• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড : ‘লোকবল সংকটের অজুহাতে দায় এড়াতে পারে না রাজউক’

প্রকাশ:  ০৩ মার্চ ২০২৪, ১৮:৫১ | আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৪, ২০:৪১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

রাজউক লোকবল সংকটের অজুহাতে দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারে না বলে জানিয়েছেন দেশের ৪৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক। বেইলি রোডে আগুনে প্রাণহানির ঘটনায় শোক জানিয়ে এ কথা বলেন তারা।

রোববার (৩ মার্চ) বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু সেই সব দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার বা প্রতিকার মানুষ আজও পাননি। এমন অব্যবস্থা, বিচারহীনতা, প্রতিকারবিহীন অবস্থা অব্যাহতভাবে চলতে পারে না। অগ্নিকাণ্ডে ২০১০ সালে নিমতলীতে ১২৪ জন, ২০১৯ সালে চকবাজারে ৭১ জন ও বনানীর এফআর টাওয়ারে ২৭ জন প্রাণ হারান। এ ছাড়া হাসেম ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ, তাজরীন ফ্যাশনসহ এর আগে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা থেকে বেইলি রোডের দুর্ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ভাবার উপায় নেই। আগের দুর্ঘটনাগুলোরই ধারাবাহিকতা।

তারা বলেন, আগের দুর্ঘটনাগুলো থেকে জানা যায়, এসব দুর্ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তব্যে চরম অবহেলাই মূলত দায়ী। বেইলি রোডে দুর্ঘটনার শিকার ভবনটিকে রাজউক শুধু বাণিজ্যিক ব্যবহারের শর্তে অনুমোদন দিয়েছিল। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ ভবনটিকে অগ্নিকাণ্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনবার নোটিশ পাঠিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, নোটিশ পাঠানোর পর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নাগরিকদের প্রশ্ন, শুধু নোটিশ দিয়েই কি ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? তাদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও ক্ষমতা রয়েছে, তা তারা কেন করল না?

নাগরিকরা বলেন, নকশা অনুযায়ী ভবন হয়েছে কি না, তা রাজউকের তদারক করার কথা। কিন্তু লোকবল নেই, এই অজুহাতে রাজউক কোনো অবস্থায় দায় এড়াতে পারে না। দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল, তা মানুষকে জানানো, জবাবদিহি করা এখন সময়ের দাবি। বেইলি রোডের ঘটনাসহ সব দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তারা।

ভবনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা খতিয়ে দেখা এবং সিটি করপোরেশন, রাজউকসহ বিভিন্ন সরকারি কর্তৃপক্ষের অবহেলা, ব্যর্থতা শনাক্ত করা, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার বাস্তবায়ন তদারকি, দায়ীদের শাস্তি প্রদান, অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ নীতিমালা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন, ভুক্তভোগীদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া দাবি করেন বিবৃতিদাতারা।

বিবৃতিদাতারা হলেন- মানবাধিকারকর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদের সচিব আলী ইমাম মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সেন্ট্রাল উইমেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান, বিএনডব্লিউএলএর নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সাল, আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মী শহিদুল আলম, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, মানবাধিকারকর্মী মো. নুর খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, সাংস্কৃতিক কর্মী অরূপ রাহী প্রমুখ।

বিশিষ্ট নাগরিকদের বিবৃতি,বেইলি রোড ট্র্যাজেডি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close