• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

হবিগঞ্জের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় হাওরে অবস্থান

প্রকাশ:  ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১:২০
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হাওর এলাকায় কলকারখানা স্থাপন ও যত্রতত্র সড়ক নির্মাণের করে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে পরিবেশ ও প্রকৃতির মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যে কারণে হাওরে অস্বাভাবিক হারে ফসলী জমির পরিমাণ কমছে। দেশীয় মাছসহ জলজ প্রাণী হৃাস পেয়ে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। নদী-খাল-বিলে অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলার কারণে জীবন-জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের হাওর সংলগ্ন সুতাং নদীর তীরে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখা, লাখাই প্রেসক্লাব ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপারের যৌথ আয়োজনে হাওরে অবস্থান শীর্ষক এক কর্মসূচীতে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বাপা হবিগঞ্জের সহ-সভাপতি ও হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহান আরা খাতুন, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী মমিন, বিশিষ্ট সাংবাদিক এডভোকেট রুহুল হাসান শরীফ, লাখাই প্রেসক্লাব সভাপতি এডভোকেট আলী নেওয়াজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কলেজ শিক্ষক নাসরিন হক, এডভোকেট বিজন বিহারী দাস, ডা. আলী আহসান চৌধুরী প্রমুখ। এতে মূল বক্তব্য রাখেন বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাপা হবিগঞ্জের নির্বাহী সদস্য ও লাখাই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. বাহার উদ্দিন।

এতে স্থানীয় নৌকার মাঝি মো. আহমেদ বলেন- হাওরে বর্ষাকালে বিভিন্ন স্থানে নৌকা দিয়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করতাম আমরা। গত কয়েক বছর ধরে সুতাং নদীসহ হাওরের পানিতে খুব দুর্গন্ধ হয়। দূষণের জন্য নৌকা চালাতে কষ্ট হয়। স্থানীয় কৃষক কাছম আলী বলেন- বংশ-পরম্পরায় কৃষি কাজ আমাদের পেশা। দূষণ আমাদের মাটি খেয়ে ফেলেছে। ফসল লাগাই, কিন্তু ফলন হয় না।

একসময় দূরদূরান্ত থেকে লোকজন মাছ সংগ্রহ করার জন্য ছুটে আসতো। হাজার হাজার জেলে পরিবার এর জীবন জীবিকা চলত হাওর ও সুতাং নদী থেকে মাছ ধরে। এখন আর সেই মাছ নেই! পেশা বদল করতে হচ্ছে আমাদের- বলেন মৎস্যজীবী আব্দুল কুদ্দুছ।

মূল বক্তব্যে খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ও বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল জানান- সরকারি হিসেবে দেশে ৪২৩ টি হাওর রয়েছে। দেশের প্রায় এক পঞ্চমাংশ ধান উৎপাদন হয় হাওরাঞ্চল থেকে। হাওর এবং হাওরে প্রবাহিত অসংখ্য নদী যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখছে। কিন্তু দেশের গুরুত্বপূর্ণ হাওরাঞ্চলের প্রতি চলে অনাচার। হাওর, নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয় যেন কলকারখানার বর্জ্য ফেলার ঠিকানা।

এসময় তোফাজ্জল সোহেল বলেন- যত্রতত্র সড়ক নির্মাণ করে হাওর বিনাশী উন্নয়ন মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যেকারনে হাওরের প্রকৃতচিত্র উধাও হয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু সংকটের বিরূপ প্রভাব পড়ছে হাওরে। শিল্পায়নের জন্য শ্রেণি পরিবর্তন করে হত্যা করা হচ্ছে হাওর ও এর জীববৈচিত্র্যকে। বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা করে হাওরকে দূষণসহ সকল ধরনের অত্যাচার থেকে রক্ষা করতে হবে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জীবনের জন্য।

হবিগঞ্জ,হাওর,জীববৈচিত্র

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close