• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

লক্ষ্মীপূজা ও প্রবারণা পূর্ণিমা আজ

প্রকাশ:  ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:২১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান লক্ষ্মীপূজা ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান প্রবারণা পূর্ণিমা শনিবার (২৮ অক্টোবর)। শারদীয় দুর্গোৎসব-পরবর্তী পূর্ণিমা তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা লক্ষ্মীদেবীর পূজা করে থাকেন।

দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পরের পূর্ণিমার রাতে এ পূজার আয়োজন করা হয়। এ পূর্ণিমার রাতকে কোজাগরী পূর্ণিমাও বলা হয়।

হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, ভগবান বিষ্ণুর স্ত্রী লক্ষ্মী হলেন সম্পদ, সৌভাগ্য, শক্তি, বিলাসিতা, সৌন্দর্য, উর্বরতা এবং মঙ্গলময়তার দেবী। তিনি প্রকৃতির সুন্দর এবং দানশীল দিকের প্রতিনিধিত্ব করেন। লক্ষ্মীর বাহক পেঁচা। শিকারী ও নিশাচর পাখিটিকে ঐতিহ্যগতভাবে জ্ঞানী বলে বর্ণনা করা হয়।

যারা তার অনুগ্রহের যোগ্য তাদের শক্তি, আনন্দ এবং সমৃদ্ধি দেন তিনি (লক্ষ্মী)। তার আশীর্বাদ পেতে, ভক্তকে অবশ্যই জীবনের আইনকে সম্মান করতে হবে ও অস্তিত্বের বিস্ময়কর প্রশংসা করতে হবে।

ঐতিহ্যগতভাবে হিন্দু নারীরা এ উপলক্ষে উপবাস পালন করেন ও বাড়ির মেঝেতে লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ ও সন্ধ্যায় আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। তারা স্নান সেরে নতুন বা পরিষ্কার কাপড় পরে ঘরে বসে লক্ষ্মীর পূজা করেন।

ভক্তদের বিশ্বাস লক্ষীদেবী দর্শনে সন্তুষ্ট হলে পরিবারে আর্থিক সমস্যা হবে না ও সেখানে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপে পাশাপাশি বাড়িতে পূজা করবেন। দেবী লক্ষ্মীর পূজার পর, মন্দির ও বাড়িতে অঞ্জলি দেওয়া হবে ও প্রসাদ বিতরণ করা হবে।

অন্যদিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। ‘প্রবারণা' শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। ব্যাপক অর্থে প্রবারণা বলতে অসত্য ও অকুশল কর্মকে বর্জন করে সত্য ও কুশল কর্মকে বরণ করা। প্রবারণা পূর্ণিমার অপর নাম ‘আশ্বিনী পূর্ণিমা'।

প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও, এই পূর্ণিমা তিথি সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর কাছে তাৎপর্যপূর্ণ। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই তিন মাস বর্ষাব্রত পালন করেন।

এই তিন মাস তারা বিহারে অবস্থান করেন। যেহেতু একসঙ্গে বসবাস করতে গেলে পরস্পরের মধ্যে ভুলভ্রান্তি হওয়া স্বাভাবিক, সেহেতু ভিক্ষুদের মধ্যেও ভুলভ্রান্তি হতে পারে। তাই বর্ষাব্রত পালন শেষে ভিক্ষুরা আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথিতে প্রবারণা করেন। অর্থাৎ এই দিনে ভিক্ষুরা পরস্পরের কাছে তাদের পূর্বকৃত ভুলভ্রান্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, যার মাধ্যমে বুদ্ধের শাসনের উৎকর্ষ সাধিত হয় এবং ভিক্ষুসংঘের কল্যাণ সাধিত হয়।

ভিক্ষুসংঘের বর্ষাবাস পরিসমাপ্তির এই পবিত্র দিনকে কেন্দ্র করেই প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করা হয়। প্রবারণা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য একটি আবশ্যক বিধিবদ্ধ নিয়ম।

প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে পরবর্তী এক মাস অর্থাৎ কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত কঠিন চীবর দান সম্পন্ন হয়ে থাকে। বর্ষাবাস সমাপ্তকারী ভিক্ষুরা কঠিন চীবর গ্রহণ করেন। প্রবারণা পূর্ণিমার পবিত্র দিনে বৌদ্ধ উপাসক-উপাসিকারা পরিষ্কার পোশাকে বৌদ্ধ বিহারে সমবেত হয়ে বুদ্ধপূজা করেন, ভিক্ষুদের আহার্য দান করেন, পঞ্চশীল, অষ্টশীল গ্রহণ করেন এবং বিকালে ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়।

এই পবিত্র দিনের আকর্ষণীয় একটি দিক হলো সন্ধ্যায় ফানুস ওড়ানোর উৎসব। সর্বস্তরের মানুষ ফানুস ওড়ানো উপভোগ করে। ফানুস মূলত ওড়ানো হয় বুদ্ধের কেশ ধাতুর প্রতি পূজা ও সম্মান প্রদর্শনার্থে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

লক্ষ্মীপূজা,প্রবারণা পূর্ণিমা,পূজা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close