• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

লাইসেন্সে বাতিলের জেরে বেনাপোলে আমদানি-রফতানি বন্ধ

প্রকাশ:  ০৫ মার্চ ২০২২, ১৫:০৩
বেনাপোল প্রতিনিধি

বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃক বন্দরের দুটি সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স বাতিলের প্রতিবাদ ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার সকাল থেকে আমদানি-রফতানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন।

এতে দুই দেশের বন্দর এলাকায় পচনশীল পণ্যসহ শত শত পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে।

গত ২ মার্চ ভারত থেকে বন্ড লাইসেন্সের (শুল্কমুক্ত) মাধ্যমে আমদানিকৃত ডেনিম ফেব্রিক্সের ট্রাকে বিশেষভাবে লুকিয়ে আনা প্রায় অর্ধকোটি টাকার শাড়ি, থ্রিপিচ, বাংলা মদ, ফেন্সিডিল, বিদেশি সিগারেট, ওষুধ, কারেন্ট জালসহ বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য আটক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার সাথে ভারতীয় ড্রাইভারের সরাসরি সহযোগিতা থাকলেও ট্রাকসহ ড্রাইভারকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আমদানিকৃত ডেনিম ফেব্রিক্সের আমদানিকারক ঢাকার অনন্ত ডেনিম টেকনোলজি লিমিটেড ও ফ্যাশান ফোরাম লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। এ ঘটনায় বুধবার বেনাপোলের শিমুল ট্রেডিং এজেন্সি ও আইডিএস গ্রুপ নামে দুইটি সিএন্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করেছে বেনাপোল কাস্টমস হাউস। পাশাপাশি সিএন্ডএফের কর্মচারীদের নামেও মামলা করা হয়১ বেনাপোল পোর্ট থানায়।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের আটক না করে সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স বাতিল ও কর্মচারীদের নামে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ৩ মার্চ সকালে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি এক যৌথ সভায় আমদানি-রফতানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। লাইন্সেস পুনর্বহাল ও মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত না করে সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ সদস্যের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করেছে কাস্টমস। মামলা প্রত্যাহার করা না হলে বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখায় পণ্য চালান গ্রহণের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, ভারতীয় এক শ্রেণির ট্রাকচালকরা অর্থের প্রলোভনে দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে বৈধ আমদানি পণ্যের সাথে চোরাচালানি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ পণ্য পাচার করে আসছে। এর আগে অসংখ্য ট্রাক অবৈধ মালামালসহ বেনাপোল কাস্টমস বিজিবির হাতে ধরাও পড়েছে। অপরদিকে পেট্রাপোল বিএসএফ ও পুলিশ ভারতীয় ট্রাটের মধ্য থেকে সোনা, ডলার, পাসপোর্ট, মোবাইল, রুপার গহণাসহ ট্রাকচালককে আটক করেছে। ভারতে ট্রাকচালক আটক হলেও বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভারতীয় কোন ট্রাক চালককে আটক না করে ছেড়ে দেয়। এখানে আমদানিকারক ও সংশ্লিস্ট সিএন্ডএফকে দায়ী করা হয়। অথচ তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। এমন ঘটনায় ইতোমধ্যে ১০টি সিএন্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এসব ঘটনায় বন্দর ব্যবহারকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখাসহ কাস্টমস ও বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল রশীদ মিয়া জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা ঘোষণায় বৈধ চালানের আড়ালে ফেনসিডিল, সিগারেট, ভারতীয় মদসহ বিভিন্ন চোরাচালান পণ্যসহ বন্দর থেকে ভারতীয় একটি ট্রাক আটক করা হয়। এ অভিযোগে দুটি সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করে শোকজ করা হয়েছে। অবৈধ পণ্য আমদানির অভিযোগে থানায় মামলাও করা হয়েছে। আমদানি-রফতানিসহ কার্যক্রম চলমান রাখতে সংশ্লিস্ট বন্দর ব্যবহারকারীদের সাথে আলোচনা করা হবে।

পূর্বপশ্চিম/এএইচ/এনএন

বেনাপোল,আমদানি

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close