ক্ষমতায় কতোদিন থাকতে পারবেন, চিন্তা করুন: ইউনুছ আহমাদ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, আমি পীর সাহেব চরমোনাইয়ের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে এই প্রহসনের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় ধন্যবাদ জানাই। দেশবাসী এ নির্বাচনকে লাল কার্ড দেখিয়েছে। ৭ তারিখে কোনো নির্বাচন হয়নি, নাটক হয়েছে। এই নাটকের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসে কতদিন থাকতে পারবেন তা চিন্তা করুন।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ‘একতরফা প্রহসনের ডামি নির্বাচন বাতিল করে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে’ দলের বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ইউনুছ আহমাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই- নির্বাচনের নামে যে নাটক করেছেন সেই তথাকথিত নির্বাচন বাতিল করুন। আমরা আগে থেকেই দাবি করে আসছি জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা আগেই বলেছি পিয়ার সিস্টেমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। এসব যদি আপনি আগেই করতেন তাহলে আপনার এতো ধিক্কার শুনতে হতো না।

‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সুযোগ দেন, ভুল শোধরানোর চেষ্টা করবো। গত ১৫ বছরে হাজার হাজার মানুষ খুন হয়েছে, গুম হয়েছে। আপনি মনে করেছেন বিদেশিরা আপনাকে রক্ষা করবে? আপনার বাবা তার জীবনের অধিকাংশ সময়ের জেলে কাটিয়েছেন। তিনি যখন বিপদে পড়েছেন তার পক্ষে একটি মিছিলও কেউ করেনি। কোনো সহানুভূতি প্রকাশ করেনি। আর আপনি যে কাজগুলো এখন করছেন বা যাদের খুশি করানোর জন্য এগুলো করছেন তারাও আপনার বিপদে পাশে এসে দাঁড়াবে না। আপনার পক্ষে একটা মিছিল বের হবে না, এমনকি কেউ একটা নিন্দাও জানাবে না।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আয়োজিত এ সমাবেশে দশটির সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে আসনে নির্বাচন করেছেন সেই আসনের একটি কেন্দ্রে ৩ হাজার ৩২৪ ভোটের জায়গায় ৩ হাজার ৩৩২ ভোট পড়েছে। এতেই বোঝা যায় সারা দেশে কেমন ভোট হয়েছে। শিশুদের দিয়ে ভোট দিয়ে অনৈতিক কাজে তাদের ব্যবহার করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ বলতে এখন আর কোনো দল নেই মন্তব্য করে সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, এই সরকারের প্রয়োজন শুধু ক্ষমতা। কারণ, তারা গত ১৫ বছরে এত অপকর্ম করেছে যে তারা ক্ষমতায় না থাকলে হয়তো তাদের জেলে যেতে হবে নয়তো পালিয়ে যেতে হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করেছে। আওয়ামী লীগ বলতে এখন আর কোনো দল নেই।

‘এখন সরকার হিমশিম খাচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলছেন, বিরোধী দল ছাড়াও গণতন্ত্র হয়। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে পরিষ্কার হয়ে গেল, দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র নেই।

‘কোনো কোনো রাষ্ট্র চায়, বাংলাদেশে মিয়ানমারের মতো গৃহযুদ্ধ শুরু হোক’ মন্তব্য করে আতাউর রহমান আরও বলেন, এই সরকারও তা-ই চায়। অস্ত্রের মুখে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। অনতিবিলম্বে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নয়তো, দেশের জনগণকে আমরা গণঅভ্যুত্থানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানাই।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরাও।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম