• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

থার্টিফার্স্ট: কক্সবাজারে বিধি-নিষেধ আছে, পর্যটক নেই

প্রকাশ:  ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:৩৯
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ইংরেজি নববর্ষ বরণে ‍থার্টিফাস্ট নাইটে দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিশেষ কোনো আয়োজন নেই। যে কারণে সৈকতে পর্যটকদের আশানুরূপ সাড়া নেই বলে জানিয়েছেন হোটেল মালিকরা।

এই সময়টাতে প্রতিবছরই কক্সবাজারে পর্যটকদের সমাগম হয়। সমুদ্র সৈকত ঘিরে গড়ে ওঠা হোটেল-মোটেল ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে থাকে হাজারো পর্যটকের ভিড়। তবে বিধি-নিষেধের কারণে এবার তেমনটি নেই।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, থার্টিফার্স্ট নাইটে সমুদ্র সৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কনসার্ট বা অনুষ্ঠানের আয়োজন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার আগে উন্মুক্ত স্থানের সব আয়োজন শেষ করতে বলা হয়েছে। এই সময়ের পর আতশবাজি প্রজ্বলন, বাজি ফুটানো যাবে না। হোটেল-মোটেলসহ বিভিন্ন স্থানের বারও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে হোটেল-মোটেলে ইনডোর আয়োজনে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচন ঘিরে অনুষ্ঠানে বিধি-নিষেধের কারণে পর্যটক আসেনি। এরপরও যেসব পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে টুরিস্ট পুলিশ।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) আপেল মাহমুদ বলেন, “পর্যটকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের টহল টিমের সঙ্গে সাদা পোশাকেও পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন ক্যামেরার ব্যবস্থা রয়েছে।”

সরেজমিনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কিছু পর্যটকের দেখা মিললেও জেলার অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলো ফাঁকা দেখা গেছে। এর মধ্যেও যেসব পর্যটক থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনে কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন তারা নানা বিড়ম্বনার কথা বলছেন।

রাজধানীর মগবাজার থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন ফাহাদ চৌধুরী ও রুবিনা ইয়াসমিন দম্পতি। তারা জানান, ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে কক্সবাজারের দৃশ্য এবার ভিন্ন। সৈকতে অন্যান্য সময়ে তিল ধারণের জায়গা না থাকলেও এবার একদম ফাঁকা। নেই কোনো কোলাহল।

যশোর থেকে আসা পর্যটক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, “আমরা ৮ বন্ধু এবার থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনে কক্সবাজারে এসে খুব হতাশ। কারণ, এখানে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন নেই। দুয়েকটি হোটেলের ইনডোরে অনুষ্ঠান হচ্ছে বলে শুনেছি। তবে সেখানে আমাদের যাওয়ার অনুমতি নেই।”

চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে আসা রবিউল আলম ও স্ত্রী জেনিয়া আকতার দম্পতি জানান, পুরনো বছরের অনেক স্মৃতি রয়েছে। জীবনের অনেক দুঃখ-কষ্ট ছাপিয়ে নতুন বছর শুরু করতে চান। পুরনো বছরের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় দিয়ে নতুন সূর্যোদয়ের অপেক্ষায় আছেন তারা।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন পর্যটন মৌসুম। তারপরও নতুন বছর উদযাপনের এই দিনে পর্যটক না আসায় তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনুষ্ঠানের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করায় পর্যটকরা এবার বিমুখ। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনগুলোতে এ ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

পর্যটন ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে সব ধরনের অনুষ্ঠানে বিধি-নিষেধ আরোপ করায় আশানুরূপ পর্যটক কক্সবাজারে আসেনি। অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা পর্যটন শিল্পের জন্য অশনিসংকেত। এবারের মতো কমসংখ্যক পর্যটক আগে দেখিনি। এজন্য লোকসানের মুখে পড়তে হবে।”

কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মুখিম খান বলেন, “থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু সে আশার গুড়ে বালি। চলতি বছরে পর্যটন ব্যবসায় শনির দশা কাটেনি। আমরা আশা করব, নির্বাচনের পর পর্যটকে ভরপুর থাকবে কক্সবাজার।”

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, “থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনে বিভিন্ন তারকা মানের হোটেলের ইনডোরে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোনো ধরনের অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কোনো ধরণের আঁতশবাজি, পটকাসহ সব ধরনের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”

পর্যটন,সমুদ্র,সৈকতভ্রমণ,কক্সবাজার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close