নামাজ পড়ছিলেন রশিদা, হত্যা করে চলে গেল দুর্বৃত্তরা
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে রশিদা বেগম (৫৫) নামে এক নারীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি নামাজ পড়ছিলেন বলে জানিয়েছে পরিবারের লোকজন।
বুধবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের গোহারুয়া (মানিকমুড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সম্পর্কিত খবর
পারিবারিক সূত্র জানায়, রশিদার ছেলে বিল্লাল হোসেন পোল্যান্ড প্রবাসী। আট মাস আগে দেশে ফিরে তিনি একই গ্রামের কাঞ্চন মিয়ার মেয়েকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর বিল্লাল আবারও প্রবাসে ফিরে যান।
স্ত্রী তাসনিমকে তিনি মায়ের কাছে রেখে যান। কিন্তু কিছু দিন পরেই তাসনিম তার সব অলঙ্কার নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান।
বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিল।
নিহতের মেয়ে জামাতা নবীর বলেন, “কাঞ্চন মিয়া বাড়ির পাশে এসে আমার শাশুড়িকে গালাগাল করতেন। এতে দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে। বিষয়টি সমাধানের জন্য বৃহস্পতিবার সমাজের লোকজন নিয়ে বসার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল রাতেই তারা আমার শাশুড়িকে মেরে ফেলে।”
“জানতে পেরেছি মাগরিবের সময় আমার শাশুড়ি নামাজ পড়ছিলেন। ওই অবস্থাতেই মাথায় আঘাত করা হলে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। পুরো রুমে রক্তে ভেসে যায়। শুনেছি তিনি সিজদারত অবস্থায় ছিলেন। ঘরের দরজা-জানালা খোলা ছিল। বিদ্যুৎ থাকলেও লাইট বন্ধ ছিল।”
নিহতের ছেলে বিল্লাল হোসেন ফোনে বলেন, “বিয়ের পর পোল্যান্ড চলে আসি। আমার শ্বশুর ও স্ত্রী আমাকে দু'মাসের মধ্যেই দেশে ফেরার তাগিদ দিচ্ছিলেন। এদিকে কাগজপত্রে জটিলতার কারণে আমি আর পোল্যান্ড থেকে ফিরতে পারিনি। আমি বলেছি ফিরতে দেরি হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা তা না শুনে আমাকে টানা হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল। এক সময় আমাকে মেসেজ, কল এমনকি বাড়িতে গিয়েও আমার ভগ্নিপতি ও মাকে হত্যার হুমকি দেয়। গতকাল রাতে ঘটনাটা ঘটে গেল। তারা আমার মাকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, “গতকাল রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। এখনই বিস্তারিত বলা যাবে না। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এখনও কোনো মামলা হয়নি।”