• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

১২১ কেন্দ্রে নৌকার কারচুপির অভিযোগ, স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট বর্জন

প্রকাশ:  ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪৩
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের ১৭৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১২১টিতে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বাংলাদেশ আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা মিজান সাঈদ (ঈগল প্রতীক)। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানান তিনি।

মিজান সাঈদের ভাষ্য, সকাল ৮টা থেকে ১২১টি কেন্দ্র থেকে ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে একেকজন ব্যক্তিকে দিয়ে ২০-৩০টি করে ভোট দেওয়ান নৌকা প্রতীকের কর্মীরা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।

বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে মিজান সাঈদ অভিযোগ করেন, সকাল আটটা থেকে প্রথমে রামু, সদর ও পরে ঈদগাঁওতে ১২১টি ভোটকেন্দ্র থেকে নৌকার কর্মীরা ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকায় জাল ভোট দেওয়া শুরু করেন। নৌকার একেকজন লোক ২০-৩০টি করে ভোট দিয়েছেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের একেকজনকে এক লাখ টাকা করে দিয়ে এক হাজার করে ভোট আদায় করা হয়েছে। সকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রের ভোট কেটে নেওয়ার খবর তাঁর কাছে আসছিল। এখন (সাড়ে ১২টা) এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে, ১৭৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২১টি কেন্দ্রের ভোট নিয়ে ফেলা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর বাকি কেন্দ্রের ভোট নিয়ে নেওয়া হবে।

ভোটের পরিবেশ নেই উল্লেখ করে মিজান সাঈদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু ভোটের যে অঙ্গীকার ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল, কক্সবাজার-৩ আসনে তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় ভোট স্থগিতের বিকল্প নেই। নির্বাচন কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর ভোট স্থগিতের আবেদন জানাব। পুনর্নির্বাচন করা হবে বা স্থগিত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে। আমরা ভোটের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য এজেন্টদের নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা ভোট থেকে সরে দাঁড়ালাম।’

মিজান সাঈদ আরও বলেন, গতকাল শনিবার রাতে ঈগল প্রতীকের কর্মীরা যখন নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রে পোস্টার লাগানোর জন্য যান, তখনো রামুতে ঈগলের কর্মীদের দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। এজেন্টদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মারধর করা হয়েছে। মোটকথা, নির্বাচন একটা প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে।

আজ ভোটের দিনও নৌকা প্রতীকের কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন উল্লেখ করে ঈগল প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে যেতে না পারেন, সে জন্য ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলেও কেন্দ্রে ভোট দিতে পারেননি। এত অঘটনের পরও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক। এটা তাঁরা প্রত্যাশা করেননি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান প্রথম আলোকে বলেন, কক্সবাজারের চার আসনেই ভোট সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। যদিও ভোটারের উপস্থিতি কম। স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজান সাঈদের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ব্যস্ততার কারণে পড়ে দেখতে পারেননি।

কক্সবাজার-৩ আসনে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মিজান সাঈদসহ মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল (নৌকা), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ তারেক (লাঙ্গল), কল্যাণ পার্টির আবদুল আওয়াল মামুন (হাত ঘড়ি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির শামীম আহসান (কুঁড়েঘর) ও বিএনএমের মোহাম্মদ ইব্রাহিম (টেলিভিশন)। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাইমুম সরওয়ারের সঙ্গে মিজান সাঈদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার খবর পাওয়া যাচ্ছিল।

স্বতন্ত্র প্রার্থী,কক্সবাজার,দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন,চট্টগ্রাম বিভাগ,আওয়ামী লীগ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close