• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মিছিলে-স্লোগানে মুখর সিলেটের সমাবেশস্থল

প্রকাশ:  ১৯ নভেম্বর ২০২২, ১৫:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের সমাবেশস্থল ও নগরের রাস্তাঘাট সকাল থেকেই মিছিল-স্লোগানে মুখর করে তুলেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট ও পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশস্থলে যোগ দিচ্ছেন তারা। কিছুক্ষণ পরই এই মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে গণসমাবেশ ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নগরের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। রাখা হচ্ছে সতর্ক নজর। পুলিশের ক্রাইসিস রেসপন্স টিমও (সিআরটি) মাঠে নেমেছে। সঙ্গে আছে বিজিবিও।

শনিবার সকালে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ ও নগর ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সমাবেশের জন্য নির্মিত ২১০০ বর্গফুটের মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। অপেক্ষার প্রহর গুনছেন মাঠে ও আশপাশে থাকা নেতা-কর্মীরা। গণসমাবেশের জন্য ৭০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও ৩০ ফুট প্রস্থের সভামঞ্চের পাশাপাশি লাগানো হয়েছে ১২৫টি মাইক। সমাবেশের মাঠ ছাড়াও সিলেট নগরজুড়ে সড়কের দুই পাশে লাগানো হয়েছে ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন। নগরের প্রবেশপথে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। এ ছাড়া নেতা-কর্মীদের রাত্রিযাপনের জন্য নির্মিত প্যান্ডেল ও ক্যাম্প খুলে ফেলা হয়েছে।

শনিবার ভোর থেকে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশস্থলে নেতা-কর্মীদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে আসা মানুষ, যারা মাঠের বাইরে বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার বা স্বজনদের বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন, তাঁরা ভোর থেকেই মাঠে আসতে শুরু করেছেন।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। প্রধান বক্তা স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস। বিশেষ অতিথি আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। দলের মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শুক্রবার রাতেই সিলেটে পৌঁছে গণসমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন।

গণসমাবেশে যোগ দিতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা থেকে নৌকায় চড়ে শুক্রবার বিকেলেই সিলেটে এসে পৌঁছান মো. মাসুক মিয়া। হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে রাতের খাবার খেয়ে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে শুয়ে-বসে কাটিয়েছেন রাত।

মাসুক মিয়া বলেন, ‘এই সরকারের সময়ে কেউ শান্তিতে নেই। সবকিছুর দাম বাড়তি, সংসার চলে না। প্রতিবাদ জানাতে আসছি সিলেটে। আজ সকালে রওনা দিয়ে আসতাম। কিন্তু ধর্মঘট দিছে। তাই গতকাল নৌকায় এসেছি।’

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা থেকে এসেছেন দুই বৃদ্ধ হযরত আলী ও সমীর আলী। পরিবহন ধর্মঘট চলছে তাই গতকাল রাতেই সিলেটে চলে এসেছেন। রাত কাটিয়েছেন স্বজনদের বাড়িতে। হযরত আলী বলেন, ‘আজকে বাসও চলবে না, সিএনজিচালিত অটোরিকশাও চলবে না রাস্তায়। পরে যদি আসা না হয়, সেই চিন্তা করে এক দিন আগেই চলে এসেছি। রাতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলাম। সকাল হতেই আর দেরি করিনি, চলে আসছি মাঠে।’

সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, সে জন্য সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশ জানায়, নগরজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের ক্রাইসিস রেসপন্স টিমের সদস্যদেরও মাঠে নামানো হয়েছে। সকাল থেকে বিপুলসংখ্যক বিজিবি সদস্যকেও নগরে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। নগরের চৌহাট্টা, আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, রিকাবীবাজার, বন্দরবাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য রয়েছেন। বিশেষ করে সমাবেশস্থলের আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিপুলসংখ্যক সদস্যকে সতর্ক থাকতে দেখা গেছে। এর বাইরে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরাও কাজ করছেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ বলেন, ‘সমাবেশকে ঘিরে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছি আমরা। ১৯টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চারটি মোবাইল টিমও রয়েছে।’

উল্লেখ্য, চাল-ডাল, জ্বালানি তেল, গ্যাস-বিদ্যুৎ, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দুর্নীতি, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে হত্যার প্রতিবাদে এবং নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারে দাবিতে এই গণসমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদপুর বিভাগে গণসমাবেশ করা হয়েছে। সামনে আরও তিনটি গণসমাবেশ এবং ঢাকায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি রয়েছে দলটির। এর মধ্যে আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী ও ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় এই কর্মসূচি রয়েছে।

বিএনপি,সমাবেশ,মিছিল

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close