• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কক্সবাজারের হোটেলে রোহিঙ্গাদের বিয়ে, ১৯ বিদেশিসহ আটক অর্ধশতাধিক

প্রকাশ:  ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:৪৫
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কক্সবাজার শহরের একটি আবাসিক হোটেলে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা। খবর পেয়ে অনুষ্ঠানটি পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে বরসহ কমপক্ষে ৮২ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (১৪ জানুয়ারি) কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল “সি পার্ল-২”-তে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে পুলিশ। বিষয়টি ঢাকা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

আটকদের ১৯ জন বিদেশি পাসপোর্টধারী, বাকিরা ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে বরসহ ১২ জনের রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্ট এবং সাতজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী।

স্থানীয়রা বলছেন, দুই রোহিঙ্গা তরুণীর সঙ্গে রোহিঙ্গা বংশোদ্ভূত আব্দুল হামিদ (৩২) ও মোহাম্মদ ইলিয়াস (২৪) নামে দুই অস্ট্রেলিয়ানের বিয়ে উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বরদের আত্মীয়-স্বজনরা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। দুই কনে খতিজা বেগম (১৬) ও হাসিনা আক্তারের (১৭) বসবাস উখিয়া উপজেলার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।

পুলিশ জানিয়েছে, বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে ১২ জন রোহিঙ্গা বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান এবং সাতজন যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, “একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে রবিবার বিকেলে হোটেল ‘সি পার্ল-২’তে বেশকিছু রোহিঙ্গা জড়ো হয়েছে বলে খবর পায় পুলিশ। ঘটনাস্থলে গিয়ে অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা ও বিদেশি নাগরিককে আটক করে পুলিশ। এ সময় ১৯ বিদেশি নাগরিকের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।”

তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে অনুষ্ঠানের আনুষঙ্গিক সামগ্রী, রান্না করা খাবার ইত্যাদি পাওয়া যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হোটেল ম্যানেজার ও কর্মচারীরা পালিয়ে যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বিদেশি নাগরিকদের পাসপোর্ট জব্দ এবং আটক রোহিঙ্গাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ক্যাম্পের বাসিন্দাদের ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

হোটেলটির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জয়নাল আবেদীন বলেন, “১৯ জন বিদেশি নাগরিক গত এক মাস ধরে হোটেল অবস্থান করে আসছিলেন। রবিবার সকাল থেকে রোহিঙ্গাদের অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল। অনুষ্ঠানটি মেজবান নাকি বিয়ে তা আমার জানা নেই। তবে এ উপলক্ষে রোহিঙ্গারা একটি বড় গরু ও মহিষ জবাই করেছিল। বিভিন্নজনের কাছে শুনেছি, দুই রোহিঙ্গা তরুণীর সঙ্গে রোহিঙ্গা বংশোদ্ভূত দুই বিদেশির বিয়ে উপলক্ষে এ খাবারের আয়োজন করা হয়।”

হোটেলের এই নিরাপত্তাকর্মী আরও বলেন, “ঘটনার পরপরই হোটেল ম্যানেজার ও কর্মচারীরা পালিয়ে গেছেন। মূল ঘটনা তারাই ভালো বলতে পারবেন।”

একই ধরনের তথ্য দিয়েছেন হোটেলটির পার্শ্ববর্তী দোকানি ফরিদুল ইসলাম।

উখিয়া উপজেলার ১৯ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা হামিদা বেগমসহ কয়েকজনের ভাষ্য, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী রোহিঙ্গা আব্দুল হামিদ তার বাবার বার্ষিক কুলখানি উপলক্ষে এই মেজবানের আয়োজন করেছিলেন। নিমন্ত্রণ পেয়ে তারা হোটেলে এসেছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, হোটেলটির ম্যানেজার কিংবা কর্মচারীরা অনুমতি ছাড়া অনুষ্ঠান আয়োজন এবং বিদেশি নাগরিকদের অবস্থানের ব্যাপারে পুলিশকে জানায়নি। তারা পলাতক। হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।

রোহিঙ্গা,কক্সবাজার,বিয়ে,পুলিশ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close