• বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

র‍্যাব ডিজি: বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী রয়েছে

প্রকাশ:  ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৪
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

মিয়ানমার মাদক চোরাচালানের প্রধান রুট উল্লেখ করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, “এটি (মাদক চালান) এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। মিয়ানমার অনেক আগে থেকেই চাচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধ করতে। এখন যুদ্ধে নামা মানে দেশটা শেষ হয়ে যাওয়া। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে আরাকান আর্মির সাথে যুদ্ধ চলছে। তাই ওরা আমাদের সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি করে ফায়দা লুটতে চাচ্ছে।”

শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার এম এ খালেক ডিগ্রি কলেজ মাঠে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

র‍্যাব ডিজি আরও বলেন, “মাদক এখন আকাশ, নৌপথ এবং মিয়ানমার থেকে বেশি আসছে। এটি পরিকল্পিতভাবে পাঠানো হচ্ছে। আমরা জাল ফেলে রেখেছি, মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় গ্যাংস্টারকে জালের মধ্যে ফেলেছি, আমরা কিছু করতে পারব। যেকোনো মূল্যে মিয়ানমার রুট বন্ধ করা হবে। মাদক হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসা। রাতারাতি ধনী হওয়ার ব্যবসা। এটা জনপ্রতিনিধিসহ সবাই জানে। বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী রয়েছে। কোনো একক বাহিনীর পক্ষে মাদক নির্মূল করা সম্ভব না। মাদক নির্মূল করতে হলে সবাই মিলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “নতুন প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে শুধু বই-খাতা দিলে হবে না। সেই বাস্তবতা কিন্তু এখন আর নেই। তাই বাচ্চাদের শৈশব থেকে শেখাতে হবে। নীতি-নৈতিকতা পরিবার থেকেই শিখতে হয়। শুরু থেকেই বাচ্চাদের গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের মূল ভূমিকা রয়েছে, এরপরে শিক্ষকদের।”

তিনি আরও বলেন, “পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যদি মাদক চলে যায়, এটা একটা জাতিকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা। ভারতীয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করা হলেও মিয়ানমার ইয়াবা, আইসসহ বিভিন্ন মাদক সমানে পাচার করছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন ও অলআউট অ্যাকশনে যেতে হবে। গডফাদার, কিশোর গ্যাং কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।”

শিক্ষকদের উদ্দেশে র‌্যাব ডিজি বলেন, “আপনাদের মডেল হতে হবে। কারণ পরিবারের পরেই আপনাদের স্থান। আপনাদেরই সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। আপনাদের সুযোগ সুবিধা এখন একটু কম থাকলেও আগামীতে ঠিক হয়ে যাবে। ছেলে-মেয়েকে স্কুল কলেজে পাঠিয়ে ঘরে বসে থাকলে হবে না। খবর রাখতে হবে মাদকের সহজলভ্যতা সন্তানটিকে শেষ করে দিচ্ছে কি-না।”

দেশে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে র‌্যাব ডিজি বলেন, “দেশে বর্তমানে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে বলেই আমাদের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। এখনকার প্রতিটি ক্যাডারের মধ্যে পেশাদারিত্বের খুব ঘাটতি। এটাকে যদি আমরা ওভারকাম করতে হলে এখন থেকে চেষ্টা করতে হবে। যাতে যুব সমাজ বা নতুন প্রজন্ম অবাধ্য হয়ে না যায়।”

র‌্যাব-৬ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিরোজ কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, এম এ খালেক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কেএম মাহাবুব, ভাটিয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম তালুকদার, পুলিশ সুপার (অপারেশন) কাজী মাহাবুবুল আলম প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে ২০২৩ সালে কাশিয়ানী উপজেলার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ১০৯ জন শিক্ষার্থীর হাতে ক্রেস্ট ও জনপ্রতি ১০ হাজার করে বৃত্তির টাকা তুলে দেন র‌্যাব মহাপরিচালক।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব),মাদক,গোপালগঞ্জ,মিয়ানমার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close