• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘সক্রিয়’ বিএনপি, থামানোর কৌশল খুঁজছে আ.লীগ

প্রকাশ:  ০১ অক্টোবর ২০২২, ১৩:৩৫ | আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২২, ১৩:৪০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি রাজনীতিতে বিএনপি অনেকটা সক্রিয় অবস্থানে আছে। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও ‘সহিংসতায়’ জড়িয়ে পড়ছে। এটা অব্যাহত থাকলে দলটির কর্মীরা নিজেদের শক্তিশালী ভাবতে শুরু করবেন- এমনটা মনে করছে আওয়ামী লীগ। এঅবস্থায় বিএনপির আন্দোলন কীভাবে থামানো যায়, নেই কৌশল খুঁজছে আ.লীগ।

দলীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজধানীর একাধিক সমাবেশে বিএনপিকর্মীরা লাঠি প্রদর্শন করেছেন। এটাকেই ‘ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে সরকারি দল। তাই বিএনপিকর্মীদের লাঠি নিয়ে সমাবেশে আসার বিষয়টি সামনে আনা হবে। আর তাতে ‘সহিংসতা’ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পুরোমাত্রায় ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হবে।

এমনকি বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে থাকা পুরোনো মামলাগুলোর তদন্ত ও বিচারকাজ দ্রুত শেষের চেষ্টা থাকবে। পাশাপাশি নতুন মামলায় গ্রেপ্তার–আতঙ্ক ছড়ানো হবে, যাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলন টেনে নিতে না পারে। আ.লীগের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া না–নেওয়া নিয়ে বিএনপির ভেতর ভাঙা–গড়া শুরু হতে পারে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলছেন, বিএনপি যেভাবে লাঠি নিয়ে মাঠে নামছে, তাতে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার ষড়যন্ত্র দেখা যাচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না।

ক্ষমতাসীন দলটির সূত্র জানায়, ঢাকার বাইরে বিএনপিকে কর্মসূচি পালনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা আছে। ঢাকায় আ.লীগ নেতাকর্মীদের দিয়ে বিএনপিকে চাপে রাখা হচ্ছে। তবে সব কর্মসূচির ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। কোথাও ছাড় আবার কোথাও বাধা দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপির কর্মসূচি থামাতে দলের নেতাকর্মী ও পুলিশকে সুবিধামতো কাজে লাগানো হচ্ছে। এতে সরকার সমালোচনায় পড়ছে। অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছেন। তাই বিএনপিকে সহিংসতার দায় দিয়ে চাপে ফেলা সবচেয়ে সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৩ ও ২০১৫ সালে বিএনপি সহিংস হওয়ার পর তাদের দমন করা সহজ হয়েছিল।

আ.লীগ দলীয় সূত্র জানায়, একদিকে বিএনপির আন্দোলনের চাপ বেড়েছে। অন্যদিকে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও প্রকট। আগামী জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে তৃণমূলেও সম্মেলন চলছে। এতে বিভিন্ন স্থানেই নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতিতে শুধু দলীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে বিএনপিকে চাপে রাখা যাবে কিনা—এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করছে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও বেশি করে সম্পৃক্ত করার উপায় খুঁজছেন দলের নীতিনির্ধারকেরা।

আ.লীগের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপি একদিকে সরকারবিরোধী সব দলকে এক কাতারে আনার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে সমাবেশের মাধ্যমে দলকে সংগঠিত করছে। আগের দুটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনা আছে। এবার বিএনপিকে মাঠে নামার সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি কীভাবে মাঠছাড়া করা যায়, সেই পরিকল্পনাও চলছে।

তবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি তাদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করবে। তাদের কর্মসূচি অহিংস হলে সমস্যা নেই। তারা এর মধ্যে অনেক কর্মসূচি পালনও করেছে। কিন্তু তারা যেভাবে এখন লাঠি নিয়ে মাঠে নামছে, তাতে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার ষড়যন্ত্র দেখা যাচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না। নিশ্চয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি দেখবে।

উল্লেখ্য, বিএনপি গত আগস্ট থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়ে আসছে। দলটির দাবি, গত ১ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে সরকারি দল ও পুলিশের হামলায় বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মী নিহত এবং ২ হাজার ৭৬৮ জন আহত হয়েছেন।

বিএনপি,আ.লীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close