• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর বরাদ্দে ইউএনওর ঘুষ দাবি

প্রকাশ:  ১০ মার্চ ২০২২, ১৩:১৬
বরগুনা প্রতিনিধি

অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস তৈরির তালিকায় নাম দিতে ২০ হাজার টাকা করে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাওসার হোসেনের বিরুদ্ধে।

৮ মার্চ জেলা প্রশাসকের কাছে মুক্তযোদ্ধাদের পক্ষে সাবেক কমান্ডার মোসলিম আলী হাওলাদার এ অভিযোগ করেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, দ্বিতীয় পর্যায়ে সারাদেশের ন্যায় তালতলী উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস তৈরির জন্য তালিকার চাহিদা চেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেয়। ওই চিঠির পর জেলা প্রশাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ২০ জানুয়ারি অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারের ঘরের তালিকা করে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

চিঠি পেয়ে ইউএনও মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ঘর প্রতি ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা দাবিকৃত ঘুষ দিতে রাজি হননি। এ কারণে গত ৩০ জানুয়ারি বীর নিবাসের তালিকার চাহিদা তৈরির সভা ডেকে অজ্ঞাত কারণে তা মুলতবি করেন ইউএনও।

ঘুষের টাকা না পেয়ে ইউএনও মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাসের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়নি বলে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের কাছে এসব অভিযোগ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি, বিদ্রুপ ও বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা ভবন সাজসজ্জা না করে ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও ইউএনওর বিরুদ্ধে অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধাদের।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ইউএনওর অসৌজন্যমূলক আচরনের কারণে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন অনুষ্ঠান বর্জন করেন তারা। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আজিজ আকন, মুক্তিযোদ্ধা ছাত্তার ফরাজী, হরিপদ সরকার, ইউনুস বিশ্বাসসহ একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপক্ষে নয় ইউএনও কাওসার হোসেন। তিনি উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি করেন। প্রায়ই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আখ্যায়িত করে অসম্মান করেন। জাতীয় কোনো দিবসে আমাদের ন্যূনতম সম্মানটুকুও দেন না। আমাদের বীর নিবাসের ঘর প্রতি ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।

তালতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মোসলেম আলী হাওলাদার বলেন, তালতলীর মুক্তিযোদ্ধারা ইউএনওর কাছে অসম্মানের পাত্রে পরিণত হয়েছে। ইউএনও মুক্তিযোদ্ধাদের অহরহ হয়রানি, ব্যঙ্গ ও বিদ্রুপ করে থাকেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে এমন আচারণের সুরহা না হওয়া পর্যন্ত আমরা ইউএনওর সকল কার্যক্রম বয়কট করেছি। এ বিষয়ে আমি সকল মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান তনু বলেন, যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন ইউএনও। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। উপজেলা প্রশাসনকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন।

ইউএনও মো. কাওসার হোসেন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের কথা অস্বীকার করে বলেন, ডিপিপিতে তালতলী উপজেলায় বীর নিবাসের ঘর বরাদ্দ নেই। তাই তালিকা করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ১০ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিতে আমার কাছে আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধারা। আমি ওই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান জানান, আমি এখনো কোনো লিখত অভিযোগ হাতে পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পূর্বপশ্চিম/আরএইচ/এনএন

ঘুষ,ইউএনও,মুক্তিযোদ্ধা,বরগুনা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close