• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

গৌরীপুরে উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫হাজার ৫১ছাত্রছাত্রীর ভর্তি অনিশ্চিত! :

প্রকাশ:  ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:২৬ | আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:২৭
হলি সিয়াম শ্রাবণ, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনিতে উর্ত্তীণ হয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুক ৫হাজার ৫১জন ছাত্রছাত্রীর ভর্তি অনিশ্চিত! উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা ছুটছেন এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে। অপেক্ষাকালীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিপাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান! ক্লাস শুরুর ২১দিন অতিবাহিত হলেও এ সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোনো দিক-নির্দেশনা নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার দীর্ঘতালিকা থাকলেও গ্রামাঞ্চলে রয়েছে আসন ফাঁকা। মাদরাসাগুলোতে শিক্ষার্থী সংকটে পূরণ হচ্ছে না শাখাগুলো!

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম জানান, শিক্ষার্থীদের এ সমস্যার বিষয়ে আমরা অবহিত আছি। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবেদন একত্রিকরণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ২০২৩শিক্ষাবর্ষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২হাজার ৭৯৮জন ছাত্র ও ৩হাজার ৯২জন ছাত্রী অধ্যয়ন করে। এ বছর কিন্ডারগার্টেন ও এবতেদায়ী মাদরাসা থেকে ১হাজার ৬২৯জন ছাত্র ও ১হাজার ৬৫৭জন ছাত্রী অধ্যয়ন করে। ২০২৪সনে উচ্চ বিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্র ৪হাজার ৪২৭জন ও ছাত্রী ৪জন ৭৪৯জন মোট ৯হাজার ১৭৬জন ছাত্রছাত্রী ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, স্কুল-মাদরাসার ৫৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৫টি শাখায় ৫৫জন করে ৪হাজার ১২৫জন শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এ বছর বিদ্যালয়গুলো থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে বইয়ের চাহিদা ছিলো ৫হাজার ৯শ জনের। যা ২০২৩সনে ছিলো ৬হাজার ২শ জনের। একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান এ প্রতিনিধিকে জানান, প্রতিবছর ১০শতাংশ থেকে ১৫শতাংশ শিক্ষার্থী বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। সে অনুযায়ী প্রত্যেক বছর বইয়ের চাহিদা দেয়া হতো।

যেহেতু প্রতি শাখায় ৫৫জনের বেশি ভর্তির সুযোগ নেই। সে জন্য বইয়ের চাহিদা কম দিতে হয়েছে। এদিকে গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এনামূল হক সরকার জানান, এ বিদ্যালয়ে ২০২৪সনে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করে ৩৪৯জন ছাত্রী। লটারির মাধ্যমে ৩টি শাখায় ১৬৫জনকে ভর্তি করেছেন। আসনের অনুমতি পেলে ভর্তির জন্য অপেক্ষায় রেখেছেন আরও ১৬৫জনকে। এ বিদ্যালয়ে ২০২৩সনে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল ২৭৩জন। ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নরোত্তম রায় জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করেছিলো ১৯৬জন। তাদের মধ্যে ১৬৫জনকে লটারীর মাধ্যমে ভর্তি করা হয়েছে। গতবছর ভর্তি হয়েছিলো ২২৮জন। এ বছরের অপেক্ষাকালীন তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন করেছি। নুরুল আমিন খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুল হক জানান, এ বছর ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলো ৪৫৫জন। ৩টি শাখায় ৫৫জন করে ভর্তি হয়েছে। ভর্তির জন্য অপেক্ষা তালিকায় আরও ১৬৫জনকে রাখা হয়েছে। ক্লাস শুরু হলেও তাদের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসে নাই। ধুরুয়া নাজিম উদ্দিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সোহরাব উদ্দিন জানান, একটি শাখায় ৫৫জন ভর্তি হয়েছে আরও ১০৩জন অপেক্ষার তালিকায়।

অপরদিকে মাদরাসারগুলোর মধ্যে ইসলামাবাদ ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. রুকুন উদ্দিন জানান, ৫৫জন ভর্তি হয়েছে, ভর্তিচ্ছুক তালিকা রয়েছে ৩৫জন। শাখা খোলার জন্য তিনি আবেদন করেছেন। পাছার সামাদিয়া দাখিলা মাদ্রাসার সুপার মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ৫৫জনের আসনের মধ্যে ২০জন ভর্তি হয়েছে। ৩৫জনের আসন এখনও শূন্য। হাসনপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, ৫৫জনের মধ্যে ৪০জন ভর্তি হয়েছে। ১০জনের আসন শূন্য আছে। নামাপাড়া কেরামতিয়া দাখিলা মাদ্রাসার সুপার ছৈয়দ শহিদউল্লাহ জানান, ৫৫জনের মধ্যে ৩৫জন ভর্তি হয়েছে। ২০জনের আসন শূন্য। শিবপুর এলইউ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মফিজ উদ্দিন জানান, মাদরাসার শাখা এখনো সুস্পষ্ট হয়। যতজন আছে, সবাইকে বই দিয়ে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। অনুরূপ অবস্থায় চলছে আরও ৬টি মাদরাসা। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ জানান, শিক্ষার্থী আসছে, বই দিয়েছি, ক্লাস নিচ্ছি। পরবর্তীতে সমস্যা হলে সমাধানের পথ খোঁজবো। তবে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

এদিকে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে লটারীর মাধ্যমে গ্রামের শিক্ষার্থীরাও শহরের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। গৌরীপুর পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সূরযবালা, জাগরণী, শেখ লেবু স্মৃতিসহ সুনামধন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মেধাবী তালিকার ১ থেকে ২০জনের ক্রমিকে থাকা অর্ধেক শিক্ষার্থী কোথাও ভর্তি হতে পারে নাই। ইসলামাবাদ এলাকাবার মো. মাসুদ মিয়া জানান, তার পুত্র সন্তান পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শহরের সবগুলো স্কুলে আবেদন করেও ভাগ্যের লটারীতে সুযোগ পাওয়া যায়নি। কালিপুর দৈনিক বাজার এলাকার আরেফিন রহমান জানান, আমার সন্তান ক্লাসে ফাস্ট হয়ে লাভ কি! মেধা যাছাই লটারীতে মেনে নেয়া যায় না।

শিক্ষা কার্যক্রম,ভর্তি,ময়মনসিংহ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close