• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় উপচে পড়া ভিড়, ৩ ঘণ্টায় ৫০ হাজার টিকিট বিক্রি

প্রকাশ:  ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:০৯
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচল নিউ টাউনে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে চলছে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। আজ শুক্রবার ছুটির দিনে মেলায় ভিড় করেছেন লাখো ক্রেতা-দর্শনার্থী। টিকিট ইজারাদারের দেওয়া তথ্যমতে, বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় প্রায় ৫০ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। তবে বিক্রেতাদের দাবি, মাসের শেষ শুক্রবারে লোকসমাগম বাড়লেও বেচাবিক্রি ছিল কম।

আজ সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত মেলার প্রধান ফটকের পাশে টিকিট কাউন্টারগুলো প্রায় ফাঁকা ছিল। ২টার পর থেকে কাউন্টারগুলোতে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। শেষ বিকেলে ও সন্ধ্যায় মেলায় ঢুকতে আগত ব্যক্তিদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। উপচে পড়া ভিড় ঠেলে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন দর্শনার্থীরা।

মেলার টিকিট ইজারাদার আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, শুক্রবার মেলায় লক্ষাধিক লোকসমাগম হয়েছে। বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় প্রায় ৫০ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে।

সরেজমিনে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত মেলার প্রতিটি দোকানেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। বিদেশি পণ্যের দোকানগুলোর পাশাপাশি অ্যালুমিনিয়াম, ক্রোকারিজ, হোমটেক্স ও শিশুদের খেলনার দোকানগুলোতে আলাদা করে ভিড় লক্ষ করা যায়। অন্যান্য দিনের মতো মেলায় আগতদের মধ্যে নারী ও শিশুদের অংশগ্রহণ ছিল বেশি। মেলায় আগত লোকজন ঘোরাফেরার পাশাপাশি ছবি তুলে সময় কাটিয়েছেন। গ্রাহক টানতে দোকানগুলোতে ছিল বাহারি সাজসজ্জা ও ছাড়। মেলা শুরুর ষষ্ঠ দিনেও কোনো কোনো দোকানে নির্মাণকাজ করতে দেখা যায়।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত বছরের তুলনায় এবার মেলার শুরু থেকেই অপেক্ষাকৃত বেশি লোকসমাগম হচ্ছে। মাসের শেষ হওয়ায় বেচাকেনা কম হলেও আগামী সপ্তাহ থেকে বিক্রির বাড়বে বলে তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মুন্সিগঞ্জের গৃহিণী সায়মা সুরাইয়া স্বামী-সন্তানসহ পরিবারের ১১ সদস্য নিয়ে মেলায় এসেছেন। সুরাইয়া বলেন, মেলার প্রবেশপথে যানজট ছাড়া বাকি অভিজ্ঞতা ভালো ছিল। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন স্টল ঘুরে দুই সন্তানের জন্য কেনাকাটা করেছেন। পছন্দের সঙ্গে দামে মিললে ক্রোকারিজ পণ্য কেনারও আগ্রহ আছে। তবে সুরাইয়ার স্বামী ব্যবসায়ী ইফাদ আলম বলেন, মেলার সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও মেলা প্রাঙ্গণ ও শৌচাগারে পরিচ্ছন্নতার ঘাটতি আছে।

আসবাব বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন জামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, শুক্রবার প্রত্যাশার চেয়েও লোকসমাগম বেশি হয়েছে। অধিকাংশই দোকানে এসে বিভিন্ন ফার্নিচার দেখে দাম জানতে চেয়েছেন। বিক্রি হয়েছে সামান্য। বাণিজ্য মেলায় নিজের আট বছরের অভিজ্ঞতা থেকে জামাল বললেন, সাধারণত মেলার শুরুতে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীই বেশি থাকে। মেলার সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও বাড়তে থাকে।

এদিকে শুক্রবার মেলায় লোকসমাগম বেশি হলেও কাঞ্চন সেতু থেকে পূর্বাচল শেখ হাসিনা সরণি যানজটমুক্ত ছিল। তবে কাঞ্চন সেতুর পূর্ব পাশ থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে (ঢাকা বাইপাস সড়ক) ছিল তীব্র যানজট। সেতু এলাকা থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়ক পার হতেই অনেককে এক ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ ছাড়া রূপগঞ্জের ভুলতা থেকে মেলায় আসা লোকজনকেও যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আজ সড়ক নির্মাণকাজের ধুলাও অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি ছিল। মেলায় স্টল বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীরা জানান, মেলা এলাকায় সামান্য পানি ছিটানো হলেও ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না।

ঢাকার শেরেবাংলা নগরের চিরচেনা প্রাঙ্গণ ছেড়ে তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর বসেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে মেলার আয়োজন করেছে।

মেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকার বলেন, মেলা এলাকায় ধুলাবালির সমস্যা সমাধানে প্রতিনিয়ত পানি দেওয়া হচ্ছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নিয়মিত কাজ করছেন। তবে মেলায় আসা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের অসচেতনতায় মেলা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ,বাণিজ্য মেলা,রূপগঞ্জ,মেলা,ঢাকা বিভাগ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close