• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জিএম কাদের: সবক্ষেত্রেই রংপুর বৈষম্যের শিকার

প্রকাশ:  ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১:৩৩
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী জিএম কাদের বলেছেন,‍ ‌“জাতীয় পার্টি উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ রাজনৈতিক দল। সে কারণে রাজনীতি আর উন্নয়ন বলেন সবক্ষেত্রেই রংপুর অঞ্চলের মানুষ বিভিন্নভাবে বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার। একইভাবে পুরো উত্তরাঞ্চল বৈষম্যের শিকার। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও এই বৈষম্য নিরসন করা হয়নি।

রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ মিলনায়তনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নির্বাচনি মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমরা অনেক সময় সফল হতে পারছি না। তার জন্য আমরা নিরাশ নই। সামনের দিকে আল্লাহর রহমতে আমরা যদি সংসদে যাই, তখন আমরা জোরালো ভূমিকা রাখার চেষ্টা করব এবং ব্যবসায়ীসহ সব স্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে হলেও রংপুর অঞ্চলের জন্য আমাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায় করব।”

তিনি বলেন, “রংপুর সিটি করপোরেশন আয়তনের দিক থেকে দেশের অন্যতম বৃহৎ সিটি করপোরেশন। কিন্তু অন্যান্য করপোরেশনের তুলনায় এখানে বরাদ্দ খুব সামান্য। এটাও উত্তরাঞ্চলের জন্য একটা বৈষম্য, বিশেষ করে রংপুর বিভাগের প্রতি। আরেকটা হলো জাতীয় পার্টির প্রতি, আমাদের দলের প্রতি চরম বৈষম্য করা হয়। রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পরপর দুইবার বিপুল ভোটে সিটি মেয়র নির্বাচিত হলেও তাকে আজ পর্যন্ত কোনো মর্যাদা দেওয়া হয়নি। অথচ, রংপুর সিটি করপোরেশনের চারভাগের একভাগ এলাকা নিয়ে গঠিত করপোরেশনের মেয়রকেও প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এটাও এক ধরনের বঞ্চনা আর বৈষম্য। এ ব্যাপারে আমরা সংসদেও কথা বলেছি, কিন্তু তা কার্যকর করার কোনো উদ্যেগ নেওয়া হয়নি।

জিএম কাদের বলেন, “আমার কাছে মনে হয়, রংপুর শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে। এটা শুধু রংপুরে নয়, বাংলাদেশের প্রায় বড় বড় শহরগুলোতে এমন সমস্যা রয়েছে। পানি নিস্কাশনের জন্য রংপুর নগরীর ওপর দিয়ে দিয়ে প্রবাহিত শ্যামা সুন্দরী খালকে যেমন খনন করা দরকার, তেমনি আরও কিছু খালের ব্যবস্থা করা দরকার।”

তিনি বলেন, “আগে রংপুর নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ছোট-বড় একটা করে পুকুর বা কুয়া থাকত। খেলার মাঠ থাকত, আরেকটা করে প্রাইমারী স্কুল থাকত। বর্তমানে রংপুর নগরী অনেক বেশি এলাকা নিয়ে সম্প্রসারিত হওয়ার কারণে আমাদের প্রধান চাহিদাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আগুন লাগলে পানি দেওয়ার মতো কোনো পুকুর বা খাল-বিল কিছু নেই, সব ভরাট হয়ে গেছে। রংপুর নগরীর জন্য একটা মাস্টারপ্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) খুবই দরকার। ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্য এটা জরুরি।”

তিনি আরও বলেন, “রংপুরে শিল্পায়ন দরকার। শিল্প-কলকারখানা না হলে এখানে গ্যাস আসবে না। গ্যাস এখন বিশ্বব্যাপী অনেক এক্সপেনসিভ (দামি) হয়েছে। সরকার এখন আর বাড়ি-বাড়ি গ্যাস দেওয়ার জন্য প্রাকৃতিক গ্যাসের সংযোগ দেবে না। এটা আর লাভজনক নয়। সরকার এখন শিল্প-কলকারখানায় গ্যাস দেবে। রংপুরে যখন শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠবে তখন সরকার নিজে থেকেই গ্যাস দেবে। আমরা রংপুরে শিল্পায়ন ও শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করব এবং গ্যাসের সংযোগের জন্য চেষ্টা করব। এটা সম্ভব হলে এখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং বেকার সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব না এবং আমাদের দেশে অনেক মানুষের টাকা-পয়সা থাকলেও শিল্পায়নের জন্য যায় না।”

রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আকবর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির ও জেলা সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

জাতীয় পার্টি,রংপুর,জিএম কাদের
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close