• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

উইজডেনের বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে ভারতের ৭, অস্ট্রেলিয়ার ২

প্রকাশ:  ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:৪৭
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

২০২৩ সাল শুধু ওয়ানডে বিশ্বকাপের বছরই ছিল না, ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ওয়ানডের বছরও ছিল এটি। অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে হওয়া আসরটিকে কেন্দ্র করে বছরের শুরু থেকেই ওয়ানডে খেলেছে দলগুলো। সব মিলিয়ে এ বছরে ৫০ ওভারের ম্যাচ হয়েছে ২১৮টি, যা সর্বোচ্চ তো বটেই, ২০০ ওয়ানডেরও প্রথম বছর।

রেকর্ড ওয়ানডের বছরে উইজডেন বর্ষসেরা যে দলটি তৈরি করেছে, তাতে ১১ জনের ৭ জনই ভারতীয়। বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গেলেও এর আগপর্যন্ত টানা ১০ ম্যাচে অপরাজিত ছিল রোহিত শর্মার দল। জিতেছে এশিয়া কাপ এবং ছয়টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের পাঁচটিই। বর্ষসেরা দলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুজন জায়গা পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে। আর নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার আছেন একজন করে। অর্থাৎ বছরজুড়ে ওয়ানডে খেলা ২২ দলের ১৮টিরই কেউ নেই বর্ষসেরা দলে।

ক্রিকেটের বাইবেলখ্যাত উইজডেন তাদের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের শেষ দিনে বর্ষসেরা ওয়ানডে দল ঘোষণা করেছে। এখানে খেলোয়াড় চূড়ান্ত হয়েছে উইজডেনের সম্পাদকীয় বিভাগে কর্মরতদের ভোটে। দলটির অধিনায়ক করা হয়েছে রোহিত শর্মাকে।

রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), ভারত

ম্যাচ: ২৭, রান: ১২৫৫, গড়: ৫২.২৯

পুরো বছরে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন ভারতের শুবমান গিল। তবে তাঁকে হটিয়ে উইজডেনের বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে ওপেনিংয়ে ঢুকেছেন রোহিত শর্মা। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে আক্রমণাত্মক ধারার যে সূচনা তিনি করে দিয়ে গেছেন বিশ্বকাপজুড়ে, সেটি তাঁকে এগিয়ে দিয়েছে। দলটির অধিনায়কও রোহিতই।

ট্রাভিস হেড, অস্ট্রেলিয়া

ম্যাচ: ১৩, রান: ৫৭০, গড়: ৫১.৮১

খুব বেশি ম্যাচ খেলেননি। তবে পুরো বছরে অস্ট্রেলিয়ার ২২ ওয়ানডের ১৩টিতে খেলেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষগুলো রাঙিয়েছেন। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ম্যাচসেরা হওয়া হেডকে চোটের কারণে বিশ্বকাপের শুরুতে পায়নি অস্ট্রেলিয়া। মাঝপথে দলে যোগ দিয়ে প্রথম ম্যাচেই খেলেন তিন অঙ্কের ইনিংস। এরপর সেমিফাইনাল এবং ফাইনালেও খেলেন ম্যাচ জেতানো ইনিংস।

বিরাট কোহলি, ভারত ম্যাচ: ২৭, রান: ১৩৭৭, গড়: ৭২.৪৭

বর্ষসেরার দলে জায়গা পাওয়া ১১ জনের মধ্যে মাত্র ২ জন সবার ভোট পেয়েছেন। তাঁদের একজন বিরাট কোহলি। ২০২৩ সালে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান, শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯ শতকের রেকর্ড ভেঙে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৫০ শতকের মাইলফলক ছুঁয়েছেন এই বছর। বিশ্বকাপেও ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, যা এক আসরে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডও।

ড্যারিল মিচেল, নিউজিল্যান্ড ম্যাচ: ২৬, রান: ১২০৪, গড়: ৫২.৩৪

বিশ্বকাপে ভারত ছিল দুর্দম্য, সেই দলটির বিপক্ষেই দুই ম্যাচে শতক করেছেন নিউজিল্যান্ডের ড্যারিল মিচেল। বছরজুড়ে ৫টি শতক করা এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান বল হাতে উইকেটও নিয়েছেন ৫টি।

আইনরিখ ক্লাসেন, (উইকেটকিপার), দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ: ২৪, রান: ৯২৭, গড়: ৪৬.৩৫

ব্যাট হাতে বিস্ফোরক ইনিংস দিয়ে বছরজুড়ে আলোচিত ছিলেন আইনরিখ ক্লাসেন। দক্ষিণ আফ্রিকার এই ক্রিকেটার কুইন্টন ডি ককের অবর্তমানে উইকেটকিপিংও করেছেন। যে কারণে উইজডেনের বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্লাসেনই জায়গা করে নিয়েছেন।

গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ: ১১, রান: ৪১৩, গড়: ৫১.৬২

বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা একটি ইনিংস খেলেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। পায়ে ক্র্যাম্প করার পর এক পায়ে ভর করে অপরাজিত দ্বিশতক করে প্রায় একাই ম্যাচ জিতিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়াকে। এ ছাড়া বিশ্বকাপেই সবচেয়ে কম বলে (৪০) শতকের রেকর্ড গড়েন।

রবীন্দ্র জাদেজা, ভারত

ম্যাচ: ২৬, উইকেট: ৩১, রান: ৩০৯

বল হাতে তো বটেই, দরকারে ব্যাট হাতেও ভারতের জন্য বছরের অন্যতম ভরসা ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিয়েছেন ৫ উইকেট, আবার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ছোট কিন্তু কার্যকর ইনিংসে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

মোহাম্মদ শামি, ভারত

ম্যাচ: ১৯, উইকেট: ৪৩, ইকোনমি: ৫.৩২

বিরাট কোহলির পর দ্বিতীয় খেলোয়াড়, যিনি সর্বসম্মতিক্রমে বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে ঢুকেছেন। বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম পছন্দের একাদশে ছিলেন না তিনি। হার্দিক পান্ডিয়া চোটে ছিটকে যাওয়ার পর দলে ঢুকেই নেন ৫ উইকেট। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটসহ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ২৪ উইকেট নেন শামি।

যশপ্রীত বুমরা, ভারত

ম্যাচ: ১৭, উইকেট: ২৮, ইকোনমি: ৪.৪০

নতুন বলে দুর্দান্ত, মাঝের বোলিংয়ে উইকেট এনে দেওয়া আর ডেথ বোলিংয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা—একজন পূর্ণাঙ্গ বোলারের সব উপাদানই আছে যশপ্রীত বুমরার মধ্যে। ২০২৩ সালে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, নিজের সামর্থ্যের প্রমাণও দেখিয়ে গেছেন।

কুলদীপ যাদব, ভারত

ম্যাচ: ৩০, উইকেট: ৪৯, ইকোনমি: ৪.৬১

ওয়ানডেতে মাঝের ওভারে ব্যাটিং দল ঝুঁকিহীন খেলে থাকে। ভারতের জন্য বোলিংয়ে এই সময়টা কার্যকর করে তুলেছেন কুলদীপ যাদব। রান আটকেছেন, উইকেটও নিয়েছেন।

মোহাম্মদ সিরাজ, ভারত

ম্যাচ: ২৫, উইকেট: ৪৪, ইকোনমি: ৫.২৮

যখন ছন্দে থাকেন, যেকোনো ব্যাটিং লাইনআপের জন্য বিপজ্জনক। এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২১ রানে ৬ উইকেট যার বড় প্রমাণ। একই দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপেও নেন ১৬ রানে ৩ উইকেট।

উইজডেনের ২০২৩ বর্ষসেরা ওয়ানডে দল রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), ট্রাভিস হেড, বিরাট কোহলি, ড্যারিল মিচেল, আইনরিখ ক্লাসেন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ শামি, যশপ্রীত বুমরা, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ।

ক্রিকেট,বর্ষসেরা,ক্রিকেট পরিসংখ্যান,ওয়ানডে ক্রিকেট
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close