মেঘনা থেকে বালু তোলা আটকে গেল চেয়ারম্যান সেলিমের ভাইয়ের
চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার আটটি মৌজায় অবস্থিত মেঘনা নদী থেকে বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বোরহান খানকে বালু উত্তোলন করতে অনুমতি দিতে নির্দেশ দিয়ে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এই আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সরকারপক্ষের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
সম্পর্কিত খবর
বোরহান খান চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সেলিম খানের ছোট ভাই।
এর আগে আটটি মৌজায় মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে বোরহান হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে আটটি মৌজায় তিন বছরের জন্য ৪৫ লাখ কিউবিক (ঘনফুট) বালু উত্তোলনের অনুমতি দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে সরকারপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে সরকারপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। বোরহান খানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, দুটি উপজেলার আটটি মৌজায় মেঘনা নদী থেকে বোরহান খানকে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই তিন বছরের জন্য ৪৫ লাখ কিউবিক (ঘনফুট) বালু উত্তোলনের অনুমতি দিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। ফলে বোরহান খান বালু উত্তোলন করতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, সেলিম খান মেসার্স সেলিম এন্টারপ্রাইজের মালিক। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি পদ্মা ও মেঘনার ডুবোচর থেকে বালু তুলেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করার অভিযোগ রয়েছে। সেলিম খানের এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে ২০২২ সালের ২ মার্চ প্রথম আলোতে ‘“বালুখেকো” চেয়ারম্যান তিনি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বালু উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে সেলিম খান এক রিট করেছিলেন। সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে হাইকোর্ট তাঁকে বালু উত্তোলনে অনুমতি দিতে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ লিভ টু আপিল করে, যা চেম্বার আদালতে ওঠে। চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। ২০২২ সালের ২৯ মে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া সেই রায় বাতিল ঘোষণা করেন।
এরপর সেলিম খানকে সরকারি কোষাগারে বালু তোলার বিপরীতে (রয়্যালটি আদায়) ২৬৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা জমা দিতে বলেছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ওই টাকা এখনো জমা দেননি সেলিম খান।