• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

আউলিয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যানের ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়ম, ৯০ বস্তা চাল জব্দ

প্রকাশ:  ১৪ জুলাই ২০২২, ১৯:২৭
দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুর সদরের আউলিয়পুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়্রাম্যান মোস্তাফা কামাল প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়ম হওয়ায় ৯০বস্তা চাল জব্দ করেছে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশাসন। সুবিধাভোগীদের মাঝে চালগুলো বিতরণ না করে মজুত করে রাখা হয়েছিল।

ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল দিনাজপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। তার দাপটে ইউপি সচিব ও ইউপি সদস্যরা জড়সর হয়ে থাকে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মূর্তজা আল মুঈদ নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার সন্ধ্যায় সদরের ৬ নং আউলিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে চালের বস্তাগুলো পাওয়া যায়। পরে চালগুলো জব্দ করে কক্ষটি সিলগালা করে ইউপি সচিব বাবুল সরকারকে দায়িত্ব প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৬ নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণের জন্য ঈদ উপহার হিসেবে ৯৮২৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়। যা ঈদের আগেই গরীব অসহায় দুস্থ্য মানুষের মাঝে ১০ কেজি কওে চাল বিতরণের করার কথা থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান নিজস্ব ক্ষমতার দাপটে ৪৫০০ কেজি চাল বিতরণ না আত্মসাত করার উদ্দ্যেশ্যে এই ভিজিএফ চাল ইউনিয়ন পরিষদের অন্য একটি কক্ষে লুকিয়ে রেখে তালা বন্ধ করে নিজেই এই কক্ষের চাবি নিয়ে যায়। এই খবর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক ভাবে ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হলে ৫০ কেজি ওজনের ৯০ টি চালের বস্তা জব্দ করে।

আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মোল্লা পাড়ার আসলাম উদ্দীন জানান, ঈদের আগে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামালের নিকট ভিজিএফ চালের জন্য গেলে সে আমাকে দুর দুর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। চেয়ারম্যান বলেছে তোমরা আমাকে ভোট দাওনি তাই আমি তোমারদেরকে এই চাল দিব না।

একই গ্রামের মাসুদা বেগম বলেন, আমার গ্রামের অনেক মহিলা পুরুষ ভিজিএফ এর চাল পেলেও আমাকে দেয়নি। আমি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে খাই। দুই দিন চালের জন্য গিয়েও আমাকে ফেরত দিয়েছে। আর বলেছে চাল শেষ হয়েছে। তাই আর তোমাকে চাল দেওয়া যাবে না।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জসিম উদ্দীন, পুলহাট পুলিশ ফাড়ির কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও ইউপি সদস্য ও গ্রাম্য পুলিশ ও গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে আউলিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদে এসে ৯০ বস্তা চাল জব্দ করে কক্ষটি সিলগালা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

ইউপি সদস্য নূর আলম জানান, চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল আমাদেরকে ৩৫০টি করে কার্ড প্রদান করেন। আমরা সকল ইউপি সদস্যরা মিলে পেয়েছে ৪ হাজার ২০০ টি কার্ড বিতরণ করেছি। বাকি ৫ হাজার ৬২৭টি কার্ড চেয়ারম্যান নিজের জন্য রেখেছেন। তার নিজস্ব হাতে রাখা কার্ডেও চাল রয়ে গেছে।

৬নং আউলিয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল বলেন, কার্ডধারী অনেক সুবিধাভোগী কার্ড বিতরণ করা হয়েছে কিন্তু নিধারিত সময়ে না আসায় চালগুলো মজুত রাখা হয়েছিল। এই একদিনের মধ্যেই আমার ইউনিয়নে মাইকিং করার পর চাল বিতারন করার কথা ছিল।

ইউপি সচিব বাবুল সরকার বলেন, ঈদ উপহার হিসাবে ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু চেয়ারম্যানের নিজস্ব ক্ষমতায় তিনি তার মত করে চাল বিতরণ করেছে। অবশিষ্ট চাল এখন জমা রয়ে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মূর্তজা আল মূঈদ জানান, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব, ইউপি সদস্যগন ও ট্যাক অফিসারকে অফিসিয়াল ভাবে কারন দর্শনার চিঠি করা হয়েছে। উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে না পারলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্বপশ্চিম- সুলতান/ এনই

দিনাজপুর

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close