• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

এশিয়ান কাপ মাতানোর অপেক্ষায় ইউরোপের যে তারকারা

প্রকাশ:  ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:১৮
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

১২ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে এশিয়ার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই এএফসি এশিয়ান কাপ। এশিয়ার সেরা দেশগুলো শিরোপা লড়াইয়ের এই প্রতিযোগিতায় একে অপরের মুখোমুখি হবে। এই টুর্নামেন্টে খেলতে ইউরোপের বিভিন্ন লিগের খেলোয়াড়েরা এরই মধ্যে জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।

ইউরোপে খেলা একাধিক তারকা খেলোয়াড়ও নিজ দেশকে এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট এনে দিতে যোগ দিয়েছেন নিজ জাতীয় দলে। যাঁদের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সন হিউং-মিন, লি কাং-ইন, কিম মিন-জা ও কিম জি-সো, জাপানের কাওরু মিতোমা, তাকেফুসো কুবো ও ওয়াতারু এন্দো, ইরানের সামান ঘোদ্দোস এবং ইন্দোনেশিয়ার জাস্টিন হাবনার উল্লেখযোগ্য।

সম্পর্কিত খবর

    দক্ষিণ কোরিয়া নিজেদের তৃতীয় মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের খোঁজে আছে ৬৩ বছর ধরে। এবারও সেই শিরোপা–খরা ঘোচানোর জন্য মাঠে নামবে তারা। দক্ষিণ কোরিয়ার এই দলটিতে আছে ইউরোপ মাতানো একাধিক তারকা খেলোয়াড়, যাঁদের মাঝে সন হিউং-মিন সম্ভবত সবচেয়ে বড় তারকা।

    লম্বা সময় ধরে ইংলিশ ক্লাব টটেনহামের আক্রমণভাগে বড় ভরসা হয়ে আছেন সন। একক নৈপুণ্যে স্পারদের প্রচুর ম্যাচও জিতিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ কোরিয়াও এবার তাকিয়ে থাকবে তাঁর দিকে। চলতি মৌসুমে টটেনহামের হয়ে ২১ ম্যাচ খেলে করেছেন ১২ গোল, সহায়তা করেছেন আরও ৫ গোলে।

    দলবদলে ওয়াতারো এন্দোকে কেনায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল লিভারপুলকে। কিন্তু সেই এন্দো মাত্র ছয় মাসের মধ্যে লিভারপুলের আস্থাভাজন খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন। স্টুটগার্ট থেকে এসে লিভারপুলের মিডফিল্ডে দারুণ ভারসাম্য এনেছেন এন্দো। বিশেষ করে আক্রমণভাগের সঙ্গে সংযোগ তৈরিতে এন্দো নিজের মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন। এমনকি প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষে থাকা লিভারপুল গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এন্দোকে হারানোয় সমর্থকেরা হতাশাও প্রকাশ করেছেন। তবে লিভারপুল হতাশ হলেও এন্দোর উপস্থিতি বাড়তি শক্তি দেবে জাপানকে। এখন শুধু অধিনায়ক এন্দোর ছন্দ ধরে রাখার অপেক্ষা।

    ২১ ডিসেম্বর ব্রাইটনের হয়ে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলার সময়ই চোটে পড়েন কাউরো মিতোমা। যে কারণে জাপানের এশিয়ান কাপের স্কোয়াডে তাঁর থাকা নিয়ে ছিল সংশয়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে নিয়েই দল ঘোষণা করে জাপান। ব্রাইটনের হয়ে অবশ্য যখনই মাঠে নেমেছেন, আলো ছড়িয়েছেন মিতোমা। চোট কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত ফিট হয়ে মিতোমা মাঠে নামতে পারলে সেটা জাপানের জন্য বড় প্রাপ্তিই হবে। চলতি মৌসুমে ৩ গোল করার পাশাপাশি ৬ গোলে সহায়তা করেছেন এই লেফট উইঙ্গার।

    বর্তমানে আর্সেনালের হয়ে খুব একটা নিয়মিত নন তাকেহিরো তুমিয়াসমো। জাপানি এ ডিফেন্ডার চলতি মৌসুমে সব মিলিয়ে খেলেছেন ২০ ম্যাচ। মিকেল আরতেতার দলে খুব একটা সুযোগ না পেলেও বড় দলের ডাগআউটে থাকতে পারাটা তুমিয়াসোর জন্য রড় অভিজ্ঞতা। এ ছাড়া ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে জার্মানি এবং স্পেনকে হারানো ম্যাচে মাঠেও নেমেছিলেন তুমিয়াসো। ২৫ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডারের কাছ থেকে জাপানের প্রত্যাশা এবার আরও বেশি। দলের রক্ষণ দুর্গ সামলানোর বড় দায়িত্বই থাকবে তাঁর ওপর।

    গত দুই মৌসুম ধরেই প্রিমিয়ার লিগে সংগ্রাম করেছে উলভস। কিন্তু হোয়াং হি-চান নিজেকে উজাড় করে দিয়ে চেষ্টা করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার এই ফরোয়ার্ড চলতি মৌসুমে ২০ ম্যাচে করেছেন ১০ গোল, সঙ্গে আছে তিনটি সহায়তাও। লিগে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় তাঁর অবস্থান এখন ছয় নম্বরে। এমন ছন্দে থাকা হি-চানকে পেতে চাইবে দক্ষিণ কোরিয়াও। তিনি জ্বলে উঠলে দলটির কাজও অনেক সহজ হয়ে যাবে।

    এবারের এশিয়ান কাপে ইরান দলেও আছে প্রিমিয়ার লিগের প্রতিনিধি। ব্রাইটনের হয়ে চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৫ ম্যাচ খেলেছেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সামান ঘোদোস। বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক লিগে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়েই তিনি যোগ দিয়েছেন ইরান দলে। ৩০ বছর বয়সী সামানের কাছে তাই ইরানের প্রত্যাশাও থাকবে অনেক।

    উলভসে খেলা এশিয়ার আরেক তারকা জাস্টিন হাবনার। তবে ২০ বছর বয়সী এই সেন্টার ব্যাকের এখনো উলভসের মূল দলে অভিষেক হয়নি। ইন্দোনেশিয়ার হয়ে এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচ খেলেছেন তিনি। বড় ম্যাচ বা বড় আসরে খেলার অভিজ্ঞতা না থাকলেও তাঁর প্রতিভার ওপর বাজি ধরতে পারে ইন্দোনেশিয়া দল। আর সুযোগ পেলে হাবনারও হয়তো চাইবেন জ্বলে উঠতে।

    বয়স মাত্র ১৯। কে লিগ থেকে গত বছরের জুলাইয়ে এসেছেন ব্রেন্টফোর্ডে। তবে ইংলিশ ক্লাবটির হয়ে এখনো অভিষেক হয়নি তাঁর। অবশ্য জাতীয় দলেও এখনো কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি জি-সোর। ব্রেন্টফোর্ডে সুযোগ না পেলেও বড় দলের সঙ্গে থাকার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই এশিয়ান কাপে বাড়তি অনুপ্রেরণা হবে কিম জি-সোর। সুযোগ পেলে জি-সো নিজেও হয়তো চাইবেন বড় মঞ্চে ডানা মেলতে।

    গত বছর এশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হয়েছিল কিম মিন-জে। ১৯৯০ সালের পর নাপোলিকে লিগ শিরোপা উদ্ধারেও বড় ভূমিকা ছিল কিমের। ২৭ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডারকে সবাই চেনে ‘দ্য বিস্ট’ নামে। গত দলবদলে তিনি যোগ দিয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখে। বায়ার্নের হয়ে এ মৌসুমে খেলেছেন ২২ ম্যাচ। ২০১৭ সালে অভিষেক হওয়ার পর জাতীয় দলের হয়েও খেলেছেন ৫৬ ম্যাচ।

    দক্ষিণ কোরিয়াকে এবার মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফি জিততে হলে লিকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। সনের সঙ্গে দারুণ একটি জুটিও গড়ে তুলতে হবে এই ফরোয়ার্ডকে। বর্তমানে পিসএজিতে খেলা লি চলতি মৌসুমে ১৬ ম্যাচে ৩ গোল ও ২টি সহায়তা করেছেন। রিয়াল মায়োর্কা থেকে পিএসজিতে আসা লি এশিয়ার বর্ষসেরা তরুণ খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছেন। এখন তিনি এশিয়ান কাপে নিজেকে মেলে ধরতে পারেন কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।

    লা লিগার ক্লাব রিয়াল সোসিয়েদাদের হয়ে খেলেন তাকেফুসো কুবো। ২২ বছর বয়সী এই রাইট উইঙ্গার এই মৌসুমে রিয়াল সোসিয়েদাদের হয়ে লা লিগায় ১৮ ম্যাচে করেছেন ৬ গোল। আছে আরও ৩ গোলে সহায়তা। বয়সভিত্তিক ফুটবলে তিনি খেলেছেন বার্সেলোনায়। এরপর ২০১৯-২২ সাল পর্যন্ত ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদে। যদিও পুরোটা সময় ধারেই খেলেছেন এই জাপানি। ২০২২ সাল থেকে আছেন সোসিয়েদাদে।

    ইরান ফুটবল,দক্ষিণ কোরিয়া ফুটবল দল,জাপান ফুটবল দল
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close