• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা

প্রকাশ:  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:১০
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার ও সহ–উপাচার্য বেনু কুমার দের পদত্যাগের দাবিতে এবার কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। আগামীকাল সোম ও পরদিন মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত এবং বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে সব পরীক্ষা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় শিক্ষক সমিতি। বিকেল চারটায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক।

অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির উত্থাপিত অনিয়মের অভিযোগের ধারাবাহিকতায় উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি অমূলক নয়। পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। উপাচার্য ১৯৭৩–এর অধ্যাদেশ মেনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে সিন্ডিকেট নির্বাচন ও সিনেট নির্বাচন করছেন না।

লিখিত বক্তব্যে আবদুল হক আরও বলেন, উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষক সমিতির সচেতন অনেক শিক্ষক আইনের শাসন নিশ্চিত করা, নিয়োগ কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। তবে প্রশাসন উল্টো এসব বিষয়ে সোচ্চার হওয়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগে তদন্ত কমিটি, বিধিবদ্ধ সভায় অসৌজন্যমূলক আচরণ, পদোন্নতি বোর্ডের সভা না দিয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনসহ নানান অন্যায় ও পক্ষপাতদুষ্টু সিদ্ধান্ত নিয়ে আসছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে শিক্ষক সমাজ উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যের পদত্যাগের এক দাবিতে আন্দোলন করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, অধ্যাদেশ লঙ্ঘনের ফলে শিক্ষকেরা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নিজের পছন্দমতো লোকদের নিয়ে উপাচার্য সিন্ডিকেট পরিচালনা করেছেন। নিয়মনীতিরও তোয়াক্কা করছেন না। সহ–উপাচার্য এসবের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনা ও ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার জন্য এ দুজনের পদত্যাগের কোনো বিকল্প নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি আলা উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য লায়লা খালেদা, মোহাম্মদ শেখ সাদী। সংহতি জানিয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন অনুষদের সাবেক ডিন এ বি এম আবু নোমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী প্রমুখ।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর উপাচার্যের বিরুদ্ধে অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে বাংলা ও আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ এনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিল শিক্ষক সমিতি। সমিতির এ অবস্থানের মধ্যেই আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেন উপাচার্য শিরীণ আখতার। এর প্রতিবাদে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে পদত্যাগের এক দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষক সমিতি।

ইতিমধ্যে প্রতীকী অনশন, অবস্থান কর্মসূচি, গণসংযোগ ও উপাচার্যের বিরুদ্ধে হওয়া অনিয়মের সংবাদ প্রদর্শন করেছে শিক্ষক সমিতি। যদিও উপাচার্য শিরীণ আখতার গত বছরের ২১ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। আইন মেনেই তিনি নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

তবে গত ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে জানিয়ে বাংলা ও আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া স্থগিত করার অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

দুর্নীতি,অনিয়ম,উপাচার্য,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,চট্টগ্রাম

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close