সিআইপি হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ধামরাইয়ের চিকিৎসক ডা. নীরু

বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী চিকিৎসক ডা. নীরু শামছুন নাহারকে সিআইপি (বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) নির্বাচিত করেছে বাংলাদেশ সরকার। তিনি আমেনা-নুর ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান।

ডা. নীরু শামসুন নাহার ঢাকার ধামরাইয়ের কুশুরা ইউনিয়নের ডালিপাড়া গ্রামের কৃতি সন্তান। তার বাবা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুর উজ জামান ও মাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আমেনা জামান।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়।

২০২৩ সালের জন্য তিন ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন দেশে থাকা ৭০ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে সিআইপি নির্বাচিত করে তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়।

এরমধ্যে বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী “অভিবাসী বাংলাদেশি” ক্যাটাগরিতে সিআইপি হিসেবে নির্বাচিত হন ডা. নীরু শামছুন নাহার।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৩ উদযাপন অনুষ্ঠানে নির্বাচিত সিআইপিদের হাতে সম্মাননা ও সিআইপি কার্ড তুলে দেওয়া হবে।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সংগঠক সদ্যপ্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুর উজ জামানের পরিবারের জনসেবা ও জনহিতকারী কার্যক্রমের কয়েক প্রজন্মের ঐতিহ্য রয়েছে। ধামরাইসহ বিভিন্ন এলাকায় “আমেনা-নুর ফাউন্ডেশন”-এর মাধ্যমে তারা দরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে থাকেন। তার ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আল জামানও সিআইপি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ডা. নীরু শামসুন নাহার বলেন, “বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী ও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার আমাকে সিআইপি হিসেবে নির্বাচিত করে গেজেট প্রকাশ করেছে। সরকারি গেজেটভুক্ত ব্যক্তি হিসেবে সম্মাননা যে কারও কাছে মর্যাদাকর প্রাপ্তি। আমার এ কাঙ্ক্ষিত মর্যাদাকর প্রাপ্তিতে আমার সকল পরিবার, শুভানুধ্যায়ী ও বন্ধুদের পাশে থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।আশাকরি আগামীতেও আমি ও আমার সাত ভাই-বোন আমাদের ধামারাই এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই মঙ্গলময় কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারব, ইনশাআল্লাহ।”

নির্বাচিত সিআইপিদের (এনআরবি) প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সরকার অনুমোদিত পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। সিআইপি কার্ডের মেয়াদ থাকাকালীন তারা বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশপত্র পান এবং সরকার নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট বিষয়ক নীতিনির্ধারণী কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। সিআইপিরা দেশ-বিদেশে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অগ্রাধিকার পান।

এছাড়া জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে বিদেশে থাকা বাংলাদেশ মিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পান তারা। সড়ক, বিমান, নদীপথে ভ্রমণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকিট পাবেন। হোটেল-রেস্তোরাঁয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা পাবেন। বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ চামেলী ব্যবহার এবং স্পেশাল হ্যান্ডলিং ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।

সিআইপিরা স্ত্রী-স্বামী, নির্ভরশীল পুত্র-কন্যা ও নিজেদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কেবিন সুবিধা পাবেন। সিআইপিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মতো সুযোগ-সুবিধা পাবেন এবং তাদের বিনিয়োগ “ফরেন প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট (প্রমোশন অ্যান্ড প্রটেকশন) আইন, ১৯৮০” এর বিধান অনুযায়ী সংরক্ষণ করা হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া বাংলাদেশে থাকলে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে এবং সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন সিআইপিরা।