• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নওগাঁয় মজুদ বিরোধী অভিযানে ১৬ মিল মালিককে জরিমানা

প্রকাশ:  ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ২১:৩৫
আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি

উত্তরের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁয় ভরা আমন মৌসুমেও হঠাৎ করে বেড়েছে চালের দাম। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পরে দিন আনি দিন খাই শ্রেণির খেটে খাওয়া নিম্ম আয়ের মানুষরা। অপরদিকে নড়েচড়ে বসে সরকার। পরবর্তিতে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জেলার ১১টি উপজেলায় অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসন।

অবৈধভাবে ধান-চাল মজুদ করার অপরাধে জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতিসহ ১৬জন মিল মালিককে ৫লাখ ৭০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সাথে ৩টি গোডাউন সিলগালা করা হয়েছে। শনিবার (২০ জানুয়ারি) জেলা সদর, মহাদেবপুর, মান্দা ও পতœীতলায় উপজেলায় পৃথক এলাকায় দিনব্যাপী মজুদ বিরোধী অভিযান চালিয়ে এই দন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলে এসব তথ্য জানানো হয়।

মিডিয়া সেলে বলা হয়, ধান-চালের অবৈধ মজুদ খুঁজতে গত শনিবার দুপুর থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত জেলার সদর, মহাদেবপুর, মান্দা ও পতœীতলায় উপজেলায় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মজুদবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। অভিযানে নির্ধারিত সীমার চেয়ে অতিরিক্ত ধান-চাল মজুদ রাখায় শহরের আনন্দনগর মহল্লার আর এম রাইস মিলের মালিক রফিকুল ইসলাম রফিককে ১লাখ টাকা জরিমানা ও ৩টি গোডাউন সিলগালা করা হয়। তছিরন অটোমেটিক রাইস মিলের মালিককে ১লাখ টাকা, মেসার্স এম এম অটো রাইস মিল মালিককে ৫০হাজার টাকা, মফিজ উদ্দিন অটোমেটিক রাইচ মিলের মালিককে ৫০ হাজার টাকা, মেসার্স জায়েদা ট্রেডার্স মালিককে ১লাখ টাকা, মেসার্স সুফিয়া অটোমেটিক নাইস মিল মালিককে ৫০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

মহাদেবপুর উপজেলার নাহার আরমান অটোমেটিক রাইস মিল মালিককে ৩০হাজার টাকা, শাপলা অটোমেটিক রাইস মিল মালিককে ২০হাজার টাকা, দাদা অটোমেটিক রাইস মিল মালিককে ১০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও জাহিদ অটোমেটিক রাইস মিল মালিকে ও মক্কা মদিনা অটোমেটিক রাইস মিল মালিকে জরিমানা করা হয়। মান্দা উপজেলার সাবাই হাট এলাকায় অবৈধ ধান মজুদের দায়ে এবং লাইসেন্স না থাকার জন্য ফয়জুল ইসলাম নামে একজন ব্যবসায়ীকে ২০হাজার টাকা ও সুমন কুমার নামে আরও এক ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পতœীতলা উপজেলায় লাইসেন্স ছাড়া ধান মজুদের দায়ে আরও ৩ধান ব্যাবসায়ীকে ৩৫হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গত কয়েকদিনের অভিযানে চারদিনের ব্যবধানে অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে নওগাঁর বাজারে প্রতি মণ ধানের দাম কমেছে ৬০থেকে ২০০টাকা। আর পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজিতে ২থেকে ৩টাকা করে কমতে শুরু করেছে। তবে খুচরা বাজারে এখনও আগের দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। গুদামে অবৈধ মজুদ বিরোধী অভিযানের ভয়ে চালকল মালিক ও ধান আড়তদাররা স্থানীয় বাজার থেকে ধান কেনা কমিয়ে দেওয়ায় ধানের কমতে শুরু করেছে। অপরদিকে হঠাৎ করে ধানের দাম প্রতি মণে ৬০থেকে ৭০টাকা কমে যাওয়ায় হতাশ কৃষকেরা।

নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক ও খুচরা চাল ব্যবসায়ী উত্তম সরকার বলেন অভিযানের পরই মজুদদাররা পাইকারী বাজারে বস্তাপ্রতি চালের দাম কিছুটা কমিয়েছে। তবে এই প্রভাব খুচরা বাজারে পড়তে আরো দুই-একদিন সময় লাগবে। কারণ আমরা বর্তমানে আগের বেশি দামে কেনা চালগুলো বাজারে বিক্রি করা শেষ করতে পারিনি। তাই কম দামে কেনা চালগুলো এখনোও বাজারে আসতে শুরু করেনি। তবে আর কয়েকদিনের মধ্যে চালের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে আমি মনে করি।

জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা জানান, অবৈধভাবে মজুতকৃত এসব ধান-চাল সঠিকভাবে খোলাবাজারে বিক্রি নিশ্চিত করতে সহকারী কমিশনার (ভূমি), কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এবং একজন উপ পরিদর্শকের (এসআই) সমন্বয়ে টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তারা বিষয়টি তদারকি করবে। ধান-চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে মজুতবিরোধী এই অভিযান চলমান থাকবে।

অপরাধ,অভিযান,মাদক

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close