• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সাহরি-ইফতারে কী খাবেন, কী খাবেন না

প্রকাশ:  ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১৫:৪২ | আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১৮:১২
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

রমজান মাসে খাদ্যাভ্যাসে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। এ সময় ভাজা-পোড়া খাওয়া স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়। খাদ্যের অনিয়মে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু রোজা পালনের জন্য প্রয়োজন সঠিক ডায়েট নির্বাচন, শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শক্তি এবং অদম্য ইচ্ছা ও আনুগত্য। কিছু নিয়মনীতি ও পরামর্শ অনুসরণ করলে কষ্ট ছাড়াই রোজা পালন করা যায়।

রোজায় রকমারি খাবারের আয়োজন বেড়ে গেলেও স্বাস্থ্য উপযোগিতা মেনেই খাদ্য নির্বাচন করা দরকার।

ইফতারে কী খাবেন

একজন রোজাদার ইফতারে কী খাবেন তা নির্ভর করবে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের ওপর। পারতপক্ষে দোকানের তৈরি ইফতারি ও সাহরি না খাওয়াই ভালো। সুস্থ, স্বাস্থ্যবান রোজাদারের জন্য ইফতারিতে খেজুর বা খোরমা, ঘরের তৈরি বিশুদ্ধ শরবত, কচি শসা, পিয়াজু, বুট, ফরমালিন অথবা ক্যালসিয়াম কার্বাইডমুক্ত মৌসুমি ফল থাকা ভালো। কারণ ফলে ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়। ফল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং সহজে তা হজম হয়। রুচি অনুযায়ী বাসায় রান্না করা নুডলসও খেতে পারেন। রুচি পরিবর্তনের জন্য দু-একটা জিলাপি খেতে পারেন। তা ছাড়া গ্রীষ্মকালীন রমজানে পরিমাণমতো বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। এশা ও তারাবির নামাজের পর অভ্যাস অনুযায়ী পরিমাণ মতো ভাত, মাছ অথবা মুরগির মাংস, ডাল ও সবজি খাবেন।

ইফতারে কী খাবেন না

রমজান মাস এলে বিকালবেলা থেকেই ইফতারের জন্য নানারকম খাবার তৈরি ও বিক্রির হিড়িক পড়ে। হরেক রকম ইফতারির পসরা সাজিয়ে দোকানিরা রাস্তার ধারে, ফুটপাথ, অলিতে-গলিতে, হাটে-বাজারে সাজিয়ে রাখেন। এসব ইফতারির মধ্যে রয়েছে ছোলা, মুড়ি, পিয়াজু, বেগুনি, ডালবড়া, সবজিবড়া, আলুর চপ, খোলা খেজুর, হালিম, জালি কাবাব, জিলাপি, বুন্দিয়া ইত্যাদি। আরও রয়েছে বিভিন্ন ফল ও ফলের রস, আখের গুড়ের শরবত, নানা রং মিশ্রিত বাহারি শরবত। এসব মুখরোচক খাবার স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয় না। অপরিষ্কারভাবে তৈরি খাবার দিয়ে ইফতারি করলে পেটের পীড়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সুস্থভাবে বাঁচার জন্য যত্রতত্র খোলা খাবার না খাওয়াই উচিত।

কী খাবেন সাহরিতে

রমজানে স্বাভাবিক নিয়ম পরিবর্তন করে সুবহে সাদিকের আগে ঘুম থেকে ওঠে খাওয়া-দাওয়া সেরে নিতে হয়। শরীরটাকে সুস্থ রাখার জন্য সাহরি খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, সাহরির খাবার মুখরোচক, সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া প্রয়োজন। ভাতের সঙ্গে মিশ্র সবজি, মাছ অথবা মাংস খাবেন। কলা, আম, গাজর, আপেল, বাদাম, ডাল এবং আঁশ সমৃদ্ধ খাবার রাখবেন খাদ্য তালিকায়। দীর্ঘ সময় অভুক্ত থাকার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে এবং পানিশূন্যতার কারণে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। তাই ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে অন্তত দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করবেন।

কী খাবেন না সাহরিতে

সাহরিতে অধিক তেল, ঝাল, চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া একদম উচিত নয়। অনেকেই মনে করেন যেহেতু সারা দিন না খেয়ে থাকতে হবে তাই সাহরির সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত বেশি বেশি খাবার খেতে হবে, তা মোটেই ঠিক নয়। কারণ চার-পাঁচ ঘণ্টা পার হলেই খাদ্যগুলো পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে গিয়ে হজম হয়ে যায়। তাই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি না খাওয়াই ভালো, বরং মাত্রাতিরিক্ত খেলে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি। চা, কফির মাত্রা কম হতে হবে। তা না হলে পানি শূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘুমের সমস্যা হতে পারে। সাহরিতে যেমন খুব বেশি খাওয়া উচিত না তেমনি না খেলেও শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। পরিহার করুন অতিরিক্ত লবণ যুক্ত খাবার। কারন এ জাতীয় খাবার খেলে দেহে পানিশূন্যতা তৈরি হয়।

ইফতার ও সাহরি নিয়ে কিছু টিপস

ইফতারে বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ এবং সহজে ও তাড়াতাড়ি হজম হয় এমন খাদ্য গ্রহণ করুন। ভাজা-পোড়া ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাদ্য বুক জ্বালাপোড়া এবং বদহজমের সমস্যা তৈরি করে। তাই এগুলো বর্জন করুন। রান্নার সময় মুরগি ও হাঁসের মাংসে ডালডার পরিবর্তে সয়াবিন তেল ব্যবহার করুন। তবে যতটা সম্ভব পরিমাণ কম করে ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত লবণ ও লবণাক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। কারণ এসব রোজার সময় পানির পিপাসা বৃদ্ধি করে। যাদের চা, কফি, সিগারেট, মদ প্রভৃতি বাজে আসক্তি আছে তারা এগুলোকে কমিয়ে আনতে চেষ্টা করুন। হঠাৎ এগুলো ছেড়ে দিলে মাথাব্যথা, রোষ প্রবণতা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

ঘুমানোর আগে ও সাহরির পরে অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করতে ভুলবেন না। রোজা রাখা অবস্থায় সকালে ব্যায়াম না করে ইফতারের পর ব্যায়াম করা উচিত। খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুতে ভুলবেন না। এ সময়ে হাঁচি, কাশির মতো ছোঁয়াচে রোগ বেশি দেখা যায়, তাই যারা এতে আক্রান্ত, তাদের কাছ থেকে সাবধান থাকা উচিত। দিনে গরমের সময়ে ঠাণ্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা উচিত। সম্ভব হলে শারীরিক পরিশ্রম কম করুন। দৈনিক কাজকর্ম এমনভাবে ঠিক করুন, যেন বেশ ভালোভাবে ঘুমানো যায়।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এনজে

রমজান,ইফতার,সাহরি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close