• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

অবশেষে সিজারিয়ান অপারেশন চালু হলো জগন্নাথপুরে

প্রকাশ:  ২৬ আগস্ট ২০২২, ১১:৪৬
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিনের পর অবশেষে প্রথম সিজারিয়ান অপারেশন চালু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে প্রথম মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। সিজারিয়ান অপারেশন চালু হওয়ায় জগন্নাথপুর উপজেলা বাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ষাটের দশকে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালু করা হয়। পরবর্তীতে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০০০ সালে প্রসূতি সেবা চালু করা হয়। অবকাঠামোগত সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকার পর অ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনি চিকিৎসকের অভাবে গত পাঁচ বছর সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। তবে নরমাল (স্বাভাবিক) প্রসব চালু ছিল।

সম্পর্কিত খবর

    হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন ডা: মধু সুধন ধর। তিনি যোগদানের পর থেকে চিকিৎসা সেবার মান ব্যাপক হারে উন্নত করেছেন। এমনকি জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী গরিবের ডাক্তার হিসেবেই খ্যাতি অর্জন করেন ডা: মধু সুধন ধর। তিনি দ্বায়ীত্ব নেবার পর থেকেই সকাল থেকে বিকাল অবদি রোগীদের উপচে পড়া ভীড় লেগেই থাকে। সাথে বিনা মূল্যের ঔষধ বিতরন চলমান রয়েছে।

    জানা গেছে, সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে উত্তরে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবিস্থত জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স । সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে উপজেলা বাসীকে দীর্ঘদিন। সরকারি সেবার জন্য এ সময়ে উপজেলাবাসীকে জগন্নাথপুর থেকে জেলা সদর হাসপাতালে অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী সিলেট জেলার ওসমানি মেডিকেলে যেতে হতো। বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হতো।

    উপজেলায় প্রথম সিজারিয়ান ফাতেমা খাতুন জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পানি ভাঙতে শুরু করে। কিন্তু তারপরও পেটের ব্যথা ওঠেনি। নরমালে প্রসব করানোর জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। নরমালে না হওয়ায় ডাক্তার সিজারের পরামর্শ দেন। রাতের দিকে সিজার করে প্রথম মেয়ে সন্তানের জম্ম হয়। সম্পূর্ণ বিনা খরচে। আল্লাহর রহমতে আমি ও বাচ্চা দু’জনেই ভালো আছি।

    উল্লেখ্য যে, ডাক্তার মধু সুধন ধর গরিবের ডাক্তার হিসেবে এই উপজেলায় তাঁর পরিচিতি। তাঁর নেতৃত্বে এ উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধি ও করোনাকালে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাধারন মানুষের পাশে দাড়িঁয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে গেছেন। যার কৃতিত্ব স্বরুপ ২০২১ সালে সিলেট বিভাগের সেরা স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় ডাক্তার মধু সুধন ধর এর হাতে সিলেট বিভাগের সেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পুরুস্কার সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেছিলেন।

    জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মধু সুদন ধর জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জের সংসদ পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, সিভিল সার্জন মো: আহম্মদ হোসেন সহ উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ ও হসপিটালের স্টাফদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে আরো জানান- ২০১৮ সালের ৭ই নভেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ২ টি স্বপ্ন মনে নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। একটি হচ্ছে এলাকাবাসীর বহুদিনের আশা জগন্নাথপুর হাসপাতালে সিজার অপারেশন শুরু করা এবং অন্যটি হচ্ছে রোগীদের পরীক্ষা- নিরীক্ষার জন্য ল্যাবের কার্যক্রম শুরু করা। মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আজ একই দিনে দু'টির কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি। এই দুটি কাজ শুরু না করে জগন্নাথপুরের কর্মক্ষেত্র থেকে বিদায় নিলে সারাজীবন আফসোস করতাম।

    পূর্বপশ্চিমবিডি-শংকর দত্ত/ম

    সিজারিয়ান অপারেশন

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close