• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ধামরাইয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ‘অর্ধ কোটির’ ফ্ল্যাট

প্রকাশ:  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:০৪
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিবেদক

ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব টেকনিশিয়ান মো. উছমান গণি সরকারি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর চাকরি করেও ঢাকার সাভারে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ফ্ল্যাট কিনেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

তথ্য বলছে, ১৯৯৬ সালে স্বাস্থ্য সহকারী পদে যোগ দেন মো. উসমান গণি। ২০২২ সালে ইনক্রিমেন্ট পেয়ে তার বেতন হয় ২৫,৩২০ টাকা। তিন কন্যা ও স্ত্রীসহ চারজনের পরিবার নিয়ে এত বছর ভাড়া বাসায় থাকলেও ২০১৯ সালে সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকায় চার তলা ভবনের চতুর্থ তলায় তিন কক্ষ বিশিষ্ট এক ইউনিটের ফ্ল্যাট কেনেন তিনি।

সরেজমিনে সাভারের ব্যাংক কলোনির জি-১০ নম্বর বাসাটিতে গিয়ে দেখা যায়, চার তলা ভবনটিতে এখনও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি। স্থানীয় সৌদি প্রবাসী আব্দুর রশিদ ভবনটির মালিক। সেই ভবনের চতুর্থ তলায় এককালীনভাবে পুরো টাকা পরিশোধ করে তিন কক্ষের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন উছমান গণি।

ভবন মালিক ও ফ্ল্যাট বিক্রেতা আব্দুর রশিদ বলেন, ২০১৯ সালে ছেলেকে নেদারল্যান্ডে পাঠানোর সময় টাকার প্রয়োজন পড়ে। তখন একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করি। বিক্রির ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এককালীনভাবে পরিশোধ করেছেন উছমান গণি। এখানেই পরিবারসহ থাকেন তিনি। ২০১৪ সাল থেকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়িত থাকা মো. উছমান গণির গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামে।

সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামার বাড়িতে থেকে বেড়ে ওঠা তার।

জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মানিক জানান, উছমান গণি তার বাড়ি একই এলাকায়। তিন ভাইয়ের পরিবারে উছমানের বেড়ে ওঠা। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা উছমানের বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়ার কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।

অর্থের উৎসের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য সহকারী কর্মচারী মো. উছমান গণি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে ধামরাই আছি। এরমধ্যে সাভার ফ্ল্যাট কিনেছি অনেক আগে ৪২ লাখ টাকা দিয়ে। এরমধ্যে সাত লাখ টাকা ঋণ করেছি, সারা জীবন চাকরি করে জমাইছি। অনেকে তো ৫-৭ কোটি টাকার সম্পত্তিও আছে।

মাসিক আয় কতো প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বেসিক ২৬,০০০ টাকাসহ ৪০,০০০ টাকার মতো পাই। টাকা জমিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছি। সাভারে যে আছে এই পদে তারও বাড়ি আছে। আর এই টাকা কোনো টাকা হলো নাকি?

ধামরাই ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. নূর রিফফাত আরা বলেন, ওনার তো দীর্ঘদিনের চাকরি। আর এগুলো তার ব্যক্তিগত বিষয়। তারপরও কোনো অভিযোগ এলে সেটা বিভাগ ব্যবস্থা নিতে পারে।

ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে সেটি দেখা হবে। আপনারা যদি জানান। দুর্নীতির বিষয় যদি জানানো হয়। সে অনুযায়ী অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. শামিউল ইসলাম সাদী বলেন, এএইআই যদি ফ্ল্যাট কিনে থাকে সেটা দুদক বা এমন সংস্থায় জানাতে পারেন। আমরাতো কারো সম্পত্তির হিসাব চাইতে পারি না। আমরা তদন্ত করে কিছু পেলে সেটা ব্যবস্থা নিতে পারি। এটা যদি তার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতপূর্ণ না হয় সেটা দেখা হবে।

ধামরাই

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close