• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মেঘ: স্বাধীনভাবে কাজ করার কারণে আমার মা-বাবা হত্যার শিকার

প্রকাশ:  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩০
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

নিহত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির ছেলে মাহির সরোয়ার মেঘ বলেছেন, ধীন কিছু করতে গিয়েই আমার বাবা-মা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরে জিয়ারত শেষে তিনি এমন কথা বলেন।

১২ বছর আগে নির্মমভাবে খুন হন এই সাংবাদিক দম্পতি। ২০১২ সালে যখন সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়, তখন মেঘের বয়স ছিল মাত্র পাঁচ।

মেঘ বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ লেভেলে পড়ছেন। এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দল দুর্দান্ত ঢাকার জার্সির নকশা করেছেন তিনি।

মেঘ বলেন, “ছোটবেলা থেকে আমার বাবা-মায়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমি সবার কাছে পরিচিত। সবাই আমাকে অনেক আদর-স্নেহও করেন। তবে আমি বাড়তি কোনো সুবিধা নিয়ে বড় হতে চাই না। নিজে কিছু করে নিজের পরিচয়ে বড় হতে চাই। আমার মা-বাবার আদর্শকে ধারণ করেই আমি সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”

তিনি বলেন, “আমার মা-বাবাকে নিয়ে সবাইকে বলতে শুনেছি তারা অনেক ভালো ছিলেন, ভালো কাজ করতেন। আমরা একটি স্বাধীন দেশে বাস করি। সবার স্বাভাবিক স্বাধীনতা পাওয়া উচিত। আমার মা-বাবা হয়তো স্বাধীন কিছু করতে গিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। কেউ তো এ কাজটা করেছে।”

মেঘের মামা নওশের বলেন, “১২ বছর ধরেই আমরা বিচার চাচ্ছি। ঘটনা তদন্তে করতে গিয়ে যে নাটক হচ্ছে অথবা সরকারের দায়িত্বরত উচ্চপদস্থ দায়িত্বশীল জায়গা থেকে যে ধরনের মন্তব্য পাওয়া যায়, এসব শুনলে হতাশাই বাড়ে। কাদের কাছে বিচার চাচ্ছি! তারপরও আমরা এ দেশে থাকি। বিচার পাওয়ার অধিকার আমাদেরও আছে। যত দিন আমরা বেঁচে আছি, তত দিন আমার বোনের হত্যার বিচার, মেঘের মা-বাবার হত্যার বিচার আমরা চেয়ে যাবো।”

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নাবালক ছেলে মাহির সরোয়ার মেঘের সামনেই মাছরাঙা টিভির তৎকালীন বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় মামলা করার পর এক যুগ কেটে গেলেও, এখনও জমা পড়েনি তদন্ত প্রতিবেদন। কবে নাগাদ মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হবে, তাও বলতে পারছেন না তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা।

জোড়া হত্যাকাণ্ডটি দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। বিশেষ করে সাংবাদিকদের মধ্যে। তারা তখন থেকে নিহত দম্পতির বিচার দাবি করে আসছে।

ওই সময় সরকারের পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা দম্পতির বাসভবন পরিদর্শন করেন। শিশু মেঘের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের পরিবারকে দ্রুত বিচারের আশ্বাস দেন।

তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের বিচারের আওতায় আনার অঙ্গীকার করেছিলেন।

সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিনও তদন্ত সংস্থা র‌্যাব প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এ জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

মৃত্যু,সাংবাদিক,হত্যাকাণ্ড
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close