• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কক্সবাজার সৈকতে আর কোনো অবৈধ স্থাপনা নয়: হাইকোর্ট

প্রকাশ:  ০৯ নভেম্বর ২০২২, ১৯:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে মোট ৬৭৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে অবহিত করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই সৈকতে আর যেন কোনো অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠতে না পারে, সেজন্য সব সময় তদারকির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সংশ্লিষ্ট রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (৯ নভেম্বর) এই নির্দেশ দেয়। এই সময় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মামুনুর রশীদকে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে আদালত।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে ২৬০ এবং সুগন্ধা পয়েন্টে ৪১৭টি অবৈধ স্থাপনা (মোট ৬৭৭) উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে এদিন হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেন কক্সবাজারের ডিসি। আদালতে জেলা প্রশাসকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) সভাপতি মনজিল মোরসেদ এই নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। নোটিশে বলা হয়, জনস্বার্থ বিবেচনা করে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ৭ জুন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তা এখনও সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি।

এতে উল্লেখ করা হয়, কয়েকদিন আগে এইচআরপিবির প্রতিনিধি সমুদ্র সৈকত এলাকায় পর্যবেক্ষণে গেলে ওই এলাকায় অনেক অবৈধ দখল ও স্থাপনা দেখতে পান। যদিও এর আগে রায় হওয়ার পর আদালতের নির্দেশে সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। বর্তমানে উক্ত জায়গা দখল ও স্থাপনা ভাড়া দিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা আয় করছে। কিন্তু প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা আদালত অবমাননার সামিল।

নোটিশে প্রশাসনের সাড়া না পেয়ে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়। গত ২৫ আগস্ট আদালত অবমাননার অভিযোগের এক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে ডিসিকে তলব করে।

আদালত থেকে বের হওয়ার পর সেদিন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, আদালতের নির্দেশনার পর সৈকতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কিন্তু ইদানিং প্রায় ১শ’র মতো দোকান স্থাপন করা হয়েছে। এ ঘটনায় চার মাস আগে আমরা আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। এরপর দীর্ঘ শুনানির পর বারবার সময় নেওয়ার পরও জেলা প্রশাসক ওই সব স্থাপনা উচ্ছেদ করেননি। যে কারণে জেলা প্রশাসকসহ সবার ওপর আদালত অবমাননার অভিযোগে একটা রুল জারি করে হাইকোর্ট। আর কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে ১৯ অক্টোবর সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এ আদেশ অনুসারে ১৯ অক্টোবর হাজির হয়ে জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ আদালতে একটি হলফনামা জমা দেন।

জেলা প্রশাসকের পাঠানো স্মারকে বলা হয়, আদালতের আদেশ অনুসরণে উচ্ছেদ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ১০ অক্টোবর পুনরায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবনী ও কলাতলী সমুদ্র সৈকত এলাকায় ৪১৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু দুটি সমিতি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের আদেশ দেখান। ওই আদেশে দেখা যায় সুগন্ধা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে জাকির হোসেন ও অপর একজন সমুদ্র সৈকতে অবস্থিত তাদের ব্যবসা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় প্রার্থনা করেন। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে তাদের ব্যবসা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সময় দেন এবং ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের উচ্ছেদ না করার আদেশ দেন। ফলে ১০ অক্টোবর দুটি সমিতির ২৩৩টি দোকান উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। তবে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে দোকানদাররা তাদের মালামাল বেশিরভাগই সরিয়ে নিয়েছেন এবং অবশিষ্ট মালামাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

শুনানি শেষে জেলা প্রশাসককে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ৯ নভেম্বরের আদালতের আদেশ প্রতিপালনের প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এর ধারাবাহিকতায় প্রতিবেদন জমা দেন ডিসি।

হাইকোর্ট,কক্সবাজার,সৈকত

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close