• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

চট্টগ্রামের সিএনজি পাম্পে পুনঃসংযোগে অনিয়ম: পেট্রোবাংলার তদন্ত কমিটি

প্রকাশ:  ১১ জুন ২০২২, ১১:৩১
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

পেট্রোবাংলা ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ৫ কোটি টাকার বিল বকেয়া থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামের একটি সিএনজি পাম্পকে পুনঃসংযোগ দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি করেছে পেট্রোবাংলা।

এদিকে সেই তদন্ত কমিটিকেও স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিচ্ছে না কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কয়েকজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে কর্ণফুলীর ইঞ্জিনিয়ার এণ্ড সার্ভিসেস বিভাগের জিএম সারোয়ার আলম, ডিজিএম অনুপম দত্ত আর বিপনন বিভাগের জিএম গৌতম চন্দ্র কুণ্ডুকে বাঁচাতে মরিয়া একটি মহল। এই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে জ্বালানী খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান প্রেট্রোবাংলা।

সম্পর্কিত খবর

    কেজিডিসিএল সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের দাবি, টানা ৯ মাসে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা বিল বাকি থাকায় ২০১৯ সালে চট্টগ্রামের মোহড়া এলাকার সামান্তা ফিলিং স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। দুই বছর পর ২০২১ সালে আদালতের নির্দেশে পুনঃসংযোগ দেওয়া হয় পাম্পটিকে। কিন্তু গ্যাস বিপনন নীতিমালা ২০১৪ অনুযায়ী দেড় মাসের বিল বকেয়া থাকলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। আর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া গ্রাহক এক বছরের মধ্যে সবগুলো শর্ত মেনে পুনঃসংযোগ নিতে ব্যর্থ হলে তার সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। পরবর্তীতে তিনি সংযোগ নিতে চাইলে নতুন গ্রাহক হিসেবে বিবেচিত হবেন। কিন্তু শামান্তা ফিলিং স্টেশনের সংযোগ দুই বছর বন্ধ থাকলেও তার সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করেনি কর্ণফুলী।

    এছাড়া পেট্রোবাংলার অধিনস্ত কোনো কোম্পানি গ্রাহকের মামলায় পরাজিত হলে তা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও স্ব স্ব কোম্পানির বোর্ডকে অবগত করানোর নির্দেশনা আছে জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের।

    কিন্তু শামান্তার কাছে মামলায় পরাজয়ের খবর বেমালুম চেপে গিয়ে তড়িঘড়ি করে পুনঃসংযোগ দিয়েছে কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কতিপয় কর্মকর্তা।

    পেট্রোবাংলা বলছে, নির্ধারিত সময়ের পর স্থায়ীভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বিপনন যন্ত্রাংশগুলো খুলে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার এণ্ড সার্ভিসেস বিভাগের জিএম সারোয়ার আলম ও ডিজিএম অনুপম দত্ত্বের। আর মামলার আপডেট পেট্রোবাংলা ও বোর্ডকে জানানোর দায়িত্ব ছিল বিপনন বিভাগের জিএম গৌতম চন্দ্র কুন্ডুর। কিন্তু এই তিনজনের কেউ তাদের দায়িত্ব পালন করেননি। বরং আদালতের কাধে ভর করে তড়িঘড়ি করে পুনঃসংযোগ দেয়া হয়েছে।

    গত ১১ মে ঘটনাটি তদন্তে পেট্রোবাংলার জিএম (কন্ট্রাক্ট) শাহনেওয়াজ পারভেজকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করেছে পেট্রোবাংলা। কর্ণফূলীর দুই কর্মকর্তা রইস উদ্দিন ও সুলতার আহমেদকে এতে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৫ কর্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও এক মাসেও তা দেয়নি তদন্ত কমিটি। অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত ওই তিন কর্মকর্তাকে বাঁচাতে তৎপর রয়েছে কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কতিপয় কর্মকর্তা। অভিযুক্ত এই তিন কর্মকর্তার মধ্যে সারোয়ার আলম একজন মন্ত্রীর ছেলের বাসায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মামলায় জেলও খেটেছেন।

    বক্তব্য জানতে ফোন করা হলে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রশাসন বিভাগের জিএম ফিরোজ খান।

    তবে সুশাসনের জন নাগরিক সুজনের চট্টগ্রাম জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, পেট্রোবাংলা আর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করার সাহস কর্ণফুলী কর্মকর্তারা কিভাবে পেলো সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা দরকার। এর সঙ্গে আরো বড় কোনো প্রভাবশালী মহলের হাত আছে কি না সে বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।

    পূর্বপশ্চিমবিডি/এনজে

    চট্টগ্রামের সিএনজি পাম্পে,পুনঃসংযোগে অনিয়ম,পেট্রোবাংলার তদন্ত কমিটি

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close