এমপি হতে চাওয়া নায়িকাদের স্বপ্নভঙ্গ

একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন শোবিজ তারকাদের অনেকেই। তাই নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই সংরক্ষিত আসনের সদস্য হওয়ার দৌড়ে রাজনীতিবীদদের পাশাপাশি তারাও নেমেছিলেন। কিন্তু বিধিবাম! আওয়ামী লীগ থেকে কাউকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের পোড় খাওয়া নারী নেত্রীদেরই মনোনয়ন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনোনয়ন কেনা প্রার্থীদের কেউ কেউ শোবিজ অঙ্গনে তারকাখ্যাতি লাভ করেছেন ঠিকই, তবে রাজনীতিতে তাদের অবস্থান নেই। তবুও মনোনয়ন চাইতে পিছিয়ে ছিলেন না কেউই। তাই আওয়ামী লীগের ‘‘প্রভাবশালী নেতাদের’’ কাছে যাওয়া-আসা তো চলেছেই, দলের মনোনয়ন ফরম বিক্রির দিনগুলোতে ‘‘গণহারে’’ ফরমও তুলছেন তারকা জগতের এসব খ্যাতিমানরা।

সংরক্ষিত ৪৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন যারাসংরক্ষিত ৪৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা গত দুই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোবিজ তারকাদের মধ্যে মনোনয়নপত্র কেনার হিড়িক দেখা গেছে। এবার যার পরিমাণ ছিল আরও বেশি। মনোনয়নপত্র বিক্রি করে আওয়ামী লীগ এবার আয় করে ৭ কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তাদের মধ্যে ছিলেন লাকী ইনাম, সুজাতা বেগম, সুবর্ণা মুস্তাফা, শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচী, তারিন জাহান, শিমলা, অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, মেহের আফরোজ শাওন, সোহানা সাবা, নুসরাত ফারিয়া, নিপুন, তানভীন সুইটি, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী করের মতো তারকারা।

তবে সবাইকেই হতাশ হতে হয়েছে এবার।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চূড়ান্ত হওয়া ৪৮ জন নারীর নাম ঘোষণা করেন। এতে অভিনেত্রীদের কারও নাম ছিল না। এর আগে এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনয়নপ্রত্যাশী ১,৫৪৯ জনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনীতরা হলেন যারা-

রেজিয়া ইসলাম (পঞ্চগড়), দ্রোপদী দেবি আগরওয়াল (ঠাকুরগাঁও), আশিকা সুলতানা (নীলফামারী), রোকেয়া সুলতানা (জয়পুরহাট) আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য সম্পাদক, কোহেরী কুদ্দুস মুক্তি (নাটোর), জারা জেবিন মাহবুব (চাপাইনবাবগঞ্জ), রুনু রেজা (খুলনা), ফরিদা আক্তার বানু (বাগেরহাট), ফারজানা সুমি (বরগুনা), খালেদা বাহার বিউটি (ভোলা), নাজনীন নাহার রোশা (পটুয়াখালী) ফরিদা ইয়াসমিন (নরসিংদী), উম্মে ফারজানা সাত্তার (ময়মনসিংহ), নাদিরা বিনতে আমির (নেত্রকোনা), মাহফুজা সুলতানা মলি (জয়পুরহাট), পারভীন জামান কল্পনা (ঝিনাইদহ) আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, আরমা দত্ত (কুমিল্লা), লায়লা পারভীন (সাতক্ষীরা), মন্নুজান সুফিয়ান (খুলনা) সদ্য সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, বেদৌড়া আহমেদ সালাম (গোপালগঞ্জ), শবনম জাহান (ঢাকা), পারুল আক্তার (ঢাকা), সাবেরা বেগম (ঢাকা), শাম্মী আহমেদ (বরিশাল) আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক, নাহিদ ইজহার খান (ঢাকা), ঝর্ণা আহসান (ফরিদপুর), ফজিলাতুন নেছা (মুন্সীগঞ্জ) সদ্য সাবেক মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী, সাহেদা তারেক দিপ্তী (ঢাকা), অনিমা মুক্তি গোমেজ (ঢাকা), শেখ আনার কলি পুতুল (ঢাকা), মাসুদা সিদ্দিক রোজি (নরসিংদী) তারানা হালিম (টাঙ্গাইল) আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, শামসুন নাহার (টাঙ্গাইল) আওয়ামী লীগের শিক্ষা সম্পাদক, মেহের আফরোজ চুমকি (গাজীপুর) নির্বাচনের পরাজিত হয়েছিলেন, অপরাজিতা হক (টাঙ্গাইল) হাসিনা বারী চৌধুরী (ঢাকা), নাজমা আক্তার (গোপালগঞ্জ), রুমা চক্রবর্তী (সিলেট), ফরিদুন্নাহার লাইলী (লক্ষ্মীপুর) আওয়ামী লীগের কৃষি সম্পাদক, আশরাফুন নেছা (লক্ষ্মীপুর), কানন আরা বেগম (নোয়াখালী), শামীমা হারুন লুবনা (চট্টগ্রাম), ফরিদা খানম (নোয়াখালী), দিলারা ইউসুফ (চট্টগ্রাম), ওয়াসিকা আয়শা খান (চট্টগ্রাম) আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক, ডরথি তঞ্চঙ্গা (রাঙামাটি), সানজিদা খানম (ঢাকা) আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন, নাছিমা জামান ববি (রংপুর)। কানন আরা বেগমের নামটা ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের থেকে বিবেচনা করা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রী পার্টির।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘‘মনোনয়ন সবাই চাইতে পারে। আওয়ামী লীগে শিল্পাঙ্গনের মানুষের বিচরণ বাড়লেও চূড়ান্ত বিবেচনায় মাঠে কে ছিলেন, ত্যাগী কে এসব বিবেচনায় নিয়েই প্রার্থী নির্বাচন করা হয়। চাইলেই তো মনোনয়ন দিয়ে দেওয়া হবে না।’