• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘জাতীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মানবিক উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে’

প্রকাশ:  ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:১৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি) বলেছেন, জাতীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মানবিক উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূল, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের আলোকে দেশপ্রেমকে সমুন্নত রাখতে সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করা দরকার।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সের মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়ামে দুদিনব্যাপী আয়োজিত বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সভা-২০২৪ এর উদ্বোধন করে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আজকের সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত। এই জায়গায় মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে কাজ করে যেতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার বিস্তৃত ক্ষেত্রের মধ্যে মানুষের মানবিক মূল্যবোধ, বিবেকবোধের জায়গা সমুন্নত রাখতে তৎপর হতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক বলেন,

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ বরাবরই অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আসছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির বাইরে নারীর অবস্থান, নারীর অংশগ্রহণ আরও ব্যাপক হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে নারীর প্রতি থাকা বৈষম্য দূর করে বিনিয়োগের ওপর তিনি এ সময় গুরুত্বারোপ করেন।

অ্যাম্বাসি অব সুইডেনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রেহানা খান বলেন, জেন্ডার সমতা অর্জন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৫নং লক্ষ্য অর্জন সুইডেন সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখায় ফিল্ড ভিজিটের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে নারীরা জলবায়ু চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলায় সাহসী ও উদ্যোগী ভূমিকা রাখছে। নারীর প্রতি শূন্য সহিংসতা নীতি বাস্তবায়নে মহিলা পরিষদের জেলা শাখার উদ্যোগে গৃহীত কর্মসূচিগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন,

নারী হওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট বৈষম্য আছে পরিবারে, সমাজে, আইনি কাঠামোতে। আইনি কাঠামোর দুর্বলতা, পারিবারিক দুর্বলতা, সামাজিক চিন্তা-চেতনার পশ্চাদপদতা এবং ধর্মান্ধতা নারীর প্রতি সহিংসতাকে জিইয়ে রেখেছে। নারীর প্রতি এই বৈষম্য দূর করতে সংগঠনকে অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তঃপ্রজন্মগত নেতৃত্ব গড়ে তোলার ওপর জোর দিতে হবে। সংগঠনের সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে যুক্ত করতে হবে এবং বৈচিত্র্যকে ধারণ করতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ১ম কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনে সাংগঠনিক শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি লক্ষী চক্রবর্তী। কেন্দ্রীয় কমিটির কার্য বিবরণী পেশ করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম।

এ সময় সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, কেন্দ্রীয় কমিটি আয়-ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করেন অর্থ সম্পাদক দিল আফরোজ বেগম। সভা সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাথী চৌধুরী।

এর আগে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নৃত্য ও সংগীতবিষয়ক সম্পাদক সুরাইয়া পারভীন ও তার দল। উদ্বোধনী অধিবেশন সংগীত পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সুস্মিতা আহমেদ ও শারমিন সাথী ময়না।

সভায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সংগঠনের সহসভাপতি রেখা চৌধুরী। এ সময় প্রয়াত সকল বিশিষ্টজনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রাক্তন সভাপতি হেনা দাসের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন সংগঠনের সহসভাপতি ডা. মাখদুমা নার্গিস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম।

এছাড়া জাতীয় পরিষদ সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দসহ ৫৫টি জেলা শাখার প্রায় ৩০০ জন কাউন্সিলরসহ প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণ করেন।

মানবিক উন্নয়,মহিলা পরিষদ,মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী,সিমিন হোসেন (রিমি)
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close