• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

টুকটুকি, ইকরি, শিকু ও হালুমদের সঙ্গে একবেলা

প্রকাশ:  ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৩৮
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

মঞ্চে গোল হয়ে বসে একদল শিশু মনোযোগ দিয়ে মজার মজার প্রশ্নে সাড়া দিচ্ছিল। ঘড়িতে তখন প্রায় বেলা সোয়া ১১টা বাজে। কিছুক্ষণ পর বলা হলো, এখন গল্প শেষ, একটু পরে আসবে টুকটুকি, ইকরি, হালুমরা। প্রিয় কার্টুন চরিত্রের নাম শুনে সে কী উচ্ছ্বাস! মিনিট দশেক পরে ঘোষণা হলো, এবার আসছে হালুমরা। এতক্ষণ আশপাশের স্টলে বই দেখতে থাকা শিশুরা দ্রুতই এসে ভিড় জমালো মঞ্চের সামনে। হালুম, টুকটুকিদের কাছ থেকে দেখার আনন্দই অন্যরকম!

মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলায় আজ শনিবার সকালটা ছিল শিশুদের। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার মূল প্রবেশদ্বার থেকে হাতের ডান দিকের অংশ শিশু চত্বর। সেখানেই এসেছিল সিসিমপুরের হালুম, টুকটুকি, ইকরি ও শিকুরা। প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় তাদের দেখা পাবে শিশুরা।

আজ মঞ্চে প্রথমে আসে টুকটুকি। সে যখন ছড়ার তালে তালে নাচছিল, তার সঙ্গে পুরো মঞ্চই তাল মেলাল। মঞ্চের চারপাশে বেশ ভিড়। যারা ঠেলেঠুলেও কাছে ভিড়তে পারছে না, তাদের ভরসা বাবার কাঁধ। তিন বছরের নাওয়ার হোসেনও বাবার কাঁধে চড়ে মাথা দোলাচ্ছিল। তার বাবা মোবারক হোসেন বলেন, নাওয়ার এবারই বইমেলা কিছুটা বুঝতে শিখেছে। সিসিমপুরের চরিত্রগুলোর প্রতি তার আগ্রহ বেশি।

ফজলুল করিম ও আফরিনা করিম দুই সন্তান নিয়ে বইমেলায় এসেছেন। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে আলিশা আফরিন কয়েকটি বই কিনেছে। সে আরও স্টল ঘুরতে আগ্রহী। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে আরিশ আফরাজ বায়না ধরেছে সিসিমপুরের মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার।

ফজলুল করিম বলেন, প্রতিবছর ছুটির দিনগুলোতে সন্তানদের নিয়ে আসেন। সন্তানদের জন্য একসঙ্গে এত বই তো সারা বছর পাওয়া যায় না। তাই বইমেলায় এসে বেশি করে বই কিনে রাখেন।

দুপুর প্রায় ১২টা পর্যন্ত সিসিমপুরের কার্টুন চরিত্রগুলোর পরিবেশনা চলে। এরপর শিশুরা আবার স্টলগুলোতে ফিরে যায়।

প্রিয় চরিত্র হালুমের ছড়া শোনা শেষে চতুর্থ শ্রেণির আবদুল্লাহ আল ওয়াফি এবার স্টলে ঘুরছে। তার ভূত, বিজ্ঞান কল্পকাহিনি পড়তে বেশ ভালো লাগে। আজও কল্পকাহিনির বই সে কিনেছে।

নতুন কোনো কমিকস এলেই তা পড়ে দ্রুত শেষ করে ফেলে কেজি ওয়ানে পড়ুয়া আরিশ আহনাফ। ঢাকা কমিকসের স্টলে বেশ কিছুটা সময় নিয়ে সে পছন্দের কিছু সিরিজ কিনে নিল। তবে কথা বলতে চাইলে সে খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি। আরিশের বাবা আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বইমেলায় ছেলের আগ্রহেই বেশি আসা হয়। কমিকস তার খুব প্রিয়।

শিশুদের বই প্রসঙ্গে এই অভিভাবক কিছুটা অনুযোগ করে বলেন, ‘বাইরের দেশের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে যেসব বই পাওয়া যায়, সেগুলোর মান তত ভালো নয়। মাঝেমধ্যে চিন্তা হয়, শিশুদের হাতে কী তুলে দিচ্ছি। শিশু–কিশোর বইয়ের মান আরও ভালো হওয়া উচিত।’

শিশুদের জন্য যে বইগুলো বের হচ্ছে, তা ঘুরেফিরে প্রায় একই রকম বলে মনে করেন সালমা ইসলাম। ব্যাংক কর্মকর্তা সালমা দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে সাওয়ারা ইসলামকে নিয়ে এসেছেন মেলায়। তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো স্টল ঘুরলাম। ঘুরেফিরে কাছাকাছি গল্প, ছড়াই বেশি। ওপরে শুধু রঙিন ছবি দিয়ে ছাপানো। শিশুদের বই নিয়ে আরেকটু ভাবা যেতে পারে।’

মেলার আজ তৃতীয় দিন। এখনো সব স্টল গোছানোর কাজ শেষ হয়নি। মেলা চত্বরে এখনো কাজ চলছে। কিছু স্টল ফাঁকা। ছুটির দিন দুপুর বলে শিশু আর অভিভাবক ছাড়া তেমন কোনো লোকজন নেই।

বাংলা একাডেমি,বই,বইমেলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close