• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

গোদাগাড়ীতে বাড়ীতে মাদক রেখে ৫ লাখ টাকা দাবি পুলিশের

প্রকাশ:  ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:১৪
রাজশাহী প্রতিনিধি

রাজশাহীর গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশের এসআই আতিকসহ আরো কয়েকজন পুলিশের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য দিয়ে কৌশলে ফাঁসানোর ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশের হয়রানী থেকে বাঁচতে এসব অভিযোগ তুলে উপজেলার সাগুয়ান ঘুন্টি গ্রামের ভূক্তভোগী রুহুল আমিন পুলিশের রাজশাহী ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) অভিযোগ দেওয়া হয়।

লিখিত অভিযোগে ভূক্তভোগী উল্লেখ করেন, আমি একজন কৃষক । কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। গত ২৯ নভেম্বর দিবাগত রাত ২ টার দিকে গোদাগাড়ী মডেল থানার এস.আই আতিকসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন পুলিশ আমার বাড়ীতে অনধিকার ভাবে প্রবেশ করিয়া আমার বসতবাড়ীর ঘর তল্লাশি করতে থাকে।

এক পর্যায়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্য রান্না ঘরের একটি বাটিতে প্যাকেটে হেরোইন পাওয়া গেছে বলে আমাকে দেখায় এবং হ্যানকাপ লাগিয়ে আমাকে থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করে।

পরবর্তীতে আমি ও আমার স্ত্রী-সন্তান কান্নাকাটি করতে লাগিলে চিৎকার করতে নিষেধ করে ও মানুষজন যাতে না জানে তার জন্য বারবার ভয় দেখাতে থাকে। পরে ওই প্যাকেটের বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা বলা হলে। পুলিশ আমার নিকট হতে ১০ লাখ টাকা দাবী করে এবং এই টাকা দিলে তোমাকে আমরা ছেড়ে দিবো। পুলিশ নিজেরাই এসব মাদক রেখে আমাকে চাপ প্রয়োগ করে।

কিন্তু আমি একজন গরীব অসহায় দিনমজুর হওয়া আমার বাড়ীতে কোন টাকা পয়সা ছিলনা এবং আমি কোন অপরাধ না করায় টাকা দিতে পারিবো না বলিয়া প্রকাশ করি। তখন থানার পুলিশ গোদাগাড়ী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ মনিরুল ইসলামকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডেকে পাঠায় এবং তাৎক্ষনিক ইউপি সদস্য মোঃ মনিরুল ইসলাম আমার বাড়ীতে আসিয়া পুলিশের সাথে কথা বলতে থাকে । ইউপি সদস্য নিজে জিম্মা হয়ে এবং আগামী কাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) নগদ ৫ লাখ দেওয়ার কথা বলে আমাকে বাড়ীতে রাখিয়া পুলিশ চলে যায়।

আমি সব পুলিশকে চিনি না কিন্তু আমার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ মনিরুল ইসলাম সকল পুলিশকে চিনে ও জানে। মনিরুল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমাকে ৫লাখ টাকার ব্যবস্থা করিতে বলে। এবং সেই টাকা আজকের মধ্যে না দিলে আমাকে পুনরায় পুলিশ আসিয়া গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবে ভয় দেখায়।

ভূক্তভোগী একজন অসহায় গরীব কৃষক দিনমজুর ব্যক্তি হওয়ায় এসব অভিযোগ তদন্ত করার জন্য অনুরোধ জানান।

এসব অভিযোগের বিষয়ে এসআই আতিকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি, রুহল আমিনের বাড়ী যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং ইউপি সদস্য মনিরুল উপস্থিত থাকার বিষয়টি জানান। স তবে তার বাড়ীতে কোন মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়নি এবং টাকা পয়সা চাওয়া হয়নি বলে জানান।

ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব বিষয় কোন মন্তব্য করেননি। তবে রুহুল আমিনের নিটক টাকা পয়সা নেওয়ার ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করেন। এসময় রুহুল আমিন পুলিশ সদস্যদের নাম পরিচয় ও কে টাকা নিবে জানতে চাইলে বলে এসব মোবাইলে বলা যাবে না সরাসরি এসে কথা বলতে বলেন।

পুলিশের এসব হয়রানির বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থনা পুলিশ আব্দুল মতিন বলেন, গত রাতে থানা পুলিশের কেউ অভিযানে যায়নি। গেলে তো আমি সব জানতে পারবো। আমি খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছি। তবে পরে এসব বিষয়ে কিছুই জানাইনি ওসি।

বর্তমান ওসি আব্দুল মতিন যোগদানের পর থেকে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে মোটা অংকের বাণিজ্যের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। গত ২১ নভেম্বর পৌর এলাকার লালবাগ হেলিপ্যাড এলাকার কাবাতুল্লার বাড়ীতে এসআই আমিরুল ঘরে ঢুকে নিজেরাই মাদকদ্রব্য ফেলে দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ গোদাগাড়ী পৌর সভার এক কাউন্সিলরকে ডেকে টাকার চুক্তি করে এবং মোটা অংকের টাকা নিয়ে তার বাড়ী থেকে ফিরে আসে পুলিশ।

পুলিশ,মনোনয়ন

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close