• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মধুমতি কালনা সেতু উদ্বোধনের পর হেঁটে পার হতে মানুষের ঢল

প্রকাশ:  ১০ অক্টোবর ২০২২, ১৯:৩৪
নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইলের লোহাগড়ার মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত মধুমতি কালনা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ের চামেলী হল থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধন ঘোষণার পর সেতু দিয়ে পায়ে হেঁটে পার হতে মানুষের ঢল নামে। বহুল প্রত্যাশিত সেতুটি চালু হওয়ায় সাধারণ মানুষ উচ্ছ্বসিত। রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে নির্দিষ্ট হারে টোল দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড.আহম্মদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় কালনা সেতুর পশ্চিম প্রান্তে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খন্দকার মুহিত উদ্দিন,নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, নড়াইল-২ আসনের সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্তুজা, নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান,পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন, প্রকল্পের পরিচালক শ্যামল ভট্টাচার্য, সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান,নড়াইল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. সুবাস চন্দ্র বোস, সাধার সম্পাদক নিজামউদ্দিন খান নিলু, লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আজগর আলী,লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনুসহ প্রমুখ।

সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সেতু ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন রঙের পতাকা লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্বোধনী মঞ্চের স্থানে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যোগ দিয়েছেন।

এদিকে, মধুমতি সেতু নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক আকরামুজ্জামান মিলু বলেন, তার দাদা ও বাবা-চাচারা নৌকায় মধুমতি নদী পারাপার হয়েছেন। তিনি ৫০ বছর ধরে মধুমতি নদীর কালনা খেয়াঘাট পার হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেছেন। এখন আর ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার হতে হবে না, এটা ভাবতে আনন্দ লাগছে। আগে গাড়ি পারাপার হতে সময় লাগতো। এখন সড়কপথে মধুমতি সেতু দিয়ে যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন হবে। শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের যোগাযোগ সহজ হবে ও কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

চরকালনা গ্রামের কৃষক শাহিদুল ইসলাম বলেন, আগে ঢাকায় যেতে একদিন সময় লাগত। এখন দুই ঘণ্টা আড়াই ঘণ্টার মধ্যে কাঁচা সবজি নিয়ে আমরা ঢাকায় যেতে পারবো। কালনা সেতু হয়ে আপনার লাভ কি এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কৃষক বলেন, ফেরি পারাপার একটা ভোগান্তি। সেতু হওয়ায় এখন যাতায়াতটা সহজ হয়ে গেল। এছাড়া আশপাশে শিল্প কলকারাখানা হবে এমন আভাসে অনেকে জমি কিনছেন।ইতিমধ্যে জমির দামও অনেকগুণ বেড়ে গেছে।

এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, মধুমতি সেতু উদ্বোধনের ফলে মূলত এখন আমরা পদ্মা সেতুর পূর্ণাঙ্গ সুফল ভোগ করতে পারবো। ঢাকা থেকে নড়াইলে আসতে সর্বোচ্চ দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। ঢাকা থেকে কলকাতার দূরত্বও কমে যাবে। একদিকে যেমন সময় বাঁচবে, অন্যদিকে এ এলাকার মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

উল্লেখ্য, গত ২০১৫ সালে সেতুর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন। ২০১৮ সেপ্টেম্বরে মধুমতি সেতুর কাজ শুরু হয়। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ৯৫৯ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মিত হয়েছে। সেতুর মাঝখানে বসানো হয়েছে ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্টিলের স্প্যান যা ধনুকের মতো বাঁকা। ছয় লেনের এ সেতু হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। চারটি মূল লেনে দ্রুতগতির ও দুটি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার।

মধুমতি কালনা সেতু,উদ্বোধন,মানুষের ঢল

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close