বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
দুই হারের পর প্রথম জয় পেলো মিনিস্টার ঢাকা
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) টানা দুই হারের পর ক্যারিবীয় তারকা আন্দ্রে রাসেলের অলরাউন্ড নৈপূন্যে প্রথম জয় পেয়েছে মিনিস্টার ঢাকা। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।
দুপুরে মিরপুর শেরে বাংলায় টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে বরিশাল। নাজমুল হোসেন শান্ত আর সৈকত আলির উদ্বোধনী জুটিতে ২১ রান উঠেছে ঠিকই, কিন্তু এতে শান্তর তেমন কোনো অবদান ছিলো না। যার অবদান ছিলো সেই সৈকতও বার দুয়েক জীবন পেয়েছেন। তবে এমন ভাগ্য বেশিক্ষণ সহায় ছিলো না বরিশালের। ২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি।
সম্পর্কিত খবর
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে শুভাগত হোমকে তুলে মারতে গিয়ে লংঅফে নাইম শেখের ক্যাচ হন শান্ত (৫)। পরের ওভারে অভিষিক্ত হাসান মুরাদের শিকার হন অস্বস্তিতে থাকা সৈকত (১৮ বলে ১৫)। তিনিও লংঅফে ক্যাচ হন ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে।
তার পরের ওভারে আরো এক উইকেট হারায় বরিশাল। এবার আন্দ্রে রাসেল শূন্য রানে এলবিডব্লিউ করেন তৌহিদ হৃদয়কে। ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে বরিশাল। এমন বিপদে হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব আল হাসান আর ক্রিস গেইল। চতুর্থ উইকেটে ৩৫ বলে ৩৭ রানের জুটি গড়েন তারা।
সাকিব খেলছিলেন দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। অবশেষে ১২তম ওভারে এসে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে দারুণ এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান রুবেল হোসেন। ১৯ বলে ২ বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় সাকিব করেন ২৩। এরপর চাপ বাড়িয়ে ফেরেন নুরুল হাসান সোহান। মাহমুদউল্লাহকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ হন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার (১)।
ষষ্ঠ উইকেটে আরেকটি জুটি গড়েন গেইল। এবার স্বদেশি ডোয়াইন ব্রাভোকে নিয়ে ১৯ বলে ৩৩ রান যোগ করেন তিনি। ১৬তম ওভারে গেইলকে থামান ইসুরু উদানা। বলের গতি বুঝতে না পেরে স্লগ করে শর্ট থার্ড ম্যানে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব। ৩০ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৩৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ওই ওভারেই জিয়াউর রহমানকে (১) তুলে নেন উদানা।
একশর আগে (৯৬ রানে) ৭ উইকেট হারায় ফরচুন বরিশাল। সেখান থেকে দলকে লড়াকু পুঁজি পর্যন্ত নিয়ে যান ডোয়াইন ব্রাভো। ২৬ বলে ৩ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডার।
১৩০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা মোটেও আশাব্যঞ্জক ছিলো না ঢাকার। ইনিংসের ১৭ বলের মধ্যে দলীয় ১০ রানের মাথায় ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। একে একে সাজঘরে ফিরে যান তামিম ইকবাল (০), নাইম শেখ (৫), জহুরুল অমি (০) ও মোহাম্মদ শেহজাদ (৪)।
তবে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ঘুরে দাঁড়ায় তারা। নিজের প্রথম দুই ওভারে দুই উইকেট বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলাম ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বিলিয়ে দেন ১৮ রান। সেখান থেকেই পঞ্চম উইকেটে ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ পেয়ে যান মাহমুদউল্লাহ ও শুভাগত হোম। দেশের ক্রিকেটের এ দুই অভিজ্ঞ তারকার জুটিতে আসে ১০.২ ওভারে ৬৯ রান। দু’জনের মধ্যে শুভাগতই ছিলেন বেশি সাবলীল।
ইনিংসের ১৪তম ওভারে ডোয়াইন ব্রাভোর স্লোয়ারে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে ২৫ বলে ২৯ রান করেন শুভাগত। তখন জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল ঢাকা। বাকি কাজ সারতে কোনো সমস্যাই হয়নি সাত নম্বরে নামা আন্দ্রে রাসেলের। একপ্রান্ত ধরে রেখে মাহমুদউল্লাহও খেলেন অধিনায়কোচিত ইনিংস।
শেষ ৬ ওভারে যখন প্রয়োজন ছিলো ৪৭ রান, তখন আলঝারি জোসেফের বোলিংয়ে তিন চার ও এক ছয়ের মারে ১৯ রান নিয়ে নেন রাসেল ও রিয়াদ। এরপর তাইজুলের করা ১৭তম ওভারের শেষ তিন ৪, ৪ ও ৬ হাঁকিয়ে সমীকরণ নেমে আসে ১৮ বলে ৭ রানে। সাকিবের করা পরের ওভারে প্রথম বলেই ছক্কা মেরে দুই দলের স্কোর সমান করেন রিয়াদ। তবে পরের বলেই আউট হয়ে যান ৪৭ বলে ৪৭ রান করা ঢাকার অধিনায়ক।
তবে শেষপর্যন্ত অপরাজিত থাকেন রাসেল। তার ব্যাট থেকে আসে তিন চার ও দুই ছয়ের মারে ৩১ রানের ইনিংস। ম্যাচসেরার পুরস্কার অবশ্য পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি বল হাতেও নিয়েছিলেন ১টি উইকেট।
পূর্বপশ্চিমবিডি/অ-ভি