ছাতকে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ, বিপাকে ব্যবসায়ীরা
সুনামগঞ্জের ছাতকে চুনাপাথর আমদানিবন্ধে রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। অনেকেই বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ ও বকেয়া আদায় নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন। এছাড়া একই কারণে বেকার হয়ে পড়েছেন উপজেলার কয়েক শতাধিক বারকি শ্রমিক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আইনি জটিলতার কারণে গত ২৫ জুলাই থেকে ভারতের সীমান্তের ওপার থেকে স্থানীয় চেলা ও ইছামতি রুটে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেয়া হয়। যে কারণে সরকারের নির্ধারিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়েও শংকা রয়েছে। চেলা শুল্ক স্টেশন ২০২১-২০২২ইং অর্থবছরে নির্ধারিত সরকারি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার স্থলে অর্জিত হয়েছিল ২ কোটি ২২ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এবার ২০২২-২০২৩ইং অর্থবছরে চেলা রুটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা।
সম্পর্কিত খবর
একই ভাবে ইছামতি শুল্ক স্টেশন ২০২১-২০২২ইং অর্থবছরে নির্ধারিত সরকারি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৮৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। ওই রুটে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা। চলতি ২০২২-২০২৩ইং অর্থবছরে ইছামতি রুটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ কোটি টাকা।
এব্যাপারে ছাতক চুনাপাথর ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহীন আহমদ চৌধুরী জানান, ভারতে অভ্যতরীণ সমস্যার কারনে দীর্ঘদিন যাবৎ চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। মেঘালয় রাজ্যঘেষা সুনামগঞ্জের বড়ছড়া, বাগলী, চাড়াগাও, ইছামতি ও চেলানদী রুটে বন্ধ থাকায় কোটি কোটি টাকার ব্যাবসায়ীদের ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার কোটি কোটি টাকার। অসহায় হয়ে পড়েছে হাজার হাজার শ্রমিক। নেই বিকল্প কাজের ব্যবস্থা। এদিকে আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যাবসায়ীরা ব্যাংক লোন নিয়ে পড়েছে বিপাকে। চরম দুষচিন্তায় কাটছে দিন।
ইসলামপুর ইউনিয়নের বারকি শ্রমিক আক্তার হোসেনের সাথে কথা বলে জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় ঘরে খরচ জোগাতে পারে না । জিনিস পত্রের দাম বেশী। স্ত্রী বাচ্চা নিয়ে অসহায় অবস্থায় জীবন। জানেন না অন্য কাজ । তিনি আরো জানান শুধো আমি না আমার মতো শতশত মানুষ বেকার। শতশত মানুষের পরিবারে হাজার হাজার মানুষ। আপনারা সাংবাদিক আমাদের জন্য কিছু লিখেন।
স্থানীয় একটি সুত্র জানায়, শীঘ্রই ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানি স্বাভাবিক না হলে চেলা ও ইছামতি রুটে এবার সরকারের নির্ধারিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হতে পারে বলে।
ছাতকের একাধিক চুনাপাথর আমদানিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানী বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বেকার হয়ে পড়েছেন অসংখ্য দিনমজুর (বারকি) শ্রমিক। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে চরম দুঃচিন্তায় পড়েছেন।
চেলা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল কাদের জানান, মূলত ভারতীয় অভ্যন্তরীন চুনাপাথর ব্যবসায়ীদের আইনি নানা জটিলতার কারনে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব আদায়েও প্রভাব পড়েছে। চলতি মাসে চুনাপাথর আমদানির বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হতে পারে (নিশ্চিত নন) বলে একটি সূূত্রে জানা গেছে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/শংকর/এআইজ