• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

১১ মাসে নাঙ্গলকোটে তিন কমিটি, অর্থমন্ত্রী ও সাবেক রেলমন্ত্রীকে নোটিশ

প্রকাশ:  ১০ নভেম্বর ২০২৩, ২৩:০৪ | আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ২৩:০৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী মো. ইব্রাহীম জুয়েল। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গত ১১ মাসে তিনবার দেয়ার কারণ জানতে চেয়ে এবং পূর্বের কমিটি পুনর্বহাল রাখার প্রস্তাব দিয়ে তিনি এই নোটিশ দিয়েছেন। অন্যথায় গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ করায় দেশের প্রচলিত আইন ফৌজদারি/ রিভিশন মামলা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আবুল হাশেমের পক্ষে এই নোটিশ পাঠান সুপ্রীমকোর্টের অ্যাডভোকেট মো. ইব্রাহীম জুয়েল।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ১১ মাসে তিনবার কমিটি দিয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির কারণ জানতে চান। এ ছাড়া ১১ মাসে তিনবার কমিটি দেয়া গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ২ নভেম্বর সংসদ ভবনের অফিসে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি হুইপের আহ্বানে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের উভয়পক্ষকে সমাধানের লক্ষ্যে বসে তাদের দ্বন্দ্বের কারণ জানতে চান ও সাত সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেন। কিন্তু ওই বৈঠকের কোনো সিদ্ধান্ত না মেনে ২ নভেম্বর নতুন একটি কমিটির অনুমোদন দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। যা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট মো. আবুল হাশেম বলেন, (বৃহস্পতিবার) নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এই কমিটি গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। কমিটি ভাঙা-গড়ার মধ্যে আছে উনারা। বাণিজ্য হইতাছে খালি।

নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ২ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) এবং জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি'র আহ্বানে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের বিবদমান বিরোধ সমাধানের জন্য উনার সংসদ ভবনের অফিসে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মাননীয় হুইপ জনাব আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এম.পি. হুইপ ও উপস্থিত ছিলেন মাননীয় অর্থ মন্ত্রী জনাব আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এম.পি এবং সাবেক রেল মন্ত্রী জনাব মুজিবুল হক এম.পি। সভায় বিরোধপূর্ণ উভয় পক্ষ উপস্থিত ছিলেন ও উভয় পক্ষের ৬ জনের বক্তব্য আপনারা সহ হুইপ মহোদয় শুনেছেন। সবার বক্তব্য শুনে হুইপ মহোদয় বিভিন্ন দিক নির্দেশনা বক্তব্য শেষে সাত সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে দেন।

নোটিশে বলা হয়, এই সাত সদস্যের কমিটি তাহারা আ হ ম মুস্তফা কামাল সাহেবের বাসায় বসে ৫ দিনের মধ্যে তাদের মতামত জানাবেন সেটা কি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি হবে নাকি আহ্বায়ক কমিটি হবে। উক্ত মতামত পাওয়ার পর তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে উনার অভিপ্রায় সকলকে জানাবেন। কিন্তু সম্প্রতি ঐ সভায় কোন সিদ্ধান্ত না মেনে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে গত ০২ নভেম্বর একটি আহ্বায়ক কমিটি করেছেন। যা (আওয়ামী লীগের) গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি ও আইনসিদ্ধ নয়।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে নোটিশে বলা হয়, আপনারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মধ্যে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের মধ্যে বিরোধ এবং সংঘাতের সূচনা করেছেন এবং ১১ মাসের মধ্যে ৩টি কমিটি দেয়ার পিছনে কোন ধরনের অসৎ উদ্দেশ্যে আছে কিনা সেটাও দেখার বিষয়।

নোটিশে বলা হয়, সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এম.পি এর নিকট আহ্বায়ক কমিটির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি পরিষ্কার ভাবে বলেন যে, আমি সবার সামনে যা বলেছি সেটাই আমার বক্তব্য ও সিদ্ধান্ত। তিনি আরও বলেন যে, আমার নাম যদি কেউ ব্যবহার করে কিছু করেন সেটা প্রতারণার সামিল। পরবর্তীতে আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করাও হয়নি এবং জানানো হয়নি।

নোটিশে আরো বলা হয়, এমতাবস্থায় আমার জিজ্ঞাসা হল কেন এবং কি কারণে ১১ মাসের মধ্যে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদ্বয় নাঙ্গলকোট উপজেলার আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি করে রেখেছেন তা বোধগম্য নয়। কারণ আমার মোয়াক্কেল (আবুল হাশেম) আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে সংগঠন করে আসছেন। বর্তমানেও তিনি আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাথে সংযুক্ত আছেন কিন্তু গত ২ নভেম্বর আপনাদের স্বাক্ষরিত আহ্বায়ক কমিটিতে তাহাকেও সদস্য পদে ১৩নং সিরিয়ালে রাখা হয়েছে, যা অপমান জনক এবং তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার সামিল ও অসম্মানজনক। যা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি।

নোটিশে বলা হয়েছে, ২ নভেম্বরে সংসদ ভবনে যে-সব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পূর্বের কমিটি (অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ সভাপতি ও আবু বকর ছিদ্দিক আবু সাধারণ সম্পাদক) পুনর্বহাল রাখতে অন্যথায় নতুন আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ করায় দেশের প্রচলিত আইন ফৌজদারি/ রিভিশন মামলা করা হবে।

১১ মাসে তিনবার কমিটি দিয়ে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ করায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিগ্যাল নোটিশের কপি প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এবং দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার নিকটও পাঠানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close