• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মনিরামপুরে গরমের শুরুতে তীব্র বিদ্যুৎ বিভ্রাট

প্রকাশ:  ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১৫:১৩
যশোর প্রতিনিধি

যশোরের মনিরামপুরে গরমের শুরুতে তীব্র বিদ্যুৎ বিভ্রাট (লোডশেডিং) শুরু হয়েছে। গত ৩-৪ দিন ধরে এ সমস্যা প্রকট ধারণ করেছে। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ থাকছে না রাত ১০ টা পর্যন্ত। কোনো কোনো এলাকায় থেমে থেমে বিদ্যুৎ আসলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। ফলে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বিদ্যুৎ না থাকায় পড়ালেখা নষ্ট হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের। বিপাকে পড়েছেন রোজা পালনকারীরাও।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাবি, হঠাৎ করে বিদ্যুতের উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিং শুরু হয়েছে। মনিরামপুরে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। সমস্যা সহনীয় হতে ২-৪ দিন সময় লাগবে।

জানা যায়, গত ৩-৪ দিন ধরে উপজেলার রাজগঞ্জ, খেদাপাড়া, রোহিতা, কাশিমনগর, ঢাকুরিয়া, হরিহরনগর, মনোহরপুর, নেহালপুর, বাকোশপোলসহ বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ থাকছে না। বেলা ডোবার পরই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে লুকোচুরি চলতে থাকে বিদ্যুতের। রাত ৮টার পর আবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। টানা দেড় থেকে দুঘন্টা বিরতি নিয়ে বিদ্যুৎ আসছে রাত ১০টার পর।

দিনের বেলায়ও একই অবস্থা। থেমে থেমে বিদ্যুৎ আশা যাওয়া করছে। চৈত্রের প্রখর গরমে বিদ্যুতের এ লুকোচুরিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক জনজীবন। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা লোডশেডিং দেখাগেছে উপজেলার খেদাপাড়া অঞ্চলে। সন্ধ্যায় ইফতারির সময় এ এলাকায় লোডশেডিং দেখা গেছে।

মনিরামপুরের সব এলাকায় লোডশেডিং একই সময়ে হচ্ছে না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। তবে সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সব এলাকায় থাকছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। পল্লিবিদ্যুৎ অফিসের তথ্যমতে মনিরামপুরে অঞ্চলভেদে লোডশেডিং থাকছে ৪-৬ ঘন্টা।

এদিকে সন্ধ্যার পর লোডশেডিং দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়ছেন রোজা পালনকারীরা। মাগরিব ও এশার নামাজের সময় বিদ্যুৎ না থাকায় নামাজ আদায়ে কষ্ট হচ্ছে মুসল্লিদের।

কদমবাড়িয়া গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী রনি হোসেন বলেন, পরীক্ষার আর দুমাস আছে। দিনের বেলায় ঠিকমত বিদ্যুৎ থাকছে না। সন্ধ্যায় পড়ার আসল সময়। তখন চলে যেয়ে রাত ১০টার পরে বিদ্যুৎ আসছে। এরমধ্যে দুই একবার বিদ্যুৎ আসে। বই নিয়ে বসার পরপরই চলে যায়।

মাহমুদকাটি গ্রামের রাসেল পারভেজ বলেন, রোজার প্রথম থেকে বিদ্যুতের সমস্যা শুরু হয়েছে। ইফতারির সময় চলে যাচ্ছে। মাঝে দিয়ে এসে এশার আযানের পর চলে যাচ্ছে। এরপর তারাবির নামাজ শেষ হলে বিদ্যুৎ আসছে।

টেংরামারী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র নিরব হোসেন বলে, আকাশে কোন মেঘ না, ঝড় না তারপরও কারেন্ট নিয়ে যাচ্ছে। স্কুল প্রাইভেট খোলা। সন্ধ্যায় পড়তে পারি না। এজন্য ক্লাসের পড়া করে দিতে পারছি না।

তবে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট তীব্র হলেও এ সমস্যা তেমন নেই মনিরামপুর উপজেলা শহরে। মাঝেমধ্যে কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ চলে গেলও এখানে সকাল সন্ধ্যা বিদ্যুতের সরবরাহ ভাল।

যশোর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মনোহর কুমার বিশ্বাস বলেন, লোডশেডিং সমস্যা নিয়ে বিপাকে আছি। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাস প্রেশার কমে যাওয়ায় অনেকগুলো জেনারেশন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মারাত্মকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। শুধু রাতে না এখন দিনের বেলায়ও লোডশেডিং শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন , মনিরামপুর কেশবপুর অঞ্চলে রাতের বেলায় বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় ২৫ মেগাওয়াট। সোমবার সন্ধ্যায় পেয়েছি তার অর্ধেক। মোটমিলে মনিরামপুরের মানুষ দিনরাতে ১৮-২০ ঘন্টা বিদ্যুৎ সেবা পাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, পায়রা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আনার জন্য সার্কিট চালু করার চেষ্টা চলছে। সেখানে নতুন লাইনের কাজ চলছে। যা দুই একদিনের মধ্যে চালু হবে। তখন এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতি হবে।

মনোহর বিশ্বাস বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি গ্যাস প্রেশার বাড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। দু একদিনের মধ্যে লোডশেডিং অবস্থার উন্নতি হতে পারে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এএইচ/জেএস

মনিরামপুর,যশোর,পল্লিবিদ্যুৎ,পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close