মেম্বারের বাড়িতে ফেনসিডিলের আসর, গ্লাসে ঢেলে দেন স্ত্রী
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য বাদশা মিয়ার বাড়িতেই ফেনসিডিলের বার। আবার সেই বারে ফেনসিডিল পরিবেশন করেন তারই স্ত্রী স্বপ্না বেগম। ইতিমধ্যে এরকম একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে সচেতন মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
অভিযুক্ত বাদশা মিয়া লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য। তিনি ওই ওয়ার্ডের মালগাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
সম্পর্কিত খবর
স্থানীয়রা জানান, ভারতীয় সীমান্তবর্তী মালগাড়া গ্রাম চোরাচালানের অন্যতম রুট হিসেবে পরিচিত। এ এলাকা দিয়ে সব থেকে বেশি পাচার হচ্ছে ভারতীয় ফেনসিডিল। সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসার সাথে জড়িত বাদশা মিয়া। ব্যবসা ঠিক রাখতে প্রশাসনিক সাপোর্টের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে গোড়ল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
জনপ্রতিনিধির লেবাসে চলছে তার মাদক ব্যবসা। খুচরা-পাইকারি দুই রকম ব্যবসাই রয়েছে বাদশা মিয়ার। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বড় চালান পাচার করে সোজা তার বাড়িতে পাঠান। সেখান থেকে সারা দেশে চলে যায় এসব মাদক। বাদশা মিয়া দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় স্থানীয় প্রশাসনকেও হাত করে ফেলেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
খুচরা বিক্রিতে লাভ বেশি সে কারনে নিজ বাড়িতেই ফেন্সিডিলের মিনি বার খুলেছেন বাদশা মিয়া। প্রতিদিন মাদকসেবীরা তার বাড়িতেই ভিড় জমান। হাতের কাছে নিরাপদ মাদক সেবনের ব্যবস্থা পেয়ে উঠতি স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-তরুণ ছুটছে ওই ফেনসিডিলের বারে। বাদশার স্ত্রী স্বপ্না বেগম নিজেই তার বাড়িতে চাহিদামত ফেনসিডিল পরিবেশন করেন, গ্লাসে ঢেলে দেন সমান ভাগে। ইউপি সদস্যের বাড়িতে মাদক সেবনে প্রশাসনের ঝামেলা না থাকায় মাদকসেবীদের কাছে নিরাপদ বার বাদশা মিয়ার বাড়ি।
ভিডিওতে দেখা যায়, ইউপি সদস্য বাদশার স্ত্রী স্বপ্না বেগম টাকা নিয়ে নিজেই পাশের রুম থেকে এনে টেবিলের গ্লাসে ফেনসিডিল পরিবেশন করছেন। পুরো বোতল নয়, বোতলের অর্ধেক বা এক চতুর্থাংশ ফেনসিডিল সেবন করারও ব্যবস্থা রয়েছে। যত টাকা, ততটুকুই ফেনসিডিল গ্লাসে পরিবেশন করা হয়।
এসব বিষয় অস্বীকার করে গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাদশা মিয়া বলেন, কার সঙ্গে কথা বলছ? আমাকে চেনো? কথাবার্তা ভালো করে বলবা।
আপনার বাসায় ফেনসিডিল বিক্রির বিষয়টি আপনি জানেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে জানি না বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। অনেককেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তবে ইউপি সদস্যের বাসায় ফেনসিডিল সেবনের সুব্যবস্থা রয়েছে এমন কোনো তথ্য আমাদের জানা নেই। এখন জানলাম, অবশ্যই দ্রুত অভিযান চালানো হবে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এনজে