্ত বাঙালিকে জাগ্রত করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র রচিত হয়েছে। এই রাষ্ট্রে সবার সমান অধিকার। কিন্তু মাঝে মধ্যে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথা তুলে, ফণা তোলার চেষ্টা করে। আমাদের সরকার সবসময় এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দমন করেছে।”

বিএনপির কর্মসূচি হচ্ছে গতানুগতিক উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “তিন দিনের যে কর্মসূচি দিয়েছে জনগণও জানে না, কেউ খেয়ালও করেনি। হয়তো সাংবাদিকরা খবরাখবর রাখেন বলেই খেয়াল করেছেন। তারা কর্মসূচি কোনোদিন দেয়, কোনোদিন হরতাল দেয়, কোনোদিন অবরোধ দেয়। কেউ কিন্তু নোটিশ করে না। দেশের মানুষও নোটিশ করেনি, কাকপক্ষীও নোটিশ করেছে কি-না আমি জানি না। কাজেই এগুলো গতানুগতিক কর্মসূচি এবং হাস্যকর।”

এর আগে তথ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করেন এবং বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।

সিপিডি,তথ্যমন্ত্রী,ড. হাছান মাহমুদ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close