• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

দুই ছেলের প্রাণ বাঁচাতে বাবার ৩৬ ব্যাগ রক্তদান

প্রকাশ:  ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:২১
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত দুই সন্তান জহুরুল (২১) ও আমিরুল (১৭) কে বাঁচাতে নিজের শরীর থেকে ৩৬ ব্যাগ রক্ত দিয়েছেন বাবা লাল মিয়া। এভাবেই চলছে ২১ বছর ধরে। রক্ত দিতে দিতে তার শরীরও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

লাল মিয়ার বাড়ি ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামে।

বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের মেঝেতে দুই ভাই শুয়ে আছেন। তাদের মা ঘরের সামনে বসে কাঁথা সেলাই করছেন। বাবা বাড়ির সামনে রাইস মিলে কাজ করছেন।

মা মোমেনা বেগম জানান, বসতভিটার ছয় শতক জমিই তাদের সম্বল। ছেলেদের বয়স যখন তিন থেকে চার বছর, তখন থেকেই দুই ছেলেরই প্রায়ই জ্বর হতো। সঙ্গে সঙ্গে তাদের শরীরে রক্তের স্বল্পতাও দেখা দেয়।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, দুই ছেলেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। তখন থেকে তাদের চিকিৎসা করতে করতে প্রায় সব শেষ করে ফেলেছেন। জহুরুল শাহপুর ছোট ঘিঘাটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় শরীর বেশি খারাপ হওয়াতে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। তার মতো আমিরুলও পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।

লাল মিয়া বলেন, তার কোনো জমি নেই। সারা বছর অভাবের মধ্যে থেকে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটে তাদের। এদিকে পরিবারের সদস্যদের খাবারের যোগান দিতে নিজের অসুস্থশরীরে রাইস মিলে কঠোর পরিশ্রম করেন। ২০১১ সালে ছোট ছেলে আমিরুলের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে খুলনার ইসলামিয়া হাসপাতালে অপারেশন করা হয়। ঋণ আর মানুষের দেওয়া প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে ছোট ছেলের অপারেশন করা হয়েছিলো।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে বড় ছেলে জহুরুলকে যশোর আধুনিক হাসপাতালের ডা. এসএম শহিদুল হক রাহাত চিকিৎসা দিচ্ছেন। লাল মিয়া বলেন, জহুরুলকে জরুরিভাবে অপারেশন করা প্রয়োজন। এ জন্য প্রায় দুই লাখ টাকা লাগবে। অপারেশন না করা পর্যন্ত প্রতি মাসেই রক্ত দিয়ে ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু তাদের কাছে একটি টাকাও নেই। কোথায় পাবেন এতো টাকা।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, মানুষ ভবিষ্যতে ভালো কিছুর আশা থাকে। কিন্তু আমার ভবিষ্যৎ কী?

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুস ছাত্তার জানান, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ। যা নিরাময়যোগ্য নয়।


পূর্বপশ্চিম/এএন

ঝিনাইদহ,রক্তদান,বাবা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close