• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

প্রশিক্ষণের টাকা ব্যাংক একাউন্টে না দেওয়ায় গোদাগাড়ীর শিক্ষা কর্মকর্তাকে শোকজ

প্রকাশ:  ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:০৭
রাজশাহী প্রতিনিধি

দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর ক্ষমতাধর হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ দুলাল আলমের শেষ রক্ষা হলো না। সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষনার্থীদের প্রাপ্য সম্মানী ও ভাতা ব্যাংক হিসেব নম্বরে না দিয়ে উপজেলার আফজি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সকল শিক্ষকদের ডেকে নগদ প্রদান করায় শোকজ প্রদান করা হয়েছে।

শোকজের অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্ত, ঢাকা, বাংলাদেশের মহাপরিচালক, রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহী উপপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে সম্মানীর টাকা হাতে হাতে নগদে প্রদান করায় গত ৪ জানুয়ারী বিকালে জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাঃ নাসির উদ্দীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাল আলমকে শোকজ পত্র দিয়েছেন এবং ৩ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব প্রদান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ব্যর্থতায় ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

শোকজে বলা হয়েছে প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীদের সম্মানী ও ভাতার টাকা শিক্ষকদের নিজ নিজ ব্যাংক একাউন্টে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্যান্সফারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাল আলম ওই নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে সকল শিক্ষকদের সম্মানী ওনভাতা নগদ প্রদান করায় বিধি বর্হিভুত ও দায়িত্বহীনতার মত কাজ করেছেন।

জানা গেছে, গত ২ জানুয়ারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইমেইলে ও শিক্ষা অফিসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দুপুর ১২ টার সময় নির্দিষ্ট স্থানে সকল শিক্ষকগনকে উপস্থিত হয়ে সম্মানীর টাকা গ্রহন করার নির্দেশনা দেন।

ওই দিন দুপুর ১২ টার সময় সবাইকে ডেকে ৩ টার সময় ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে না আসায় শিক্ষকগণ ক্ষোভে ফেঁটে পড়েন। বিকাল সাড়ে ৩ টার সময় টাকা দেয়া শুরু করেন। মাষ্টাররুলে ৭২৮০ টাকা জোরপূর্বক আগাম স্বাক্ষর করে নেন এবং প্রত্যেক শিক্ষককে ৬৯৩০ টাকা করে প্রদান করেন। এজন্য শিক্ষকদের তোপের মূখে, সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে কয়েকদফা টাকা প্রদান বন্ধ করে দেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রস্ততি শান্ত করে টাকা বিতরণ শেষ করেন।

প্রত্যেক শিক্ষকের ৩৫০ টাকা করে কেটে নেয়ার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকগন। গণিত বিষয়ে ৫;জন প্রশিক্ষণার্থী অনুউপস্থিত ছিলেন বলে কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান।

ওই বিষয়ের মাষ্টার ট্রেনার ও শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারি আনোয়ার হোসেন অনুউপস্থিত শিক্ষকদের মাষ্টাররুলে স্বাক্ষর করে সম্মানী ও ভাতার টাকা লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

খাতা, পেনসিল, পোষ্টার পেপারসহ প্রশিক্ষন সামগ্রী সরবরাহ না করার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। ফলে প্রশিক্ষন কার্যক্রম আনন্দঘন হয় নি। ব্যপক ক্ষতি হয়েছে শিক্ষকদের, যা সরজমিনে তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে।

জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাঃ নাসির উদ্দীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দুলাল আলমকে শোকজ দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

শিক্ষাভবন ঢাকার সহকারি পরিচালক রুপক কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে হয় গোদাগাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাল আলমের অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষবানিজ্য, প্রধান শিক্ষকদের মোবাইল রিসিভ না করা , অফিস ফাঁকি দেয়া, প্রতারনা, হয়রানি, শোকজ বানিজ্য, সর্বশেষ শিক্ষাভবনের সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাসের নাম ভাঙ্গিয়ে অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকদের বিকাশ, নগদের মাধ্যমে প্রতারণার বিষয় গুলি নিয়ে কথা বলা হলে তিনি জানান, আমরা অবগত আছি তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন শুরু হয়েছে। তাকে কৃতকর্মের ফল ভোগ করতেই হবে বলে তিনি জানান।

রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ সেলীম রেজা জানান, গোদাগাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাম আলম সাহেব আমার নাম্বারে মোবাইল করে শিক্ষা ভবনের সহকারী পরিচালক কলেজ- ৩ তপন কুমার নাম করে একটি মোবাইল (01972023345) নম্বর দিয়ে কথা বলতে বলেন, কলেজের সম্যার সমাধানের জন্য জরুরীভাবে কথা বলতে হবে। তিনি কথা বললে ৫ জন অধ্যাপক কে ওই নম্বরে কথা দ্রুত কথা বলতে বলা হয়। অধ্যক্ষ সেলীম রেজা তাদেরকে ম্যাসেজ দেন এভাবে

মো: সাদিকুল ইসলাম , (আরবী ) আপনি সহকারী পরিচালক কলেজ- ৩ শিক্ষা ভবন, তপন কুমার দাস, স্যারের সাথে জরুরী ভিত্তিতে কথা বলেন, মোবাইল নাম্বার :01972023345

অধ্যক্ষ, সাহেব মো: শাহিন আক্তার, প্রভাষক সংগীত, এস এম নাজমুস সাদাত, ইন্সপেক্টর, প্রকৌশল অংকন ও ওয়ার্কশপ প্রাকটিস

আহাদুজ্জামান নাজিম, প্রভাষক উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন, মো: সেরাজুল ইসলাম জ্যেষ্ঠ প্রভাষক, পদার্থবিজ্ঞান তারা কথা বললে প্রত্যেকের নিকট নগদ নাম্বরে চাকুরী বাঁচাতে ৫ জনের ৫০ হাজার করে টাকা পাঠাতে বলেন এবং অধ্যক্ষকে ৩০ হাজার করে টাকা পাঠাতে বলেন তপন কুমার দাস সেজে। অধ্যক্ষ বলেন, এখন টাকা নেই, ২ দিন পর অফিসে গিয়ে দিব।

এভাবে শিক্ষা অফিসার দুলাল আলম শিক্ষা ভবন পর্যন্ত শিক্ষকদের সাথে প্রতারণার জাল বপন করেছেন। এ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে শিক্ষাভবনে অভিযোগ হয়েছে, বেকায়দায় পড়েছি আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন। এভাবে মোবাইল প্রতারনার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা দুলাল আলমকে নির্বাচনের পর শিক্ষাভবনের এককর্মকর্তা ডেকে পাঠিয়েছেন বলে তিনি জানান।

শোকজ,প্রশিক্ষণ,কর্মকর্তা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close