• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জাবি ছাত্রলীগ নেতাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ:  ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:৪৪ | আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:০০
জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে হুমকি, মারধর, দোকান ভাংচুর ও হলে তুলে এনে মুক্তিপণ আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে এসব নেতাদের বিরুদ্ধে।

অভিযু্ক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহিদুজ্জামান শাকিল, সাজ্জাদ শোয়েব চৌধুরী, ফয়সাল খান রকি, রাশেদ খান শিমুল, প্রসেনজিৎ কুমার, তৌকির আহম্মেদ রোমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেলিন মাহবুব, আরাফাত ইসলাম বিজয়, সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকার ও অর্থ সম্পাদক মো. তৌহিদুল আলম তাকিদ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া বাজার, ইসলামনগর বাজার, জেনারেটর বাজার, আমবাগান, বিশমাইল ও সিএন্ডবি বাস স্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করেন শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকাদারদের কাছ থেকেও বিভিন্ন সময়ে চাঁদা আদায় করেন এসব নেতারা।

ছাত্রলীগ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ষষ্ঠ সমাবর্তনে আলোকসজ্জার কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্টান ‘হাফিজ লাইটিং এন্ড সাউন্ড’ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসু ভবন সংলগ্ন এলাকার গাছের টেন্ডার প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহিদুজ্জামান শাকিল, সাজ্জাদ শোয়েব চৌধুরী, ফয়সাল খান রকি, প্রসেনজিৎ কুমার, রাশেদ খান শিমুল, তৌকির আহম্মেদ রোমান ও অর্থ সম্পাদক মো. তৌহিদুল ইসলাম তাকিদ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিশমাইল এলাকার বাস কাউন্টার থেকেও নিয়মিত চাঁদা আদায় করেন এ নেতারা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ‘এভারগ্রীণ প্রাইভেট নার্সারী’ থেকে প্রতিমাসে ছয় হাজার টাকা করে চাঁদা নেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শোয়েব সাজ্জাদ চৌধুরী ও অর্থ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তাকিদ।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটক সংলগ্ন ভ্রাম্যমাণ কাপড়ের বাজার, বিজনেস ফ্যাকাল্টি সংলগ্ন ভাসমান দোকান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্বার্শবর্তী ইসলামনগর বাজার কমিটি ও একই এলাকার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করেন জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকার। এছাড়াও আল-বেরুনী হল সংলগ্ন এলাকায় দোকান বরাদ্দ দেওয়ার নাম করে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্বার্শবর্তী সিএন্ডবি বাসস্ট্যান্ডের দোকান ও সাভার-আশুলিয়া রুটে চলাচলকারী লেগুনা থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেলিন মাহবুব। এর আগেও সিএন্ডবি এলাকায় এক মুক্তিযোদ্ধার নার্সারী থেকে চাঁদা আদায় করতে গিয়ে সংবাদের শিরোনামে আসেন এই নেতা। এছাড়াও ক্যাম্পাসের মাদকের চক্র ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ছিনতাই চক্র নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে এই নেতার বিরুদ্ধে।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনারেটর বাজার, ইসলামনগর বাজারের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও শহীদ সালাম বরকত হল সংলগ্ন দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরাফাত ইসলাম বিজয়। তার বিরুদ্ধে শহীদ সালাম বরকত হলের নতুন দোকান বরাদ্দের নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাজার কমিটির নেতা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে প্রতিমাসেই টাকা পাঠাতে হয়। কোনো মাসে টাকা দিতে দেরী হলে তারা বিভিন্নভাবে দোকানদারদের সঙ্গে ঝামেলা করে।’ চাঁদা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্তব্য করতে রাজি হননি হাফিজ লাইটিং এন্ড সাউন্ডের কর্ণধার মো. হাফিজুল ইসলাম। তবে তিনি বলেন, ‘সব মানুষ তো আর সমান হয় না। ব্যবসা করতে গেলে সবাইকে ম্যানেজ করেই চলতে হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করেন শাখা ছাত্রলীগের এসব নেতারা। তবে সহ-সভাপতি শোয়াইব সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, আমি বাড়িতে একটা দাওয়াতে আছি। এই মুহুর্তে এসব অভিযোগ নিয়ে কথা বলাটা আমার জন্য বিব্রতকর।

অভিযুক্ত লেলিন মাহবুব, অভিযোগ ভিত্তিহীন৷ আমি কখনো নার্সারীতে যাই নাই। লেগুনা আটকেছিলো জুনিয়ররা। পরে আমি সেখানে যাই। চাঁদাবাজির সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই।

এ বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আক্তারুজ্জামান সোহেলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ছাত্রলীগ,জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি),চাঁদাবাজি

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close